আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
283 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (66 points)
১। ওজু করার সময় বা কুলি করতে গেলে মনে হচ্ছে গলায় পানি ঢুকে গেল কিন্তু নিশ্চিত হতে পারছি না। এমতাবস্থায় রোজা হওয়া না হওয়া নিয়ে বিধান কি?

২। শিক্ষক attendance নিচ্ছিলেন, এমন সময় যোহরের আজান পড়ল। যে ছাত্রের রোল ডাকলেন, সে কনফিউজড হল উত্তর দিবে কিনা এ সময়। এরপর কেউ তাকে বলল দেওয়া যায় উত্তর আবার কেউ বলল আজানের সময় কথা না বলতে। তার এক বন্ধু ক্লাসের সবার সামনেই বলল যে তোরা ইসলামের প্রচারে বাধা দিচ্ছিস কেন? এতে শিক্ষক কিছুটা বিব্রত হয়ে বললেন যে এত বিতর্কিত কথা বল কেন? এ ক্ষেত্রে কি দ্বিতীয় ছাত্র সঠিক পথে আছে? আর শিক্ষক যে উত্তর দিলেন তার জন্য কি তিনি গুনাহের ভাগীদার হবেন?
৩। বাংলাদেশে ঈদ এলেই ছোটরা বড়দের সালাম করে ও তদবিনিময়ে টাকা নেয়। এটা হালাল কি না জানি না। আর যদি সালাম না করে আর বড় কেউ এমনি গিফট বা সালামির নাম করে টাকা দিয়ে বলে পছন্দমত কিছু কেনাকাটা করতে মানে টাকা গিফট দিল আরকি, সে ব্যাপারে শরীয়ত কি বলে? এরকম গিফটের নিয়তে সালামি দেওয়া কি জায়েজ আছে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
রোযা রাখা অবস্থায় অযু গোসলের সময় গড়গড়িয়ে কুলি করা যাবেনা।
নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌছানো যাবেনা। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
লাকিত ইবনে সাবিরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
بالغ في الاستنشاق، إلا أن تكون صائما.

 ‘(অযু-গোসলের সময়) ভালোভাবে নাকে পানি দাও তবে রোযা অবস্থায় নয়।’-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৩৬৩ সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৭৮৫

সুফিয়ান সাওরী রাহ. বলেন, ‘রোযা অবস্থায় কুলি করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে এবং তা কাযা করতে হবে।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৩৮০
আরো দেখুন : মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৮৪৪-৯৮৪৭; ফাতাওয়া শামী ২/৪০১

আরো জানুনঃ 
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনি নিশ্চিত নয় যে যে গলার ভিতর পানি গিয়েছে কিনা?
তাই এহেন ছুরতে সারাদিন রোযা অবস্থাতেই থাকবেন।
পরবর্তীতে সতর্কতামূলক একটি রোযা কাজা আদায় করবেন।
,
(০২)
আযান শুরু হলে তার জবাব দেওয়া মুস্তাহাব।
চুপ থাকা সুন্নাত।
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি উক্ত ছাত্র আযানের জবাব না দিয়ে থাকে,তাহলে সে রোল ডাকার ক্ষেত্রে উত্তর দিতে পারবেন।
তবে সুন্নাতের খেলাফ হবে।
এক্ষেত্রে চুপ থাকা সুন্নাত।

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০৩) 
ঈদ সালামি যদি চাপ প্রয়োগ করে না নেওয়া হয়,বরং সন্তুষ্টি চিত্তেই দেওয়া হয়,তাহলে তাহা দেওয়া ও গ্রহন করা জায়েজ আছে।  

আরো জানুনঃ  

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত গিফট দেওয়া নেওয়া জায়েজ আছে।  


★ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ

সেলামি/সেলামী (বিশেষ্য পদ)। শাব্দিক অর্থ: নজরানা, উপঢৌকন; জমিদার, বাড়ীওয়ালা ইত্যাদিকে উপহারস্বরূপ দেয় টাকা। (English & Bengali Online
Dictionary & Grammar)
আর ‘ঈদ সেলামি’ বলতে বুঝায়, ঈদ উপলক্ষে বড়দের পক্ষ থেকে ছোটদেরকে উপহার, উপঢৌকন-বিশেষ করে উপহারস্বরূপ দেয় টাকা।

ইসলামের দৃষ্টিতে এতে কোনও আপত্তি নেই। এটি একটি সুস্থ ও সুন্দর সামাজিক রীতি এবং চারিত্রিক সৌন্দর্য। কেননা এতে ছোটদের প্রতি স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ঈদ সেলামি পেলে ছোটরা আনন্দিত হয়। এতে তাদের ঈদের উৎসব আরও বেড়ে যায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষকে খুশি করা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ইসলামে উপহার লেনদেন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এতে পারস্পারিক ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয়। বিশেষ করে ছোটরা বড়দের স্নেহ-মমতা ও ভালবাসা পাওয়ার বেশি হকদার।

তবে ঈদ সেলামি দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা দরকার। যথা:
আমাদের দেশে ঈদ সেলামি পাওয়ার জন্য ছোটরা বড়দের পা ছুয়ে সালাম করে। এটি সম্পূর্ণ অনৈসলামিক কালচার। এর সম্প্রসারণ রোধ করা জরুরি। কেউ এমনটি করলে তাকে নিষেধ করতে হবে।

 সেলামি দেয়ার ক্ষেত্রে ছোট ভাই, বোন ও সন্তানদের কাউকে দেয়া দেওয়া হবে আর কাউকে বঞ্চিত করা হবে-এমনটি যেন না হয়। কেননা এতে পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সবাইকে সমানভাবে উপহার দেয়া জরুরি নয় বরং বয়স ও অবস্থা অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে। যেমন: বড়কে বেশি আর ছোটকে কম, বিবাহিতকে এক রকম অবিবাহিতকে অন্য রকম। এতে কোন আপত্তি নাই।

তারা কীভাবে তা খরচ করছে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরি। কেননা অনেক সময় বাচ্চারা হাতে টাকা পেয়ে নানা আজেবাজে ও অনর্থক কাজে ব্যয় করে। অনেকে বিভিন্ন গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়। তাই অভিভাবকদের এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখা জরুরি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...