আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
359 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
সম্মানিত  মুফতি  সাহেব,
১) মেয়ে  উত্তমরূপে কাপড়  পরিধেয়  থাকা অবস্থায়, বাবার স্পর্শ  দ্বারা যদি  মেয়ে হালকা উত্তেজনা অনুভব  করে,অবশ্যই  বাবার সাথে  শারীরিক সম্পর্ক করার চিন্তাধারা থেকে না......

এতে কি  হুরমত হয়ে যাবে?

অথবা,

মেয়ে  উত্তমরূপে কাপড়  পরিধেয়  অবস্থায়  যদি মেয়ের স্পর্শ  দ্বারা  বাবা উত্তেজিত  হয় কিন্তু অবশ্যই মেয়ের সাথে শারীরিক  সম্পর্ক  করবে এমন চিন্তাধারা থেকে না......

এতে কি হুরমত  সাব্যস্থ হবে?

আলহামদুলিল্লাহ,
এই প্রশ্নের  উত্তরে আপনি বলেছেন  কোন সমস্যা হবে না।

শ্রদ্ধেয় জনাব,
আরেকটু জানতে চাই,
উত্তমরূপে কাপড়  পরিধেয়  অবস্থাতেই সচারাচর  যেখানে কাপড়  পরিধেয়  থাকে না,যেমনঃ হাত।
কোনরকম বদনিয়ত  ছাড়া  হাত স্পর্শের দ্বারা  বাবা- মেয়ের কারো একজনের উত্তেজনা  অনুভব  হলে কি,
স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্ক চিরতরে হারাম হইয়া  যাবে????

২) অসাবধানতা বশত, কোন কারণে ওড়না  সরে গেলে,জামার গলা বড়  হওয়ায়  কিয়দাংশ দেখা  গেলে, সেখানে বাবা অথবা ছেলের  দৃষ্টি  চলে গেলে কি স্বামী - স্ত্রী  সম্পর্ক হারাম হইয়া  যাবে???
কোন বদনিয়ত  ছাড়াই যদি উত্তেজনা  অনুভব হয়।

৩) স্বামীর কথার ধরনে  যদি বোঝা যায় সে তার স্ত্রীকে "মায়ের মত" এই কথাটা দিয়ে  আসলে মায়ের কোন গুণ বা দোষ বুঝিয়েছে। যেমনঃ তুমি ঠিক আমার মায়ের মতো করতেছো,এই দিনটায় আমার মা ও এটাই করতো।
অথবা তার কথায়  প্রকাশ  পেয়েছে তুমি আমার প্রতি  আমার  মায়ের  মতই যত্নশীল,ভালবাসাময় অথবা মায়ের  মতই শাসন করতেছো।

এর দ্বারাও কি যিহার হয়ে যাবে???

৪)স্বামীর মা এবং  বোনের সাথে তুলনা ছাড়া  অন্য কারোও সাথে তুলনা  দ্বারাও কি যিহার হয়???

স্ত্রী  আপন বাবা এবং  ভাই ছাড়া  অন্য কারোও  সাথে স্বামীর তুলনা করলে কি যিহার হয়?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

(১)

https://www.ifatwa.info/1233 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,

১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة

وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)


২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،

وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى

 وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)


৩–

স্পর্শ করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার আগে বা শেষে, হাত ছেড়ে দেওয়ার আগে বা পর যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও নিষিদ্ধতার সাব্যস্ত হবে না।

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما

وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)


৪–

স্পর্শ করার পর উদ্ভূত উত্তেজনা স্থীর হওয়ার পূর্বেই বীর্যপাত না হতে হবে। যদি উত্তেজনা হওয়ার সাথে সাথেই বীর্যপাত হয়ে যায়, তাহলেও নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

وفى الدر المختار- هذا إذا لم ينزل فلو أنزل مع مس أو نظر فلا حرمة به بفتى

وفى رد المحتار- قوله : فلا حرمة ) لأنه بالإنزال تبين أنه غير مفض إلى الوطء هداية .

