বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ
বালিগ হওয়ার পর সামর্থ্যবানদের উপর যথাসম্ভব তারাতারি বিয়ে করে ফেলাই মূলত সুন্নাহ এবং শরীয়তের চাহিদা ।বিশেষ করে যুবকদের ব্যাপারে বিষয়টা অবশ্যম্ভাবী। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
(يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنْ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ)
হে যুবকদের দল! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থবান,তারা যেন বিয়ে করে নেয়।কেননা বিয়ে চক্ষুকে নিচু রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে।আর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই তারা যেন রোযা রাখে।কেননা রোযা ঢাল স্বরূপ।(সহীহ বোখারী-১৯০৫,সহীহ মুসলিম-১৪০০)
ইলম অর্জনের জন্য কি আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবো? এমন প্রশ্নের জবাবে সৌদি ফাতাওয়া কমাটির সিদ্ধান্ত হলো,
"الزواج من سنة النبي صلى الله عليه وسلم ، وبه يكمل المرء دينه ، حيث يغض بصره ويحفظ فرجه ، فلا ينبغي لك أن تطلق زوجتك ، والزواج لا يمنعك من طلب العلم إذا وجد منك قوة العزيمة" انتهى .
বিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ।এর দ্বারাই মানুষ তার দ্বীনকে পূর্ণ করে।এভাবে যে,বিয়ে নিজ চক্ষুকে নিচু রাখে,লজ্জাস্থানকে হেফাজতে রাখে।সুতরাং ইলম অর্জনের জন্য স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কোনো প্রয়োজন নাই।যখন আপনার ইলম অর্জনের পূর্ণ নিয়ত থাকবে,তখন বিয়ে-শাদী আপনার ইলম অর্জনের জন্য বাধা হয়ে দাড়াবে না।(ফাতাওয়ায়ে লাজনাতুদ- দায়িমাহ-৫/২০)
একজন ছাত্র সে বিয়ে করতে চায়,তবে তার আশংকা হলো,বিয়ে পরবর্তী তার লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটবে?এখন তার করণীয় কি?এমন প্রশ্নের জবাবে ইবনে উছাইমিন রাহ বলেন,
"الزواج لا يعوق عن طلب العلم ، بل ربما يعين على طلب العلم ؛ قد يوفق الإنسان لامرأة تقرأ وتكتب وتساعده ، فإن لم تكن فأقل ما يكون أن يذهب عنه الوساوس والتفكير في الزواج ، فالزواج يعين على طلب العلم" انتهى
বিবাহ জ্ঞান অন্বেষণকে বাধা দেয় না।বরং অধিকাংশ সময় বিয়ে-শাদী জ্ঞানার্জনের পথকে আরো মসৃণ করে।কেননা স্বামী-স্ত্রী লেখাপড়ার বিষয়ে একে অন্যকে সাহায্য করতে পারবে।সর্বনিম্ন সাহায্য হল এটাই যে,বিয়ে এবং বিপরিত লিঙ্গের চিন্তাভাবনা ও পেরেশানি থেকে নিজ অন্তরকে হোফাজত রাখা যাবে। সুতরাং বিয়ে জ্ঞানার্জনের পথকে আরো সহজ করে দিবে, তবে বাধা দিবে না।(লিক্বাউল বাবিল মাফতুহ-১৮/৪৮)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যতটুকু ইলম না শিখলে দ্বীনের উপর চলা যাবে না,ততটুকু ইলম অর্জন করা ফরয।এর অতিরিক্ত ইলম অর্জন করা ফরযে কেফায়া।যাকে অন্য অর্থে মুস্তাহাবও বলা হয়ে থাকে।যাই হোক, ফরয ইলম শিখতে বিবাহকে পিছানোর বা বিবাহকে আটকানোর কোনো প্রয়োজন নেই।কেননা এই ফরয ইলম শিখতে অতি অল্প সময় লাগবে।এর জন্য অনেক লম্বা টাইম লাগবে না।তাছাড়া বিয়ে পরবর্তী সময়েও ফরয ইলম শিক্ষা করা যাবে।এ সুযোগ সর্বদাই পাওয়া যাবে।কেননা এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই।বরং ঘরোয়াভাবে ফরয ইলম শিখা যাবে।
সুতরাং আপনার প্রতি আমাদের পরামর্শ হলো,আপনি বিয়ে করুন।দ্বীনী ফরয ইলম শিখার চেষ্টা করুন।বিয়ের পূর্বে ও পরে চেষ্টাকে অব্যাহত রাখুন।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.