আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
157 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (101 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম,
আমাদের বাসায় একজন বাঁধা কাজের মেয়ে যার বাবা প্রতিমাসে আমাদের কাছ থেকে নির্ধারিত বেতন নেন।সেই মেয়েকে কি যাকাত দেয়া যাবে??সেই মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক কিন্তু আমাদের জানামতে তার নিসাব পরিমান সম্পদ নেই। কারন সেই মেয়ের উপার্জন প্রতিমাসে তার বাবাকে আমরা পাঠায় দেই।আর আমাদের জানামতে তার বাবা তা খরচ করে ফেলে কারন তারা অনেক অভাবী ।আর ঐ মেয়ের গ্রামে এমন কোনো সম্পদ আছে কি না,যা তাকে যাকাতের অনুপযোগী করে এমন বিষয়ে আমাদের জানা নেই তবে আমাদের ধারণা যে এমন কিছু নেই ।  সেই মেয়েকে বা তার বাবাকে যাকাত দেয়া যাবে কি?? তার বাবার কোনো পৈতৃক জমি আছে কি না সে বিষয়ে পরিষ্কার জানা নেই আমাদের।কিন্তু রিকশাচালক হিসেবে তার নিসাব পরিমান সম্পদ এক বছর থাকাটা আমাদের কাছে সম্ভব মনে হয় না। এমতাবস্থায় কি তার বাবাকে যাকাত দেয়া যাবে?

আর একটি প্রশ্ন আছে আমার যে,

https://ifatwa.info/1936/

এখানে বলেছেন যে তাক্বলীদের ফরজ আদেশ তাক্বলীদে শাখসীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে এবং তাক্বলীদে শাখসী ওয়াজিব। তাহলে কেউ যদি এখন তাক্বলীদে গায়রে শাখসীর চর্চা করে তাহলে কি কেবল ওয়াজিব তরক করার গুনাহ হবে নাকি ফরজ ই আদায় হবে না??? জাযাকাল্লাহ

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ [٩:٦٠]

যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। {সূরা তাওবা-৬০}

মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত। যথা-

১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।

২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।

৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-৬/৬৯}

৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক যাকাত প্রদান।

এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪, মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১, তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}

৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি বাকি নেই।

৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।

৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-

জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}

৮- সফররত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায় অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ।
,

★★প্রশ্নে উল্লেখিত কাজের মেয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু স্পষ্ট যে সে নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নয়,তাই তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।
তবে যাকাতের টাকা তাকে বেতন হিসেবে কোনো ভাবেই দেওয়া যাবেনা।
এটি আলাদা টাকা হিসেবে দিতে হবে।
,
 তার পিতা য্যেহেতু অভাবগ্রস্থ, রিকশাচালক।
যার কারণে খেয়ে পরে চলতে কষ্ট হচ্ছে।
বস্তুত তিনি যেহেতু নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নয়,তাই তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।
,
হ্যাঁ যদি জানা যায় যে তার পিতা নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক,তাহলে তার পিতাকে যাকাত দেওয়া যাবেনা।
,
তাই এক্ষেত্রে তার পিতার অবস্থা জেনেই তাকে যাকাত দিতে হবে।   

নেসাব সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০২)
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত তাকলীদে শাখসী গ্রহণযোগ্য মনে করেন।এবং এ ব্যাপারে তারা ওয়াজিবের বিধান প্রয়োগ করেন।ফরযের বিধান এজন্য আরোপ করেন না। কেননা সাধারণ তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে।

(ক)তাকলীদে শাখসী

(খ)তাকলীদে গায়রে শাখসী।

যেহেতু সর্বসম্মতভাবে মতলকে তাকলীদ ফরয।এবং তার দু'টি শাখা রয়েছে।তাই কোনো একটাকে মেনে নিলেই ফরয বিধান যে তাকলীদ রয়েছে,সেটা পালন হয়ে যাবে। চায় শাখসীকে পালন করা হোক বা গায়রে শাখসীকে পালন করা হোক।সুতরাং তাকলীদে গায়রে শাখসী করা দ্বারা ঠিক সেভাবেই ফরয দায়িত্ব আদায় হবে,যেভাবে তাকলীদে শাখসী দ্বারা ফরয দায়িত্ব আদায় হয়। কেননা মা'মুর বিহি তথা আদেশকৃত জিনিষ তাকলীদ হচ্ছে, মতলক বা ব্যাপক।তাই তার যে কোনো একটি শাখাকে আদায় করে নিলেই মা'মুর বিহি আদায় হয়ে যায়।
,
★★কেউ যদি এখন তাক্বলীদে গায়রে শাখসীর চর্চা করে তাহলে ওয়াজিব তরক করার গুনাহ হবে।
ফরজ তরকের গুনাহ হবেনা।
,
বিস্তারিত জানতে উল্লেখিত লিংক  দ্রষ্টব্য। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...