আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
569 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
এক সাথীর প্রশ্ন।

এক ভাই ও বোনের রিলেশন ছিল। বলা বাহুল্য দুজনেই নামাজ কালআম পড়লেও হয়ত এই বিষয়ে গাফেল ছিল। মেয়ের বাবা-মার বনিবনা ছিলনা। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কিছুদিন পর মেয়ের মা নিজের স্বার্থ রক্ষার্থে পরিবারের সকলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেন। বিয়েতে মেয়ের বাবা ছিলেন না। এইদিকে ওই বিয়ের আগে, যেই ছেলের সঙ্গে রিলেশন ছিল তিনি তার নিজ পরিবারকে অনেক বুঝায় মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব দিতে। কিন্তু তার পরিবার সহায়তা করেনি। কারণ ছেলে ইনকাম করে না তাই। জোর পুর্বক বিয়ের পর মেয়ের সাথে মেয়ের হাসবেন্ডের বনিবনা হতনা। একবছরের মাথায় ডিভোর্স হয়। এবং মেয়েটি পুর্বের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এবং জানতে চায় যে ছেলেটি তাকে এখন বিয়ে করবে কিনা। ছেলেটি এবার বলে যে ছেলেটির নিজ পরিবারের সাথে যেন মেয়ে কথা বলে। কিন্তু এবারও ছেলের পরিবার রাজি হননাই। অবশেষে ছেলেটি মেয়েটিকে ইদ্দত পালন করতে বলল। এবার মেয়ের পরিবার তাদের রিলেশনের ব্যাপারে জানত। কিন্তু তারা ছেলেকে অপেক্ষা করতে বলে পুনরায় তারা পাত্র দেখা শুরু করল। এই অবস্থায় ৫-৬ মাস পর ইদ্দত পালন শেষে ছেলে-মেয়ে দুজনের পরিবারকে না জানিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম সাক্ষী রেখে বিয়ে করল। এবং বিয়ের পরক্ষনেই মেয়েটি মেয়ের পরিবারকে জানালো। তারা একটু রাগ করলেও কয়েক ঘন্টা পর মেনে নিল সব৷ এরপর ছেলে ছেলের বাড়িতে মেয়ে মেয়ের বাড়িতে থাকত। মাঝে মাঝে মেয়ের বাড়িতে যেত। এদিকে এক বছরে মাথায় প্রেগন্যান্ট হলে তারা এবরশন করায় এক মাসের মাথায়। ছেলে বেকার তাই ডিপ্রেশনে ভুগা শুরু করল। এরপর তারা দ্বীন চর্চায় মন দিতে লাগল। দীর্ঘ ২-৩ বছর পর ছেলের পরিবারে জানাজানি হল। তারা রাগারাগি করল। এদিকে ছেলে মেয়ে আরও বেশি দ্বীন পালন শুরু করল আর নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগল। অবশেষে ছেলের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হওয়া শুরু করল। আর এইদিকে ছেলের পরিবারও মেনে নিল ৪ বছর পর। এখন মেয়েকে উঠিয়ে আনতে চাচ্ছে।
প্রশ্ন ১. যেহেতু ওলি ছাড়া বিয়ে বাতিল। আর বিয়ের সময় তারা জানতও না ইমাম আবু হানিফা কি মত দিয়েছেন বা সহীহ হাদীস কি বলছে। কিন্তু এখন তারা এসব স্টাডি করায় জানতে চায় তাদের পুনরায় বিয়ের প্রয়োজন আছে কিনা?

প্রশ্ন ২ঃ অতীতের এবরশনের ব্যাপারে তারা অনুতপ্ত। এ ব্যাপারে তাদের করনীয় কি?

প্রশ্ন ৩ঃ তারা চায় তাদের পরিবারকে আর ভবিষ্যত সন্তানদের শরিয়াহ আইন অনুযায়ী চালনা করতে। কিন্তু মেয়ে বা ছেকের পরিবার নামে মুসলিম হলেও তারা ইসলামের সকল বিষয় মেনে নিতে হয়ত কষ্ট বোধ করে। যেমন গায়েরে মাহরামের সাথে না মিশলে সেটা নেগেটিভলি নেয় ইত্যদি। এমতাবস্থায় করনীয় কি?

প্রশ্ন ৪ঃ বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে কি? ছেলের ইচ্ছা যদি অনুষ্ঠান করা যায় কিন্তু যদি ইসলামি নিয়মে সেটি না হয় তবে অনুষ্ঠনই করবে না। কিন্তু মেয়ের পরিবার ও ছেলের পরিবার অনুষ্ঠানেএ পক্ষপাতি। এমতাবস্থায় করনীয়?

প্রশ্ন ৫ঃ মেয়ের মা-বাবার ডিভোর্সের পর মেয়ের মা আরেকটি বিয়ে করে। সেই লোক তাদের খরচ দেয়। এবং মাঝে মাঝেই তাদের বাড়িতে আসে। প্রশ্ন হল সেই সৎ বাবা কি মেয়ের গায়েরে মাহরাম? তার সামনে কি পর্দা করতে হবে? নাকি নিজ বাবার মত তার সামনে যেতে পারবে?

অনেক গুলো প্রশ্ন করে ফেললাম। এত বড় প্রশ্নর জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। দয়া করে নতুন ভাবে দ্বীন চর্চাকারী  ভাই বোনদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের দ্বীনের পথকে সহজ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (709,320 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1524

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মাতাপিতাকে বিয়ের জরুরত বুঝাবে।মাতাপিতার পরামর্শে বিয়ে করবে।এক্ষেত্রে দ্বীনদারিত্বকে প্রদাণ্য দেয়াই দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি অর্জনের উত্তম মাধ্যম হবে।হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/18

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
হানাফি ফিকহ অনুযায়ী অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। তবে শর্ত হল,দুজন পুরুষ সাক্ষী বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষী তাতে উপস্থিত থাকতে হবে। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
(১) বিয়ে হয়ে গেছে, আর নতুন করে বিয়ে করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। 

(২)তাদেরকে তাওবাহ করত হবে। 

(৩) ধর্য্যর সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে। 

(৪) বিয়ের প্রচলিত অনুষ্টান করা শরীয়ত অনুমোদন দেয় না।

(৫) মায়ের স্বামী উক্ত মেয়ের মাহরাম। তাই মাহরামের সমানে যেভাবে পর্দা করতে হয়, তার সাথেও সেভাবে পর্দা করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...