ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
জোহরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পরই মূলত আসরের ওয়াক্ত শুরু হয়।জোহরের ওয়াক্ত কখন শেষ হবে? এবং আসরের সূচনা কখন হবে? এ নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।ইমাম শা'ফেয়ী রাহ,ইমাম মালিক রাহ,ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ সহ ইমাম আবু ইউসুফ রাহ ও ইমাম মুহাম্মাদ রাহ এর মতে ছায়ায়ে আসলি ব্যতীত এক মিছিল পরিমাণ প্রত্যেক জিনিষের ছায়া হওয়ার পর জোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়,এবং আসরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।ইমাম আবু-হানিফা রাহ থেকেও এক অভিমত রয়েছে।
ইমাম আবু হানিফা রাহ থেকে প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী দুই মিছিলের পর জোহরের ওয়াক্ত শেষ হবে এবং আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে।হানাফি মাযহাবে উভয় মাযহাবের উপর ফাতাওয়া রয়েছে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/705
আসরের সালাত দুই মিছিলের পর না এক মিছিলের পর এ নিয়ে উলামায়ে আহনাফদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে,এবং দুই অভিমতের উপর-ই ফাতাওয়া রয়েছে, তবে ইবনে আবেদিন শামী সহ অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম মনে করেন দুই মিছিলের পর-ই সুন্নাহ সম্মত ও উত্তম ।
এ সম্পর্কে উম্মে সালামাহ রাঃ থেকে বর্ণিত আছে
161 عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشَدَّ تَعْجِيلًا لِلظُّهْرِ مِنْكُمْ، وَأَنْتُمْ أَشَدُّ تَعْجِيلًا لِلْعَصْرِ مِنْهُ»: وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الحَدِيثُ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ نَحْوَهُ،
[حكم الألباني] :)صحيح (
ترمذي
উম্মে সালামাহ রাঃ বলেনঃনবী কারীম সাঃসর্বদাই জোহরের নামায তারাতারি পড়তেন(এবং আসর দেরীতে দুই মিছিলের পর পড়তেন) অথচ তোমরা আসরের নামায তারাতারি পড়ে নাও।
আসরের নামায দুই মিছলের(আসল ছায়া ব্যতীত প্রতিটা জিনিষের দিগুন ছায়া) পর উত্তম নিম্নোক্ত হাদীসের দিকে তাকালে সেটা অনায়াসে বুঝা যায়।
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ :
( ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺑَﻘَﺎﺀُﻛُﻢ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺳَﻠَﻒَ ﻗَﺒﻠَﻜُﻢ ﻣِﻦَ ﺍﻷُﻣَﻢِ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﻴﻦَ ﺻَﻼﺓِ ﺍﻟﻌَﺼْﺮِ ﺇِﻟَﻰ ﻏُﺮُﻭﺏِ ﺍﻟﺸَّﻤﺲِ ، ﺃُﻭﺗِﻲَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻟﺘَّﻮﺭَﺍﺓِ ﺍﻟﺘَّﻮﺭَﺍﺓَ ﻓَﻌَﻤِﻠُﻮﺍ ، ﺣَﺘّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺍﻧﺘَﺼَﻒَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ ﻋَﺠَﺰُﻭﺍ ، ﻓَﺄُﻋﻄُﻮﺍ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻭﺗِﻲَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻹِﻧﺠِﻴﻞِ ﺍﻹِﻧﺠِﻴﻞَ ﻓَﻌَﻤِﻠُﻮﺍ ﺇِﻟَﻰ ﺻَﻼﺓِ ﺍﻟﻌَﺼﺮِ ﺛُﻢَّ ﻋَﺠَﺰُﻭﺍ ، ﻓَﺄُﻋﻄُﻮﺍ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻭﺗِﻴﻨَﺎ ﺍﻟﻘُﺮﺁﻥَ ﻓَﻌَﻤِﻠﻨَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻏُﺮُﻭﺏِ ﺍﻟﺸَّﻤﺲِ ، ﻓَﺄُﻋﻄِﻴﻨَﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻟﻜِﺘَﺎﺑَﻴﻦِ : ﺃَﻱْ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ! ﺃَﻋﻄَﻴﺖَ ﻫَﺆُﻻﺀِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ، ﻭَﺃَﻋﻄَﻴﺘَﻨَﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﻭَﻧَﺤﻦُ ﻛُﻨَّﺎ ﺃَﻛﺜَﺮَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ : ﻫَﻞ ﻇَﻠَﻤﺘُﻜُﻢ ﻣِﻦ ﺃَﺟﺮِﻛُﻢ ﻣِﻦ ﺷَﻲْﺀٍ ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻻ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻬُﻮَ ﻓَﻀﻠِﻲ ﺃُﻭﺗِﻴﻪِ ﻣَﻦ ﺃَﺷَﺎﺀُ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 557 ) .
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ একবার বললেনঃ পুর্বেকার উম্মাতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হল আসর থেকে নিয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের অনুরূপ।
"তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেওয়া হয়েছিল,তারা তদনুসারে কাজ করতে লাগল; যখন দুপুর হল, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়ল, তাদের এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়।
''তারপর ইনজীল অনুসারীদেরকে ইনজীল দেওয়া হল, তারা আসরের সালাত (নামায/নামাজ) পর্যন্ত কাজ করে অপারগ হয়ে পড়ল, তাদেরকে এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক দেওয়া হল।
"তারপর আমাদেরকে কুরাআন দেওয়া হল,আমরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম, আমদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দেওয়া হল।
এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দান করেছেন, আর আমাদেরকে দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশী। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনরূপ যুলুম করেছি? তারা বলল, না। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বললেনঃ এ হল, আমার অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেই।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যে মাযহাবকে ফলো করেন, সকল মাসআলায় ঐ মাযহাবকে ফলো করবেন। নিজের লাভ দেখে কোনো মাযহাবকে গ্রহণ করতে পারবেন না।
(২) সর্তকতা অবলম্বনের জন্য একটু বিলম্ব করলে সমস্যা হবে না।