আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (8 points)
আসসালামুআলাইকুম উস্তাজ
কাউকে যদি ভালো লাগে সেক্ষেত্রে দুনিয়াতে তাকে না চেয়ে  যদি আখিরাতে তাকে আল্লাহর কাছে  চাই তাহলে কি হবে।  মানে এমন কি করা যাবে???
তার সাথে কোনো সম্পর্ক না রেখে সবসময় দোয়াতে তাকে চাইতে পারবো???

1 Answer

0 votes
by (581,910 points)
edited by
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/5365 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
কোরআন-হাদীসে যে সমস্ত হুরের আলোচনা এসেছে,তারা মহিলা জাতীয় অর্থ্যাৎ স্ত্রী লিংগ, তবে কেউ কেউ বলে থাকেন হুর পুরুষ মহিলা উভয়-ই হতে পারে,উক্ত মতানুসারে ফলাফল  এই হবে যে পুরুষকে মহিলা হুর দেওয়া হবে,এবং মহিলাকে পুরুষ হুর দেওয়া হবে,আসলে বক্তবটা এমন নয় যেমন তারা ভেবেছেন,বরং জান্নাতি হুর বলতে মহিলা জামিয়া হুর-ই , কেননা আল্লাহ তা'আলা যেখানেই হুর সম্পর্কে আলোচনা এনেছেন, সেখানেই স্ত্রী লিংগের শব্দ ব্যবহার  করেছেন,এবং যেসব স্থানে পুঃলিঙ্গ এসেছে সেখানে উলামায়ে কেরাম তার তাবীল বা মাননসই ব্যখ্যা প্রদান করেছেন।
শুনুন এ সম্পর্কে  আল্লাহ তা'আলার শাশ্বত বানী সমূহ.....
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺸَﺄْﻧَﺎﻫُﻦَّ ﺇِﻧﺸَﺎﺀً ، ﻓَﺠَﻌَﻠْﻨَﺎﻫُﻦَّ ﺃَﺑْﻜَﺎﺭًﺍ ، ﻋُﺮُﺑًﺎ ﺃَﺗْﺮَﺍﺑًﺎ
"আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী। কামিনী, সমবয়স্কা।"(সূরা ওয়াকেয়া-৩৫)
ﺇِﻥَّ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﻣَﻔَﺎﺯًﺍ ، ﺣَﺪَﺍﺋِﻖَ ﻭَﺃَﻋْﻨَﺎﺑًﺎ ، ﻭَﻛَﻮَﺍﻋِﺐَ ﺃَﺗْﺮَﺍﺑًﺎ
পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য। উদ্যান, আঙ্গুর, সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী।(সূরা নাবা ৩১-৩৩)

শায়েখ ইবনে উসাইমিন "মহিলারা জান্নাতে পুরুষ হুর পাবে কি না "প্রশ্নের জবাবে বলেনঃ জান্নাতের নিয়ামত বর্ণনা করতে যেয়ে যেহেতু  আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ 
ﻭَﻟَﻜُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺗَﺸْﺘَﻬِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴُﻜُﻢْ ﻭَﻟَﻜُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺗَﺪَّﻋُﻮﻥَ ﻧُﺰُﻟًﺎ ﻣِﻦْ ﻏَﻔُﻮﺭٍ ﺭَﺣِﻴﻢٍ 
সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে আছে তোমরা দাবী করা বস্তু সমূহ। এটা ক্ষমাশীল করুনাময়ের পক্ষ থেকে সাদর আপ্যায়ন।
ﻳُﻄَﺎﻑُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﺑِﺼِﺤَﺎﻑٍ ﻣِّﻦ ﺫَﻫَﺐٍ ﻭَﺃَﻛْﻮَﺍﺏٍ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺗَﺸْﺘَﻬِﻴﻪِ ﺍﻟْﺄَﻧﻔُﺲُ ﻭَﺗَﻠَﺬُّ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦُ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ
তাদের কাছে পরিবেশন করা হবে স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র এবং তথায় রয়েছে মনে যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে।(সূরা যুখরুফঃ৭১)

সর্ব মহলের স্বীকৃত বিষয় মানুষের চাহিদা সমূহের মধ্যে বিবাহ হচ্ছে সব চেয় বেশী চাহিদাসম্পন্ন বস্তু,এবং এটা জান্নাতে পুরুষ-মহিলার উভয়ের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হবে,মহিলাকে আল্লাহ তা'আলা জান্নাতে তার দুনিয়ার স্বামীর সাথে বিবাহ দিবেন(যদি ঐ স্বামী ও জান্নাতি হয়)। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ 
 ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺃَﺩْﺧِﻠْﻬُﻢْ ﺟَﻨَّﺎﺕِ ﻋَﺪْﻥٍ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻬُﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﺻَﻠَﺢَ ﻣِﻦْ ﺁﺑَﺎﺋِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻬِﻢْ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻬِﻢْ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺰِﻳﺰُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ 
হে আমাদের পালনকর্তা, আর তাদেরকে দাখিল করুন চিরকাল বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের বাপ-দাদা, পতি-পত্নী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (মাজমু'উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাঈল ইবনে উসাইমিনঃ২/৫১) (শেষ)

কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ  وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
‘তোমাদের কাছে হয়ত কোন একটা বিষয় পছন্দনীয় নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়ত বা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে তা অকল্যাণকর। বস্তুত আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৬]

আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহ.) বলেন-
 فإياك أن تسأل شيئًا إلا وتقرنه بسؤال الخيرة ، فرب مطلوب من الدنيا كان حصوله سببًا للهلاك
‘আল্লাহর কাছে কোন কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়া থেকে বিরত থাকবে। তবে (কোন কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়ার) সময় কল্যাণের দোয়া যুক্ত থাকলে অসুবিধা নেই। কেননা, অনেক সময় অনেক দুনিয়াবি কাম্য বস্তু অর্জন ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হয়।’ [সাইদুল খাতির, পৃ. ৩৫২]


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কে কার জন্য কল্যাণকর তা আল্লাহ-ই ভালো জানেন। মানুষের বহ্যিক দিক দেখে তাকে ভালো বা খারাপ বিবেচনা করা যাবে না। সুতরাং কাউকে দুনিয়াতে পাওয়া এবং দুনিয়াতে না পেলে আখেরাতে পাওয়ার জন্য দুআ করা কখনো উচিৎ হবে না। কেননা দুনিয়াতে কে আপনার জন্য মঙ্গলজনক হবে তা আল্লাহ-ই ভালো জানেন। আর আখেরাতে আপনার জন্য আল্লাহ এমন এমন জিনিষ রাখবেন, যা আপনি কখনো কল্পনাও করতে পারবেন। তাছাড়া আখেরাতে দুনিয়ার স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে যারা নেককার হবে, শুধুমাত্র তারা একত্রে বসবাস করতে পারবে। সুতরাং দুনিয়াতে কাউকে পাওয়ার জন্য দুআ করা কখনো উচিৎ হবে না। এবং আখেরাতে জন্য দুআ আরো মারাত্বক ধরণের বে-মুনাসিব দুআ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (581,910 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...