বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ : " أَنَّهُ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَنَتَوَضَّأُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ وَهِيَ بِئْرٌ يُطْرَحُ فِيهَا الْحِيَضُ وَلَحْمُ الْكِلَابِ وَالنَّتْنُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْمَاءُ طَهُورٌ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ " .
একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আমরা কি (মদীনার) ‘বুযাআহ’ নামক কূপের পানি দিয়ে অযু করতে পারি? কূপটির মধ্যে মেয়েলোকের হায়িযের নেকড়া, কুকুরের গোশত ও যাবতীয় দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস নিক্ষেপ করা হত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পানি পবিত্র, কোন কিছু একে অপবিত্র করতে পারে না।(সুনানু আবি-দাউদ-৬৬)
হযরত আবু উমামা বাহিলি রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الْمَاءَ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ، إِلَّا مَا غَلَبَ عَلَى رِيحِهِ وَطَعْمِهِ وَلَوْنِهِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,পানি মূলত পবিত্র।তাকে কোনো জিনিষ নাপাক করতে পারে না।তবে পানির গন্ধ, স্বাদ ও রং পরিবর্তন হয়ে গেলে সে পানি জায়েয হবে না।(সুনানু ইবনি মা'জা-৫২১)
পবিত্রতা অর্জনের দিক থেকে পানি পাঁচ প্রকার :
(১) তাহির মুতাহহির গায়রে মাকরুহ : যে পানি নিজে পবিত্র ও অন্য বস্তুকেও পবিত্র করে এবং এর দ্বারা অজু ও গোসল করা মাকরুহ নয়। যেমন—বৃষ্টি, নদী, সাগর, পুকুর, নালা, ঝরনা, কূপ, টিউবওয়েল, শিশির ও বরফ ইত্যাদির পানি। এ পানিকে ‘মুতলাক পানি’ বলা হয়।
(২) তাহির মুতাহহির মাকরুহ : যে পানি নিজে পবিত্র এবং অন্য বস্তুকেও পবিত্র করে। তবে মুতলাক পানি থাকা অবস্থায় তা দ্বারা অজু-গোসল করা মাকরুহে তানজিহি। যেমন—পালিত বিড়াল, ছাড়া মুরগি, ইঁদুর, পাখি বা এমন কোনো প্রাণীর মুখ দেওয়া পানি, যার উচ্ছিষ্ট মাকরুহ।
(৩) তাহির গায়রে মুতাহহির : যে পানি নিজে পবিত্র, তবে অন্য বস্তুকে পবিত্র করে না। এ পানি দ্বারা অজু ও গোসল জায়েজ নয়। যেমন—অজু-গোসলের জন্য ব্যবহৃত পানি, যা নাপাকি দূর করার জন্য বা আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও সওয়াব অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এমন পানি শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা নাপাক হবে না।
(৪) নাপাক পানি : এমন প্রবহমান পানি, যাতে নাপাকি পড়ার কারণে পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদ পরিবর্তন হয়ে গেছে। অথবা আবদ্ধ অনেক পানি, যাতে নাপাকি পড়ার কারণে সব দিকের পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদ বদলে গেছে। অথবা আবদ্ধ অল্প পানি, যাতে নাপাকি পতিত হয়েছে। এসব পানি দিয়ে অজু ও গোসল জায়েজ হবে না। কোনো নাপাক বস্তুও পবিত্র করা যাবে না।
(৫) মাশকুক পানি : যে পানি দিয়ে অজু ও গোসল জায়েজ হওয়া বা না হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ থাকে। যেমন—গাধা বা খচ্চরের মুখ দেওয়া পানি। এ পানি দিয়ে অজু করার পর তায়াম্মুম করতে হবে। (তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ : ১৬-১৭)
যদি পানির সঙ্গে কোনো পবিত্র জিনিস মেশার ফলে পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদ বদলে যায়। যেমন—স্রোতের পানির সঙ্গে বালু মিশে গেল, অথবা জাফরান বা সাবান পড়ে পানিতে তার কিছুটা রং এসে গেল, এ অবস্থায় পানি পবিত্র থাকবে এবং তরল থাকার শর্তে তা দিয়ে অজু ও গোসল জায়েজ হবে। (হিদায়া : ১/৩৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বালতির পানিতে সামান্য নাজাসত যেমন প্রস্রাবের ছিটা পড়লে ঐ পানি নাপাক হয়ে যাবে।সুচের আগা পরিমাণ পড়লেও নাপাক হয়ে যাবে।