আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
415 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (72 points)
আসসালামু আলাইকুম,
বাংলাদেশে পেপাল (PayPal) ব্যবহার করা কি জায়েজ আছে?
সরকারী ভাবে এর অনুমুতি আছে কি না জানি না । হয়তো পেপাল কর্তিপক্ষ বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আসে নি । কিন্ত
আমি শুনেছিলাম ২০১৯ সালের দিকে নাকি পেপালেরই আরেকটা প্রোডাক্ট "জুম" বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে ।

প্রশ্ন-১: এখন অন্যদেশের তথ্য দিয়ে পেপাল ব্যবহার করা কি জায়েজ ? নাম, মোবাইল নাম্বার বাংলাদেশী শুধু দেশের যায়গায়
Cyprus. এটা কি হালাল হবে ? (বিঃ দ্রঃ পেপালটা কোনো MasterCard বা NID দিয়ে ভেরিফাইড করা হয় নি ।
তাই এই সবের মিথ্যা তথ্য দিতে হয় নি । ভেরিফাই ছাড়াই লেনদেন করা যাচ্চে)

প্রশ্ন-২:  আর না হলেই বা এর উপায় কি ?
প্রশ্ন-৩: যদি হালাল না হয় তাহলে পেপাল দিয়ে যত লেনদেন করা হয়েছে সব টাকাই কি হারাম হয়ে যাবে?

প্রশ্ন-৪: আর হারাম হয়ে গেলে করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


পেপ্যাল একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যারা অর্থের স্থানান্তর বা হাতবদল ইন্টারনেটের মাধ্যমে করার ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে থাকে। অনলাইন স্থানান্তরের এই পদ্ধতি গতানুগতিক অর্থের লেনদেনের পদ্ধতি যেমন চেক বা মানি অর্ডারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

একটি পেপ্যালের একাউন্ট খোলার জন্য কোন ব্যাঙ্ক একাউন্টের ইলেকট্রনিক ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন পড়ে। পেপ্যালের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে গৃহীতা পেপ্যাল কর্তৃপক্ষের নিকট চেকের জন্য আবেদন করতে পারে, অথবা নিজের পেপ্যাল একাউন্টের মাধ্যমে খরচ করতে পারে অথবা তার পেপ্যাল একাউন্টের সাথে সংযুক্ত ব্যাঙ্ক একাউন্টে জমা করতে পারে।
,
পেপ্যাল অনলাইন বিক্রেতাদের জন্য অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে, এছাড়াও অনলাইন, নিলামের ওয়বসাইট, ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট পেপ্যালের সেবা গ্রহণ করে যার জন্য পেপ্যাল ফী বা খরচ নিয়ে থাকে। এছাড়াও অর্থ গ্রহণের জন্যেও ফী নিয়ে থাকে যা মোট গৃহীত অর্থের সমানুপাতিক হয়ে থাকে। এই ফী বা খরচ নির্ভর করে কোন দেশের মূদ্রা ব্যবহার হচ্ছে, কিভাবে অর্থের লেনদেন হচ্ছে প্রেরক ও প্রাপকের দেশ, পাঠানো অর্থের পরিমাণ ও প্রাপকের একাউন্টের ধরনের ওপরে।

এছাড়াও, ইবে ওয়েবসাইট থেকে পেপ্যালের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে পেপ্যাল আলাদা অর্থ গ্রহণ করতে পারে যদি ক্রেতা ও বিক্রেতা ভিন্ন মূদ্রা ব্যবহার করে।
(উইকিপিডিয়া)  

যেহেতু পেপালের কান্ট্রি লিস্টে বাংলাদেশ নেই, তাই পেপাল একাউন্ট করার সময় একেকজন একেক দেশের ঠিকানা দিয়ে রেজিস্টার করে। তার মধ্যে সাইপ্রাস এবং আমেরিকার ফেইক প্রোফাইলই  অনেকে ব্যবহার করে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
মুসলিম সরকার জনগনের উপকারার্থে যে আইন করে, তা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম না হলে তা মানা সে দেশের নাগরিকের জন্য আবশ্যক।

আল্লাহ তা'আলা সরকার প্রধানের বৈধ বিধি-নিষেধের আনুগত্য সম্পর্কে বলেন-

{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الأمْرِ مِنْكُمْ}

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা সরকার/বিচারক তাদের।
সূরা নিসা-৫৯

আল্লাম ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,

: (ما يَضْرِبُه السلطانُ على الرعية مصلحةً لهم يصير دَيْنًا واجبًا وحقًّا مُستحقًّا كالخراج، وقال مشايخنا: وكل ما يضربه الإمام عليهم لمصلحة لهم فالجواب هكذا).
ভাবার্থঃ

প্রজাদের কল্যাণে তাদের উপর বাদশা/সরকার যে কর আরোপ করে তা ওয়াজিব ঋণের মত(আদায় করা ওয়াজিব),এবং(ইসলামের একটি সু-নির্দিষ্ট বিধান) খারাজের মত।(আদায় করা ওয়াজিব)

আয়কর প্রজাদের উপর সরকারের প্রাপ্য বা হক্ব।আমাদের মাশায়েখ উলামায়ে কেরাম বলেন, প্রজাদের কল্যাণ কামনায় প্রজাদের উপর সরকার কর্তৃক যে কোনো প্রকারেরই 'কর' আরোপিত হোক না কেন, তার বিধান একই(তথা আদায় করা ওয়াজিব)।
রদ্দুল মহতার-২/৫৭

আরো জানুনঃ 
,
যদি Paypal কর্তৃপক্ষ কয়েকটি দেশকে নির্দিষ্ট করে দেয়,তাহলে এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশের বাহিরের কারো জন্য এটি ব্যবহার করে সুবিধাদি গ্রহণ করা জায়েয হবে না।

হ্যাঁ যদি ঐ সমস্ত এ্যাপ উক্ত অপারেটর কম্পানি বা সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম ও অনুমতি সাপেক্ষ্যে অন্যান্যদের জন্যেও ভিন্ন দেশের নাম দিয়ে আইডি খোলার অনুমতি দিয়ে থাকে,তাহলে সে সুবিধা গ্রহণ করে অন্য দেশের নাম দেওয়া জায়েয হবে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


(০১)
অন্যদেশের তথ্য দিয়ে পেপাল ব্যবহার করা  জায়েজ নেই।

(০২)
কর্তৃপক্ষের সাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বাংলাদেশের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।
অন্যথায় তাদের অনুমতি নিয়ে সাময়ীক ভাবে প্রয়োজনে চালানোর অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।
,
(৩.৪)        
যেসন টাকা লেনদেন করা হয়েছে,হচ্ছে,হবে এগুলো হারাম নয়।
এগুলো হালালই থাকবে।
শুধু পাঠানোর এই প্রক্রিয়া টি নাজায়েজ হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...