স্বামীর সামনে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য প্রদর্শন শুধু বৈধই নয় বরং করণীয়। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ-رضي الله عنه- عَنِ النَّبِيِّ –ﷺ-، أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ: مَا اسْتَفَادَ الْمُؤْمِنُ بَعْدَ تَقْوَى اللَّهِ خَيْرًا لَهُ مِنْ زَوْجَةٍ صَالِحَةٍ، إِنْ أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ، وَإِنْ نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ، وَإِنْ أَقْسَمَ عَلَيْهَا أَبَرَّتْهُ، وَإِنْ غَابَ عَنْهَا نَصَحَتْهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهِ
আবু উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলতেন, কোনো মুমিন ব্যক্তি আল্লাহ্ভীতির পর উত্তম যা লাভ করে তা হলো পুণ্যময়ী স্ত্রী। স্বামী তাকে কোন নির্দেশ দিলে সে তা পালন করে; সে তার দিকে তাকালে (তার বাহ্যিক সাজসজ্জা ও চরিত্রের মাধুর্যতা) তাকে আনন্দিত করে এবং সে তাকে শপথ করে কিছু বললে সে তা পূর্ণ করে। আর স্বামীর অনুপস্থিতিতে সে তার সম্ভ্রম ও সম্পদের হেফাযত করে। (সুনান ইবন মাজাহ ১৮৫৭)
কোনো সাজসজ্জা হারাম হওয়ার ব্যাপারে যতক্ষণ পর্যন্ত দলিল পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তা বৈধ। আর হারাম হওয়ার দলিল পাওয়া গেলে তা অবৈধ। কেননা, বস্তুর মূল হচ্ছে, বৈধতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللّهِ الَّتِيَ أَخْرَجَ لِعِبَادِهِ وَالْطَّيِّبَاتِ مِنَ الرِّزْقِ
আপনি বলুন, আল্লাহর সাজসজ্জাকে, যা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে? (সূরা আ’রাফ ৩২)
শরীয়তের বিধান মতে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পায়ের লোম শেফ করা জায়েজ আছে।
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 17340 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
(০২)
মহিলাদের চুলের ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক নীতিমালা হলঃ
১. মহিলারা চুল লম্বা রাখবে।হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন রা. চুল লম্বা রাখতেন।
২. এ পরিমাণ খাটো করবে না যে, পুরুষের চুলের মতো হয়ে যায়। হাদীস শরীফে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে।
لعن ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬَﺎﺕِ ﺑِﺎﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬِﻴﻦَ ﺑِﺎﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝ
নবীজী সাঃ পুরুষ সাদৃশ্য গ্রহণকারী মহিলাদেরকে এবং মহিলা সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষদেরকে লা'নত প্রদান করেছেন(সহীহ বুখারী-৫৮৮৫)
৩. চুল কাটার ক্ষেত্রে বিজাতীয়দের অনুকরণ করবে না। কারণ হাদীসে বিজাতীয়দের অনুকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
নবীজী সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি যে জাতীর অনুকরণ করবে, সে তাদের-ই দলভুক্ত হবে।(সহীহ বুখারী-৪০৩১)
অপর হাদীসে এসেছে,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)
আর মাথার কিছু অংশের চুল ছোট করা, যেমন সামনের চুল ছোট করা এবং অন্যগুলো রেখে দেওয়া– এটি ‘কুযা’ এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে ইবনে উমর রাযি. থেকে সাব্যস্ত হাদীসে এসেছে যে,
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُثْمَانَ، - قَالَ أَحْمَدُ كَانَ رَجُلاً صَالِحًا - قَالَ أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ نَافِعٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْقَزَعِ وَالْقَزَعُ أَنْ يُحْلَقَ رَأْسُ الصَّبِيِّ فَيُتْرَكَ بَعْضُ شَعْرِهِ .
আহমদ ইব্ন হাম্বল (রহঃ) .......... ইব্ন উমার (রাঃ) থেক বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘কায্’ঈ’ থেকে নিষেধ করেছেন। আর ‘কায্’ঈ’ হ’লো- বাচ্চাদের মস্তক মুণ্ডনের পর মাথার উপরিভাগে কিছু লম্বা চুল রাখা।
(বুখারী ৫৯২১ মুসলিম ২১২০)
★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শুধু এইভাবে সামনের চুল কেটে রাখা জায়েজ হবেনা।
আরো জানুনঃ