আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
291 views
in সালাত(Prayer) by (100 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
১. ফরজ নামাজে ৩য়/৪র্থ রাকাআতে সুরা ফাতিহার পর ভুলে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলে ফেললে কি নামাজ ফাসিদ হবে?!  যদি বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলার পর ই খেয়াল আসে যে ভুল হয়েছে আর সাথে সাথে রুকুতে চলে যাই তাতে নামাজ হবে নাকি সাহু সিজদাহ্র প্রয়োজন হয়?
২. নামাজের হিজাব গলার কাছে কিছুটা ঢিলা থাকায় সেফটিপিন দিয়ে আটকিয়ে নেই থুতনি পর্যন্ত! কিন্তু হঠাৎ নামাজ পরাবস্থায় উক্ত জায়গাটি লুজ হয়ে যায় আর তাতে হিজাবের যে অংশে সেফটিপিন দেয়া ছিলো সেখানের কাপড় অল্প ফাঁক হয়ে যায়, যার কারণে সেই ফাঁক থেকে গলা দেখা যাচ্ছিলো অল্প! এতে কি নামাজে সমস্যা হবে?
৩. সিজদাহ্ এ কপাল  ঢেকে রাখতে হয় না জানি! চুল ভালো করে ঢেকে নেয়ার পর নামাযে থাকাবস্থায় যদি কপালের উপরের আর আশেপাশের চুল কিছুটা বের হয় তাতে নামাজ ভেঙে যাবে?  এটা খুব কষ্টকর একসাথে কপাল খোলা রাখা আর চুল সব ঢেকে রাখা!  এক লেকচারে শুনেছি নামাজে যদি চুল ২/১ টাও বের হয় তাহলে নামাজ ভেঙে যাবে!
৪.রুকু থেকে উঠার সময় সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ বলার সময় যদি মাখরাজ ভুল হয়ে যায় বা ভুল হলো মনে হয় তখন আবার বলা যাবে?  ততক্ষণে দাঁড়িয়ে যাওয়া হয় আর সেটা রুকু থেকে উঠার সময় বলতে হয়।  করনিয় কি? নামাজে সমস্যা হয়? ( যেমন লিমান হামিদাহ এ ভুল হলো তখন আবার দম ছেড়ে লিমান হামিদাহ বললেই হবে নাকি সামি আল্লাহু থেকে বলতে হবে?  আর সামি আল্লাহু থেকে ভুল হলে তো শুরু থেকেই করতে হয় তাই না?)

৫. রুকুতে বা সিজদাহ্ এ তাসবীহ বলার সময়ও যদি কখনো মনে হয় যে মাখরাজ ভুল হলো তখন সেটা আবার বলা যায় রুকু বা সিজদাহ্ এ থাকাবস্থায় ই? কারণ তিনবার তাসবীহ পরি কিন্তু ভুল হলে সেটা আবার পরা হয় এতে চার বার/,জোড় সংখ্যা হয়ে যায় কিনা!

৬.তাসবীহ অধিক পরতে চাইলে কি রুকু আর সিজদাহ্ তে সমান সংখ্যক পরতে হয়? অনেক সময় রুকু সিজদাহ্ এ সমান সংখ্যক পরা হয় না কারণ খেয়াল থাকে না কতো বার পরা হয়েছে!  তাছাড়া এরকম করা যাবে যে রুকুতে অধিক তাসবীহ পরলাম কিন্তু সিজদাহ্ এ কম সংখ্যক পরলাম বা সিজদাহ্ এ বেশি, রুকুতে কম?

৭.নামাজের শুরুতে তাকবীর বলার সময় নাকি আগে হাত কাধ বরাবর মানে উপরে তুলতে হয় তারপর আল্লাহু আকবার বলতে হয়! এটা সঠিক? নামাজ ছেলেদের/মেয়েদের নিয়মে হোক বা মেয়েরা ছেলেদের নিয়মে নামাজ  পরতে চাইলে কি এভাবেই করবে?
এতদিন জানতাম আল্লাহু আকবার বলা আর হাত তোলা একসাথে হয়! এভাবে একসাথে নামাজ পরায় কি ভুল হয়েছে? উপরোক্ত বিষয় টি জানার পর ইদানীং  আগে হাত তুলি তারপর আল্লাহু আকবার বলি, এভাবে ঠিক আছে?
৮.দুই সিজদাহ্ এর মাঝে শুধু রব্বিগফিরলি বলা যায়?  এতোদিন শুধু আল্লাহুম্মাগফিরলি বলতাম দুই সিজদাহ্র মাঝে, এটা কি ঠিক ছিলো নাকি নামাজ হয় নি?

৯.মেয়েরা ছেলেদের নিয়মে নামাজ পরলে,  সিজদাহ্ এ পায়ের আঙুল কিবলামুখি করার জন্য সিজদাহ্ অবস্থায় পা অবস্থান থেকে কিছুটা সামনে/পিছনে  নাড়াতে পারবে? সিজদাহ্ এ দুই পা একসাথে মিলিয়ে রাখা সুন্নাহ, এটা সঠিক?

