আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
419 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (63 points)
১। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে সন্তানদের সাঁতার, তীরন্দাজি, অশ্ব চালনা শিক্ষা দিতে। আমাদের দেশে শহরের ছেলে মেয়েদের সাঁতার শেখার সেরকম ব্যবস্থা করা হয় না। হ্যাঁ সুইমিংপুলে অবশ্য শেখা যায় কিন্তু আমি ইসলামকিউয়ে দেখেছি যে বালেগা মেয়েদের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটা উচিত নয় কারণ তাতে তার আওরাত প্রকাশ পায় এমনকি শুধু মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা হলেও। একজন মেয়েকে ছোটবেলায় যদি সাঁতার শেখানো না হয়ে থাকে, তাহলে সে কীভাবে বড় হয়ে সাঁতার শিখতে পারে যাতে রাসুলুল্লাহর নির্দেশ পালন করতে পারে এবং কীভাবে আওরাতের হেফাজত করে চলতে পারে এই ক্ষেত্রে?

২। উত্তর কোরিয়াতে স্বৈরশাসন চলছে। অন্য দেশের নাগরিকদের প্রবেশ সীমাবদ্ধ। শুধু রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার লোকজন বাদে বিদেশি কেউ যেতে পারে না। ওখানে নাকি কোন ধর্ম নেই, সবাই নাস্তিক। ইরানী দূতাবাস ছাড়া আর একটি জায়গাতেও মসজিদ নেই। ঐ দেশের লোকের কাছে ইসলাম পৌঁছানোর কোন ব্যবস্থা নেই, সম্ভবত তাবলীগ জামাত যেতে পারে না ঐ দেশে। সেখানের সরকারী লোক ছাড়া কেউ বিদেশে যেতেও পারে না। এমতাবস্থায় ঐ দেশের লোকজন মারা গেলে কি আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন যেহেতু তাদের কাছে ইসলাম পৌছার কোন সুযোগ ছিল না ? [উল্লেখ্য উত্তর কোরিয়ায় কোন ধর্মের প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ]

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মহিলাদের জন্য সাঁতার কাটা শেখা সংক্রান্ত শরীয়তের পক্ষ থেকে আদেশ করা হয়নি।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، قَالَ: كَتَبَ عُمَرُ إِلَى أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ: أَنْ عَلِّمُوا غِلْمَانَكُمُ الْعَوْمَ، وَمُقَاتِلَتَكُمُ الرَّمْيَ. فَكَانُوا يَخْتَلِفُونَ إِلَى الْأَغْرَاضِ، فَجَاءَ سَهْم غَرْبٌ إِلَى غُلامٍ فَقَتَلَهُ، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ أَصْلٌ، وَكَانَ فِي حِجْرِ خَالٍ لَهُ، فَكَتَبَ فِيهِ أَبُو عُبَيْدَةَ إِلَى عُمَرَ [إِلَى مَنْ أَدْفَعُ عَقْلَهُ؟] ، فَكَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: "اللهُ وَرَسُولُهُ مَوْلَى مَنْ لَا مَوْلَى لَهُ، وَالْخَالُ وَارِثُ مَنْ لَا وَارِثَ لَهُ إسناده حسن

আবু উমামা বিন সাহল বলেন, উমার (রাঃ) আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহর নিকট লিখলেন, “তোমরা তোমাদের যুবকদেরকে সাঁতার ও সৈন্যদেরকে তীর নিক্ষেপ শিখাও। এরপর তারা বিভিন্ন লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হতো। সহসা একটা তীর তীব্র গতিতে এসে এক যুবকের গায়ে বিদ্ধ হলো এবং সে মারা গেল। এই যুবকের কোন বংশ পরিচয় পাওয়া গেল না। সে তার এক মামার কাছে লালিতপালিত ছিল। তার সম্পর্কে আবু উবাইদা উমারকে লিখলেন, এই যুবকের ক্ষতিপূরণ কাকে দেব? উমার (রাঃ) জবাবে তার কাছে লিখলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ যার কোন অভিভাবক নেই তার অভিভাবক আল্লাহ ও রাসূল। আর যার কোন উত্তরাধিকারী নেই, তার উত্তরাধিকারী মামা।