قال في العناية : ومعنى قولهم إنه لا يوجب الحرمة بالإنزال أن الحرمة عند ابتداء المس بشهوة كان حكمها موقوفا إلى أن يتبين بالإنزال ، فإن أنزل لم تثبت ، وإلا ثبت(الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/109


وكذا المقبلات، أو الممسوسات بشهوة لأصوله، أو فروعه (رد المحتار-4/100)

لأن حرمة المصاهرة إذا ثبتت لا تسقط أبدا (رد المحتار-4/109)



৫–

মহিলার বয়স ৯ বছর থেকে কম না হতে হবে। আর পুরুষের বয়স ১২ বছর থেকে কম না হতে হবে। {হুরমতে মুসাহারাত-১৯}

উপরোক্ত ৫টি শর্ত পাওয়া গেলে তাহলে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে গেছে।চায় যে স্পর্শ করেছে সে ঘুমন্ত হোক বা সজাগ হোক।তবে স্বপ্নে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবে না।


সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!

উত্তমরূপে কাপড়  পরিধেয়  অবস্থাতেই সচারাচর  যেখানে কাপড়  পরিধেয়  থাকে না,যেমনঃ হাত।

কোনরকম বদনিয়ত  ছাড়া  হাত স্পর্শের দ্বারা  বাবা- মেয়ের কারো একজনের উত্তেজনা  অনুভব  হলেও তখন হুরমতে মুসাহারা প্রমাণিত হবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1233


(২) শুধুমাত্র দেখার দ্বারা হুরমত প্রমাণিত হয় না। বরং কামভাব নিয়ে স্পর্শ করতে হবে। 


(৩) শুধুমাত্র মা বললে যিহার হবে না।বরং মা বা মায়ের কোনো অঙ্গের সাথে স্ত্রীকে তাশবিহ বা উপমা দিতে হবে।হ্যা এটা অবশ্যই ঠিক যে স্ত্রীকে মা,মেয়ে,বোন ইত্যাদি বলে ডাকা মাকরুহ।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন।

প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে যিহার হবে না। সুতরাং স্ত্রীও স্বামীর উপর হারাম হবে না। আল্লাহ-ই ভালো জানেন।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৩/৩২৯)


(في الدرالمختار ج ٣، ص ٤٧٠ )

(وإن نوى بأنت علي مثل أمي) ، أو كأمي، وكذا لو حذف علي خانية (برا، أو ظهارا، أو طلاقا صحت نيته) ووقع ما نواه لأنه كناية (وإلا) ينو شيئا، أو حذف الكاف (لغا) وتعين الأدنى أي البر، يعني الكرامة. ويكره قوله أنت أمي ويا ابنتي ويا أختي ونحوه


وفي حاشية ابن عابدين (المسمى رد المحتار) تحت 

(قوله: ويكره إلخ) جزم بالكراهة تبعا للبحر والنهر والذي في الفتح: وفي أنت أمي لا يكون مظاهرا، وينبغي أن يكون مكروها، فقد صرحوا بأن قوله لزوجته يا أخية مكروه. وفيه حديث رواه أبو داود «أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - سمع رجلا يقول لامرأته يا أخية فكره ذلك ونهى عنه» ومعنى النهي قربه من لفظ التشبيه، ولولا هذا الحديث لأمكن أن يقال هو ظهار لأن التشبيه في أنت أمي أقوى منه مع ذكر الأداة، ولفظ " يا أخية " استعارة بلا شك، وهي مبنية على التشبيه، لكن الحديث أفاد كونه ليس ظهارا حيث لم يبين فيه حكما سوى الكراهة والنهي، فعلم أنه لا بد في كونه ظهارا من التصريح بأداة التشبيه شرعا، ومثله أن يقول لها يا بنتي، أو يا أختي ونحوه. اهـ 



(৪) স্ত্রী কর্তৃক যিহার পতিত হয়না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/509

মা ব্যতীত অন্যান্য মুহাররামাতে আবদিয়্যা (তথা যাদের সাথে  স্থায়ীভাবে বিয়ে হারাম) এর কোনো অঙ্গের সাথে স্ত্রীকে তুলনা করলে যিহার পতিত হবে। তবে স্ত্রী কে তুলনা করা ব্যতীত শুধুমাত্র বোন ফুফু বললে যিহার হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...