আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
270 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (101 points)
edited by

আসসালামুআলাইকুম,

আমার প্রশ্নসমূহ হলো:

১)ইমামের সাথে কতটুকু নামাজ পাওয়া গেলে জামাতে নামাজ পাওয়া গিয়েছে বলে গণ্য হবে? অনেকে বলে যে,অন্তত এক রাকাত ইমামের সাথে পড়তে হবে নতুবা তা জামাতে পড়া হিসেবে গণ্য হবে না।কথাটি কি ঠিক?

২) ইমামের পেছনে নামাজরত অবস্থায় পান্জাবির হাতা গুটানো ছিল এবং ইমাম রুকু থেকে উঠার পর আমি হাতা ঠিক করে নিই ।এতে একটু হাতের নড়াচড়া বেশি হয় এবং সেজদায় যেতেও এক্টু দেরি হয়।এমতাবস্থায় নামাজ কি নষ্ট হয়ে গেছে?

৩) সিঙ্গেল বেড এর চাদরে(দৈর্ঘ্য:১২১ সে.মি ও প্রস্থ: ৮২ সে.মি প্রায়) বীর্য লেগে গেছে।এখন চাদর ধৌত করার সময় প্রতিবার পানি থেকে উঠিয়ে তা নিংড়ানো বা চেপে পানি বের করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।এক্ষেত্রে কীভাবে পাক করবো?

৪)https://ifatwa.info/17410/

এই ফাতওয়ার ২য় প্রশ্নের সাথে এক্টু সংযোজন আছে যে,যদি এক দিরহামের বেশি লাগে তাহলেও কি বিধান একই না সে ক্ষেত্রে ধৌত করতে হবে?

৫)নামাজে যে অনাকাঙ্খিত শব্দ উচ্চারিত হয়ে যায় তা যদি অসষ্পট হয় অর্থাৎ পূর্ণ এক হরফ উচ্চারিত না হয় তাহলে নামাজ ফাসিদ হবে কি?

জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
যদি নামাজি ইক্তেদা করে ইমামের সাথে নামাজের কোনো এক অংশে শরিক হয়ে যায়,যদিও সে শেষ বৈঠকে ইমামের সালাম ফিরানোর পূর্বে জামা'আতে শরিক হোক,সে জামা'আত পেয়েছে বলে গন্য হবে,জামা'আতের ছওয়াবও পাবে।
তবে তাকবিরে উলার সাথে নামাজ আদায় করার যত ছওয়াব,ততটুকু ছওয়াব মিলবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْحَكَمِ، حَدَّثَهُمْ أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي الْعَتَّابِ، وَابْنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا جِئْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ وَنَحْنُ سُجُودٌ فَاسْجُدُوا وَلَا تَعُدُّوهَا شَيْئًا وَمَنْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ "

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সলাতে এসে আমাদেরকে সাজদাহ্ অবস্থায় পেলে সিজদায় চলে যাবে। তবে এ সাজদাহকে (সলাতের রাক‘আত) গণ্য করবে না। যে ব্যক্তি রুকূ‘ পেলো সে সলাত পেয়েছে।
বুখারী (অধ্যায় : আযান, অনুঃ সাতটি অঙ্গে সাজদাহ্ করা, হাঃ ৮০৯), মুসলিম (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ সাজদার অঙ্গ সাতটি) আবু দাউদ ৮৮৯।

কিতাবুল ফিকহি আলা মাযাহিবিল আরবা'আতি গ্রন্থের ৩৯৬ নং পৃষ্ঠায় এসেছেঃ

 الجماعة إذا شارك المأموم إمامه في جزء من صلاته، ولو آخر القعدة الأخيرة قبل السلام، فلو كبر قبل سلام إمامه فقد أدرك الجماعة، ولو لم يقعد معه، وهذا الحكم متفق عليه بين الحنفية، والحنابلة، والشافعية، إلا أن الشافعية استثنوا من ذلك صلاة الجمعة فقالوا: إنها لاتدرك إلا بإدراك ركعة كاملة مع الإمام
সারমর্মঃ
যদি নামাজি ইক্তেদা করে ইমামের সাথে নামাজের কোনো এক অংশে শরিক হয়ে যায়,যদিও সে শেষ বৈঠকে ইমামের সালাম ফিরানোর পূর্বে জামা'আতে শরিক হোক,সে জামা'আত পেয়েছে বলে গন্য হবে।
এই ব্যাপারে হানাফি,শাফেয়ী, হাম্বলি মাযহাব একমত।
তবে শাফেয়ী রহঃ এর মাযহাবে জুম'আর নামাজের জামা'আত পেতে হলে পূর্ণ এক রাকাত পেতে হবে। 

البحرالرائق  :
"(قوله: ولم يصل الظهر جماعة بإدراك ركعة)……… بل أدرك فضلها) أي فضل الجماعة؛ لأن من أدرك آخر الشيء فقد أدركه..." (ص۷۵،ج۲طبع سعید)
সারমর্মঃ
উল্লেখিত ব্যাক্তি জামা'আতের ফজিলত পাবে।
কেননা যে কোনো বস্তু শেষ পেয়েছে,সে ঐ বস্তুকে পেয়েছে।  
۔
ومذهب مالك: أنه لا يكون مدركاً إلا بإدراك ركعة،
ইমাম মালেক রহঃ এর মাযহাব হলো এক রাকাত না পেলে জামা'আত পাবেনা।

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، . أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ مِنَ الصَّلاَةِ رَكْعَةً فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلاَةَ " .
কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাতের এক রাক’আত পেল, সে সালাত পেল।

সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ১১২২, বুখারি হাঃ ৫৮০, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১২৫৯ নাসায়ী ৫৫৪।

সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন। 
,
(০২)
এক রুকন সমপরিমাণ এমনটি করলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত যদি অল্প সময় হয়,এক তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

তবে এটি আমলে কলিল হওয়ার কারনে নামাজ মাকরুহ হবে।  

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০৩)
এক্ষেত্রে প্রতিবার ধোয়ার পর কোনো আড় বা বাশ ইত্যাদির উপর রেখে দিবেন,যাতে টপকিয়ে পানি পড়া শেষ হয়ে যায়। 
        
(০৪)
যদি এক দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি লাগে,তাহলে ধৌত করতে হবে।

(০৫)
নামাজ ভঙ্গের অন্যতম একটি কারন হলোঃ
নামাজের ভেতর কথা বলা। নামাজে এমন কোনো অর্থবোধক শব্দ করা, যা সাধারণ কথার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। (হোক সেটা এক অক্ষর বা দুই অক্ষরে ঘটিত) তাহলে নামাজ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী ১/৬১৩, আল বাহরুর রায়েক : ২/২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
মুআবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস সুলামি (রা.) নওমুসলিম অবস্থায় নামাজে কথা বললে রাসুল (সা.) নামাজের পর তাঁকে বলেন, ‘নামাজের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশত তাসবিহ, তাকবির বা কোরআন পাঠ করতে হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩৭)
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত শব্দ অর্থবোধক শব্দ না হলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...