[মুসনাদ আহমদ ৩২২, অধ্যায় মুসনাদে ওমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ হাদীস নং-১৮৯]

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাঁতার কাটা শিখতে হবেনা।
,
(০২)   
★ইসলামী স্কলারগন বলেন,
 আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতিটি মানুষকে একটি কমন সেন্স দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যে সেন্স তাকে এমনিতেই স্রষ্টা যে একজন আছেন এবং তিনিই তাকে সৃষ্টি করেছেন, বুঝতে সাহায্য করবে। পরে এই বুঝের ওপর নির্ভর করে সে সত্য ধর্ম সম্পর্কে অনুসন্ধান করবে। এবং এক পর্যায়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করবে।

সুরা আর রুমের ৩০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فِطۡرَتَ اللّٰہِ الَّتِیۡ فَطَرَ النَّاسَ عَلَیۡہَا ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِخَلۡقِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ ٭ۙ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿٭ۙ۳۰﴾ 
আল্লাহর ফিতরাত (স্বাভাবিক রীতি বা দ্বীন ইসলাম), যার উপর (চলার যোগ্য করে) তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহ্র সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।

হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রতিটি শিশুই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহুদী বানায় বা নাসারা বানায় অথবা মাজুসী বানায়। যেমন কোন জন্তুকে তোমরা সম্পূর্ণ দোষমুক্ত জন্ম নিতে দেখ, সেখানে তোমরা তাকে নাক কাটা অবস্থায় পাও না। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। [বুখারী: ৪৭৭৫, মুসলিম: ২৬৫৮]

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদেরকেও নিজ বুদ্ধি দিয়ে ভেবে ঈমান আনতে হবে।
নতুবা তারাও জাহান্নামে যাবে।  

★এক্ষেত্রে কিছু ইসলামী স্কলারদের মত কিছুটা ভিন্ন।
তারা মতবিরোধ করেছেন।   

তারা বলেন যে,
যারা ইসলাম গ্রহণ করেন নি, তাদের মধ্যে দু’ধরনের লোক রয়েছে।

এক : যারা মুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলামের কথা শুনেছেন, ইসলাম সম্পর্কে জানা তাদের জন্য সহজ ছিল, এরপরও তারা ইসলাম সম্পর্কে অনুসন্ধান করেননি। তাদের অবস্থা প্রথম প্রশ্নের উত্তরে প্রদত্ত লোকদের অবস্থার অনুরূপ হবে। অর্থাৎ, তাদের জন্য জাহান্নামই নির্ধারিত থাকবে।

দুই : যারা অমুসলিমদের মাঝে ছিলেন, ইসলাম সম্পর্কে জানার কোনো উপায় ছিল না। ইসলামের কথা কখনো শুনেনও নি। তাদের অবস্থা আহলুল ফাতরাত এর মতো হবে। অর্থাৎ, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করবেন। যেমন বলবেন, আগুনে ঝাপ দাও। যারা তাঁর অনুসরণ করবে, তারা আগুনে ঝাপ দিয়ে দেখবে সেটা শীতল বেহেশত। যারা অমান্য করবে, তারা সত্যিই জাহান্নামে যাবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً
রাসূল না পাঠিয়ে আমি কাউকে শাস্তি দেই না। (ইসরা : ১৫)

ইবনে কাসীর রহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এটা আল্লাহর ইনসাফের প্রকাশ। আল্লাহ কাউকে তার বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ ছাড়া শাস্তি দিবেন না। হয়ত রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে বা অন্য কোনো ভাবে দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে।
কাজেই তাদের পরিণাম কী হবে তা ক্বিয়ামতের দিনই নির্ধারিত হবে।

যারা প্রকৃতই ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানেনি, শুনেনি তাদের কাছে এবং পাগলদের কাছে কিয়ামতে আল্লাহর আনুগত্যের উপর এক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে যারা উত্তীর্ণ হবে, তারা জান্নাতবাসী এবং অবশিষ্ট দোযখবাসী হবে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/২৯-৩২)।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...