১০. সিজদাহ্ এ কপাল মাটিতে জায়নামাযে রাখার পর যদি সমান্তরাল মনে না হওয়ায়/কোনো কারণে সিজদাহ্ অবস্থায় সাথে সাথে কপাল সামান্য তুলে আবার জায়নামাযে রাখা হয় এতে নামাজ ভেঙে যায়?  মাঝে মাঝে এমন হলে করনীয় কি?

১১.ওজুবস্থায় সালোয়ার/ড্রেস চেঞ্জ করলে অজু ভেঙে যায়?  আর ওজু থাকাবস্থায় টিস্যু বা অন্য কিছু দ্বারা যদি চেক করা হয় যে সাদাস্রাব হলো কিনা তাতে ওজু ভাঙে?!

জাযাকিল্লাহ খাইর!

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)ফরজ সালাতের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলিয়ে পড়ে ফেললে অথবা অল্প একটু পরে ফেলার পর মনে পড়লে,আপনি চাইলে উক্ত আয়াত শেষ করে বা ছোট সূরা হলে সেটাকে সম্পূর্ণ তিলাওয়াত করে রু'কু করতে পারেন।যেহেতু ফরয নামাযের শেষ দুই রা'কাতে কুরআন তিলাওয়াত সুন্নত।তাই সম্পূর্ণটা পড়ে নেয়াই ভালো হবে।এ জন্য সাহু সিজদা আসবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/855

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
ফরজ নামাজে ৩য়/৪র্থ রাকাআতে সুরা ফাতিহার পর বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলে ফেললে কি নামাজ ফাসিদ হবে না।চায় ভুলে হোক বা ইচ্ছায় হোক।নামায কখনই ফাসিদ হবে না।

(২)ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তাহলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় নামাজ নষ্ট হবে না।যদি একাধিক জায়গায় সামান্য করে খোলা থাকে,
তাহলে এর সমষ্টি ছোট একটি অঙ্গের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ হলেও নামাজ হবে না- (রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৯,তাবয়ীনুল হাক্বায়েক্ব ১/৯৭)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/5215

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণমতে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা গলা একটি অঙ্গ,এর চতুর্থাংশ অনিচ্ছায় তিন তাসবীহ পরিমাণ বের হলেই কেবল নামায ফাসিদ হবে।

(৩) দুয়েকটি চুল অনিচ্ছায় বের হলে সামায ফাসিদ হবে না।হ্যা ইচ্ছাকৃত এক চতুর্থাংশ বের হলেই কেবল নামায ফাসিদ হবে।

(৪)লিমান হামিদাহ এ ভুল হলো তখন আবার দম ছেড়ে শুদ্ধ করে লিমান হামিদাহ বললেই হবে। সামি আল্লাহু থেকে বলতে হবে না। আর সামি আল্লাহু থেকে ভুল হয়, তাহলে তো শুরু থেকেই আবার বলতে হবে।

(৫)রুকুতে বা সিজদাহ্ এ তাসবীহ বলার সময়ও যদি কখনো মনে হয় যে মাখরাজ ভুল হয়েছে,তখন রুকু বা সিজদাহ্ এ থাকাবস্থায় ই সেটা আবার বলা যাবে। এতে চার বার বা জোড় সংখ্যা হবে না।

(৬)রু'কু সিজদার তাসবিহাত বেজোড় সংখ্যায় পড়তে হয়।সেই সংখ্যা তিন বা পাঁচ কিংবা সাত ও নয় হতে পারে। এবং এক্ষেত্রে রু'কু সিজদাতে সমান সমান হওয়া জরুরী নয়।তবে হ্যা, উত্তম এটাই যে,রু'কু ও সিজদাতে সমান সমান হবে।

(৭)আগে হাত তুলাই সঠিক পদ্ধতি।তবে তাকবীরের সাথে সাথে হাত তুললে,সেই নামায ফাসিদ হবে না।

(৮)রব্বিগফিরলি এবং আল্লাহুম্মাগফিরলি উভয়টার অর্থ একই(হে রর/হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো।। সুতরাং একটার স্থলে অন্যটা পড়লে নামায ফাসিদ হবে না। এবং যেকোনো একটা পড়া যায়।

(৯)মেয়েরা মেয়েদের মতই মাঠির সাথে মিশে নামায পড়বে।এটাই বিশুদ্ধ ত্বরিকা।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/498

(১০)সিজদাহ্ এ কপাল মাটিতে জায়নামাযে রাখার পর যদি সমান্তরাল মনে না হওয়ায়/কোনো কারণে সিজদাহ্ অবস্থায় সাথে সাথে কপাল সামান্য তুলে আবার জায়নামাযে রাখা হয় এতে নামাজ ভেঙে যাবে না। মাঝে মাঝে এমন হলে প্রথম থেকেই সমান্তরাল জায়গা বাছাই করে তারপর নামাযে দাড়াতে হবে।

(১১)ওজুবস্থায় সালোয়ার/ড্রেস চেঞ্জ করলে অজু ভেঙে যাবে না। তাছাড়া ওজু থাকাবস্থায় টিস্যু বা অন্য কিছু দ্বারা যদি চেক করা হয় যে সাদাস্রাব হলো কিনা? তাতেও ওজু ভঙ্গ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...