জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মহিলাদের জন্য সাঁতার কাটা শেখা সংক্রান্ত শরীয়তের পক্ষ থেকে আদেশ করা হয়নি।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، قَالَ: كَتَبَ عُمَرُ إِلَى أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ: أَنْ عَلِّمُوا غِلْمَانَكُمُ الْعَوْمَ، وَمُقَاتِلَتَكُمُ الرَّمْيَ. فَكَانُوا يَخْتَلِفُونَ إِلَى الْأَغْرَاضِ، فَجَاءَ سَهْم غَرْبٌ إِلَى غُلامٍ فَقَتَلَهُ، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ أَصْلٌ، وَكَانَ فِي حِجْرِ خَالٍ لَهُ، فَكَتَبَ فِيهِ أَبُو عُبَيْدَةَ إِلَى عُمَرَ [إِلَى مَنْ أَدْفَعُ عَقْلَهُ؟] ، فَكَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: "اللهُ وَرَسُولُهُ مَوْلَى مَنْ لَا مَوْلَى لَهُ، وَالْخَالُ وَارِثُ مَنْ لَا وَارِثَ لَهُ إسناده حسن
আবু উমামা বিন সাহল বলেন, উমার (রাঃ) আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহর নিকট লিখলেন, “তোমরা তোমাদের যুবকদেরকে সাঁতার ও সৈন্যদেরকে তীর নিক্ষেপ শিখাও। এরপর তারা বিভিন্ন লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হতো। সহসা একটা তীর তীব্র গতিতে এসে এক যুবকের গায়ে বিদ্ধ হলো এবং সে মারা গেল। এই যুবকের কোন বংশ পরিচয় পাওয়া গেল না। সে তার এক মামার কাছে লালিতপালিত ছিল। তার সম্পর্কে আবু উবাইদা উমারকে লিখলেন, এই যুবকের ক্ষতিপূরণ কাকে দেব? উমার (রাঃ) জবাবে তার কাছে লিখলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ যার কোন অভিভাবক নেই তার অভিভাবক আল্লাহ ও রাসূল। আর যার কোন উত্তরাধিকারী নেই, তার উত্তরাধিকারী মামা।
[মুসনাদ আহমদ ৩২২, অধ্যায় মুসনাদে ওমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ হাদীস নং-১৮৯]
★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাঁতার কাটা শিখতে হবেনা।
,
(০২)
★ইসলামী স্কলারগন বলেন,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতিটি মানুষকে একটি কমন সেন্স দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যে সেন্স তাকে এমনিতেই স্রষ্টা যে একজন আছেন এবং তিনিই তাকে সৃষ্টি করেছেন, বুঝতে সাহায্য করবে। পরে এই বুঝের ওপর নির্ভর করে সে সত্য ধর্ম সম্পর্কে অনুসন্ধান করবে। এবং এক পর্যায়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করবে।
সুরা আর রুমের ৩০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
فِطۡرَتَ اللّٰہِ الَّتِیۡ فَطَرَ النَّاسَ عَلَیۡہَا ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِخَلۡقِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ ٭ۙ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿٭ۙ۳۰﴾
আল্লাহর ফিতরাত (স্বাভাবিক রীতি বা দ্বীন ইসলাম), যার উপর (চলার যোগ্য করে) তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহ্র সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রতিটি শিশুই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহুদী বানায় বা নাসারা বানায় অথবা মাজুসী বানায়। যেমন কোন জন্তুকে তোমরা সম্পূর্ণ দোষমুক্ত জন্ম নিতে দেখ, সেখানে তোমরা তাকে নাক কাটা অবস্থায় পাও না। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। [বুখারী: ৪৭৭৫, মুসলিম: ২৬৫৮]
★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদেরকেও নিজ বুদ্ধি দিয়ে ভেবে ঈমান আনতে হবে।
নতুবা তারাও জাহান্নামে যাবে।
★এক্ষেত্রে কিছু ইসলামী স্কলারদের মত কিছুটা ভিন্ন।
তারা মতবিরোধ করেছেন।
তারা বলেন যে,
যারা ইসলাম গ্রহণ করেন নি, তাদের মধ্যে দু’ধরনের লোক রয়েছে।
এক : যারা মুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলামের কথা শুনেছেন, ইসলাম সম্পর্কে জানা তাদের জন্য সহজ ছিল, এরপরও তারা ইসলাম সম্পর্কে অনুসন্ধান করেননি। তাদের অবস্থা প্রথম প্রশ্নের উত্তরে প্রদত্ত লোকদের অবস্থার অনুরূপ হবে। অর্থাৎ, তাদের জন্য জাহান্নামই নির্ধারিত থাকবে।
দুই : যারা অমুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলাম সম্পর্কে জানার কোনো উপায় ছিল না। ইসলামের কথা কখনো শুনেনও নি। তাদের অবস্থা আহলুল ফাতরাত এর মতো হবে। অর্থাৎ, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করবেন। যেমন বলবেন, আগুনে ঝাপ দাও। যারা তাঁর অনুসরণ করবে, তারা আগুনে ঝাপ দিয়ে দেখবে সেটা শীতল বেহেশত। যারা অমান্য করবে, তারা সত্যিই জাহান্নামে যাবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً
রাসূল না পাঠিয়ে আমি কাউকে শাস্তি দেই না। (ইসরা : ১৫)
ইবনে কাসীর রহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এটা আল্লাহর ইনসাফের প্রকাশ। আল্লাহ কাউকে তার বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ ছাড়া শাস্তি দিবেন না। হয়ত রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে বা অন্য কোনো ভাবে দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে।
কাজেই তাদের পরিণাম কী হবে তা ক্বিয়ামতের দিনই নির্ধারিত হবে।
যারা প্রকৃতই ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানেনি, শুনেনি তাদের কাছে এবং পাগলদের কাছে কিয়ামতে আল্লাহর আনুগত্যের উপর এক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে যারা উত্তীর্ণ হবে, তারা জান্নাতবাসী এবং অবশিষ্ট দোযখবাসী হবে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/২৯-৩২)।