আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
233 views
in সালাত(Prayer) by (115 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারাকাতুহ।
১/মেয়েরা চাইলে ঈদের নামায ঘরে একা পড়তে পারবে?যদি ঘরে পড়েও মাকরূহ হবে?

২/ঈদের নামাযের নিয়ম

৩/মাথা নিচু না করে পা ধরে সালাম করা যাবে?শুধুমাত্র বুজুর্গরা যাতে কষ্ট না পায়?(অন্য কোনো উদ্দেশ্য না)

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান মতে  ঈদের নামাজ মহিলাদের উপর ওয়াজিব নয় । 
তারা বাসাতেও এ নামাজ পড়বেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ   
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে মহিলাদের উপরেও এ নামাজ ওয়াজিব,তাই তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।            

(০২)
যাদের উপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব,তারা নিম্নের পদ্ধতি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করবে।
ঈদের নামাজ আদায় পদ্ধতি
১।      প্রথমত, স্বাভাবিক নামাজের মতোই তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধতে হবে। তারপর ছানা পাঠ করতে হবে।
২।     তারপর অতিরিক্ত তিনটি তাকবির বলবে। প্রথম দুই তাকবিরে হাত তুলে ছেড়ে দিবে এবং তৃতীয় তাকবিরে হাত বেঁধে ফেলবে।
৩।     তারপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর ইমাম সুরা ফাতিহা পড়ে এর সঙ্গে অন্য একটি সুরা মিলাবে।
৪।      তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই রুকু-সিজদা করে প্রথম রাকাত শেষ করবে।

৫।     দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম কিরাত পড়া শেষে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিবে। প্রতি তাকবিরের সঙ্গে হাত উঠাবেন এবং ছেড়ে দিবে। তারপর চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে চলে যাবে।
৬।     তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই নামাজ শেষ করবে।
৭।      নামাজ শেষে ইমাম মিম্বারে উঠবেন। দুটি খুতবা দেবেন। এ সময় ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে। কোনো ধরনের কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া যাবে না।
৮।     খুতবা শেষে সবাই ঈদগাহ ত্যাগ করবে।

(০৩)
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 52492
 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে
 ইলম এবং বুযুর্গীর কারনে হাত পায়ে চুমো দেওয়া জায়েজ আছে,তবে সেজদার ছুরত হয়ে গেলে তাহা নাজায়েজ। 
সতর্কতা মূলক তাদেরও কদমবুচি না করা উচিত। 

أن عبد اللہ بن عمر، حدثہ وذکر، قصة قال: فدنونا یعنی من النبی صلی اللہ علیہ وسلم فقبلنا یدہ (سنن أبي داوٴد ح ۵۲۲۳)
সারমর্মঃ উল্লেখিত হাদীসে রাসুল সাঃ এর হাত চুমো দেওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে।   

 زارع وکان فی وفد عبد القیس قال: لما قدمنا المدینة فجعلنا نتبادر من رواحلنا، فنقبل ید النبی صلی اللہ علیہ وسلم ورجلہ (سنن أبي داوٴد ؛ ۵۲۲۰)
সারমর্মঃ কায়েস গোত্রের দল যখন রাসুল সাঃ এর কাছে আসলেন,তখন রাসুল সাঃ এর হাত পা চুমো খেলেন।   

আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থে এসেছেঃ
  
975 – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: حَدَّثَنَا مَطَرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْنَقُ قَالَ: حَدَّثَتْنِي امْرَأَةٌ مِنْ صَبَاحِ عَبْدِ الْقَيْسِ يُقَالُ لَهَا: أُمُّ أَبَانَ ابْنَةُ الْوَازِعِ، عَنْ جَدِّهَا، أَنَّ جَدَّهَا الْزَّارِعَ بْنَ عَامِرٍ قَالَ: قَدِمْنَا فَقِيلَ: ذَاكَ رَسُولُ اللَّهِ، فَأَخَذْنَا بِيَدَيْهِ وَرِجْلَيْهِ نُقَبِّلُهَا

[قال الشيخ الألباني] :  ضعيف الإسناد

ইমাম বুখারী রহঃ এর কাছে মুসা বিন ইসমাঈল বলেন, তার কাছে মাতার বিন আব্দুর রহমান আলআনাক বলেছেন, তার কাছে উম্মে আবান বলেছেন, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন, তার দাদা ওয়াযি বিন আমির বলেন, আমি একদা রাসূল সাঃ এর খেদমতে গিয়া হাজির হলাম। আমাকে বলা হল ইনিই হচ্ছেন আল্লাহর রাসূল। আমরা তখন তাঁর হস্তদয় ও পদদ্বয় ধরিয়া চুমু খেলাম। {আলআদাবুল মুফরাদ, ইসলামী ফাউন্ডেশন অনুবাদের হাদীস নং-৯৮৭, আরবী কিতাবের হাদীস নং-৯৭৫}

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি মাথা নিচু না করে কদমবুচি তথা পায়ে চুম্বন (হাত দিয়ে পা স্পর্শ করে হাত চুম্বন) করা হয়,তাহলে তাহা নাজায়েজ নয়।
,

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,   
পায়ে ধরা সালাম,কদমবুচি সংক্রান্ত মাসআলাটি নিয়ে বিজ্ঞ ফুক্বাহায়ে কেরাম এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে।

একদল বলেছেন সম্মানার্থে জায়েজ আছে পদচুম্বন করা। কিন্তু তারা সাথে সাথে এ শর্তারোপ করেছেন যে, যেন চুমু খেতে গিয়ে রুকুর সূরত বা সেজদার সূরত না হয়ে যায়। যদি রুকু বা সেজদার সূরত হয়ে যায়, তাহলে তা জায়েজ হবে না। {আলমুজতাবা-৪/২০৫, আলমুহীতুল বুরহানী-৮/১১৮, ফাতাওয়া আলমগীরী-৫/৩৬৯}

আরেক দল ফক্বীহ ও মুহাক্কিকীনদের মতে তা জায়েজ নয়। কারণ বর্তমান প্রচলিত কদমবুচিতে রুকুর হালাত এবং সেজদার হালাত হওয়া স্পষ্ট। সেই সাথে এটি বিধর্মীদের প্রতীক। তাই তা হারাম।

আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছি। কারণ কদমবুচি করা এ উপমহাদেশে মৌলিকভাবে হিন্দুদের রুসুম। আর কদমবুচি করতে গিয়ে রুকু বা সেজদার হালাত তৈরী হয়েই যায়। আর যারাও কদমবুচিকে জায়েজ বলেছেন তাদের মতেও রুকু সেজদার হালাত হয়ে গেলে কদমবুচি করা জায়েজ নয়।

উপরোক্ত কারনে বর্তমান প্রচলিত কদমবুচিকে নাজায়েজ বলা হয়।

★সুতরাং সতর্কতামূলক প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আমরা বলবো যে কদমবুচি করা যাবেনা।   

পায়ে ধরে সালাম করা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 161 views
...