আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. ছেলে মেয়ে বৃত্তি বা অন্য কিছুর টাকা মা বাবা নিয়ে খরচ করলে সেগুলা কি তাদের কে তারা বড় হইলে ফেরত দিতে হবে?
২। সালাতের কি কাফফারা আছে? কেউ মারা গেলে তার কাজা সালাতের কি হবে?
৩. মালা আল কুর্দি নামের এক লোক কুরানের আয়াত দিয়ে মানুষকে বধির, বোবা থেকে ভাল করে,  সে কি সত্যই এসব করে?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ছেলে মেয় যে বৃত্তি পায়, সেটার মালিক উক্ত ছেলে বা মেয়ে-ই , সুতরাং মা বাবা উক্ত টাকাকে খরচ করতে পারবে না। তাদের অনুমতি নিয়েই খরচ করতে হবে। 
(২)
যদি বেহুশ অবস্থায় কারো পাঁচ ওয়াক্ত নামায বা তার চেয়ে বেশী নামায কা'যা হয়ে যায়,তাহলে উনি অার শরীয়তের মুকাল্লাফ থাকবেন না। তবে যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পূর্বেই হুশ চলে আসে,তাহলে উনি শরীয়তের মুকাল্লাফ থাকবেন। যথাসম্ভব নামায আদায়ের চেষ্টা করবেন,নতুবা কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যাবেন।নিজ জীবদ্দশায় নামাযের কাফ্ফারা আদায় করা সমুচিত নয়।(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৫/৫১১)(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ-৪/২৫৪)অক্ষম ব্যক্তির নামায সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-  https://www.ifatwa.info/1411

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
নামাযের কাফফারা আছে, কেউ মারা গেলে তার জন্য নামাযের কাফফারা আদায় করার অসিয়ত করা ওয়াজিব। এবং ওয়ারিসদের জন্য উক্ত অসিয়ত পূর্ণ করা ওয়াজিব। 

(৩)
https://www.ifatwa.info/997 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
সমস্ত কুরআনে কারীম-ই মু'মিনের জন্য হেদায়ত, শে'ফা ও রহমত স্বরূপ।

আল্লাহ তা'আলা বলেন- 
ﻭَﻧُﻨَﺰِّﻝُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺷِﻔَﺎﺀ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔٌ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ الخ
আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।(সূরা বনী ইসরাঈল-৮২)

ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺷِﻔَﺎﺀٌ
বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার।(সূরা হা-মীম সেজদা-৪৪)
 
কুরআনে কারীম অন্তর এবং শরীর উভয়ের জন্যই শে'ফা স্বরূপ।এ সম্পর্কে আল্লামা শাওকানী রাহ বলেন,
" ﺍﺧﺘﻠﻒ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﻛﻮﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﻗﻮﻟﻴﻦ : ﺍﻷﻭﻝ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻟﻠﻘﻠﻮﺏ ﺑﺰﻭﺍﻝ ﺍﻟﺠﻬﻞ ﻋﻨﻬﺎ ﻭﺫﻫﺎﺏ ﺍﻟﺮﻳﺐ [ ﺃﻱ : ﺍﻟﺸﻚ ] ﻭﻛﺸﻒ ﺍﻟﻐﻄﺎﺀ ﻋﻦ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﺍﻟﺪﺍﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ .
ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﺮﺍﺽ ﺍﻟﻈﺎﻫﺮﺓ ﺑﺎﻟﺮﻗﻰ ﻭﺍﻟﺘﻌﻮﺫ ﻭﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ .
ﻭﻻ ﻣﺎﻧﻊ ﻣﻦ ﺣﻤﻞ ﺍﻟﺸﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻌﻨﻴﻴﻦ
কুরআন কি প্রকারের শে'ফা দানকারি? সে সম্পর্কে দু'টি মতামত পাওয়া যায়।যথাঃ-
(এক) কুরআন অন্তরের বক্রতা ও অজ্ঞতা এবং আল্লাহর মা'রেফত অর্জনের প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে দেয়।
(দুই)কুরআন শরঈ ঝাড়-ফুক ও তাবিজের মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক রোগের শে'ফা।(ফাতহুল ক্বাদির-৩/৩৬২)

হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عن أبي سعيد رضي الله عنه، قال: انطلق نفر من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم في سفرة سافروها، حتى نزلوا على حي من أحياءالعرب، فاستضافوهم فأبوا أن يضيفوهم، فلدغ سيد ذلك الحي، فسعوا له بكل شيء لا ينفعه شيء، فقال بعضهم: لو أتيتم هؤلاء الرهط الذين نزلوا، لعله أن يكون عند بعضهم شيء، فأتوهم، فقالوا: يا أيها الرهط إن سيدنا لدغ، وسعينا له بكل شيء لا ينفعه، فهل عند أحد [ص: ٩٣] منكم من شيء؟ فقال بعضهم: نعم، والله إني لأرقي، ولكن والله لقد استضفناكم فلم تضيفونا، فما أنا براق لكم حتى تجعلوا لنا جعلا، فصالحوهم على قطيع من الغنم، فانطلق يتفل عليه، ويقرأ: الحمد لله رب العالمين فكأنما نشط منعقال، فانطلق يمشي وما به قلبة، قال: فأوفوهم جعلهم الذي صالحوهم عليه، فقال بعضهم: اقسموا، فقال الذي رقى: لا تفعلوا حتى نأتي النبي صلى الله عليه وسلم فنذكر له الذي كان، فننظر ما يأمرنا، فقدموا على رسول الله صلى الله عليه وسلم فذكروا له، فقال: «وما يدريك أنها رقية»، ثم قال: «قد أصبتم، اقسموا، واضربوا لي معكم سهما» فضحك رسول الله صلى الله عليه وسلم،
ভাবার্থঃ-একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন। তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন। কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যের) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল, এ কাফেলা যারা এখানে অবতরণ করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত। সম্ভবত, তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে। ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল, হে যাত্রীদল! আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না। তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি। আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি। কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করব না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে (الْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) ‘‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’’ (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমনভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন হতে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না। (বর্ণনাকারী বলেন,) তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল। সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন তিনি বললেন এটা করব না, যে পর্যন্ত না আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কী নির্দেশ দেন। তারা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি [নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দু‘আ? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন।(সহীহ বোখারী-২২৭৬,সহীহ মুসলিম-২২০১) ( শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআনের আয়াত দ্বারা মানুষকে বোবা ও বধির থেকে ভালো করা সম্ভব। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...