জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحمن
পুরুষরা মাথায় ব্যান্ড বাধলে এটা মহিলাদের মতো হয়ে যায়।
তাদের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন হয়ে যায়, আর যেহেতু চুল সোজা রাখার জন্য অন্য পদ্ধতিও রয়েছে,( টুপি ইত্যাদি পরিধান,নিয়মিত তৈল বা অন্য কিছু লাগিয়ে চুলের যত্ন নেওয়া)
তাই শরীয়ত পুরুষদের জন্য মাথায় ব্যান্ড বাধার অনুমতি দেয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছে
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
تَابَعَهُ عَمْرٌو ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ
যে সমস্ত পুরুষেরা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,আর যে সমস্ত মহিলারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,তাদের উপর রাসুল সাঃ লা'নত করেছেন। (বুখারী শরীফ ৫৮৮৫)
তবে ঘরের মধ্যে এটি পড়া সংক্রান্ত কিছু উলামায়ে কেরামগন অনুমতি দিয়েছেন।
আরো জানুনঃ
★পুরুষদের চুল রাখার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আহকামঃ
পুরুষের মাথার চুল রাখার ক্ষেত্রে বিধান হল, বাবরি চুল রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নাত। আর মাথা কামিয়ে রাখা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত। এটিকেও সুন্নাহ বলা যাবে। তবে সাহাবীদের সুন্নাহ। রাসূল সাঃ থেকে সরাসরি প্রমাণিত সুন্নাহ নয়। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুধু হজ্ব শেষে মাথার চুল কামিয়েছেন মর্মে হাদীস পাওয়া যায়। এছাড়া আর কখনো চুল কামিয়েছেন মর্মে বর্ণনা না পাওয়া যায় না।
যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম রাঃ গণকেও অনুসরণীয় সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই মাথা কামিয়ে রাখাও সুন্নাহের অন্তর্ভূক্ত।
বাবরি রাখার তিনটি পদ্ধতি
এ বিষয়ে তিন ধরণের বর্ণনা এসেছে। যথা-
১
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল।
২
লিম্মা তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর বড় রাখা।
৩
জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত আলম্বিত চুল।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4185)
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৫}
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوْقَ الْوَفْرَةِ، وَدُونَالْجُمَّةِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث–
4187)
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল ঘাড়ের উপর এবং কানের নীচ পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৭}
عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ: «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ: «لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4183)
হযরত বারা বিন আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে কান পর্যন্ত বাবরীধারী, লাল ইয়ামেনী চাদরের আবরণে রাসূল সাঃ থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ রহঃ অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন যে, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩}
এছাড়া চুল রাখার বাকি তরীকাগুলো জায়েজ পর্যায়ের। তবে এর মাঝে কতিপয় সূরত নিষিদ্ধ।
যেমন-
১
মাথার এক অংম কামিয়ে ফেলা, অপর অংশে চুল রাখা।
২
কোন বিধর্মীদের অনুকরণে চুল রাখা।
৩
কোন ফাসিক ব্যক্তির চুলের হেয়ার ষ্টাইল নকল করে চুল রাখা।
ইত্যাদি সূরত নাজায়েজ।
কিন্তু এছাড়া চুল ছোট করে রাখা, যে কোন পদ্ধতির চুল রাখাই জায়েজের আওতাধীন হবে।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ القَزَعِ»، وَالْقَزَعُ: أَنْ يُحْلَقَ رَأْسُ الصَّبِيِّ فَيُتْرَكَ بَعْضُ شَعْرِهِ (سنن ابى داود، رقم الحديث-4193)
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ কুযা করতে নিষেধ করেছেন। “কুযা” বলা হয়, বাচ্চার মাথার একাংশ কামিয়ে ফেলা, আরেকাংশের চুল না কামানো। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৩}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَتْ لِي ذُؤَابَةٌ، فَقَالَتْ لِي أُمِّي: لَا أَجُزُّهَا، «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمُدُّهَا، وَيَأْخُذُ بِهَا» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4197)
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মাথায় চুলের খোঁপা ছিল। আমার মা বলেন, আমি তা কাটবো না। কেননা, রাসূল সাঃ তা ধরে লম্বা করতেন এবং কাছে টেনে নিতেন। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৭}