আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
277 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালমুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ শাইখ,
১) যখন নফস শয়তান বা ইবলিশ শয়তান অশ্লীলতা বা হারামের দিকে দাওয়াত দেয় তখন নিজেকে কিভাবে হারাম এর বিরুদ্ধে সবর করবো ?
২) ইশরাকের নামাজ যদি ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার পর বাসায় এসে পড়ি তাহলে কি হজ্জ ও উমরাহ সওয়াব পাবো?

৩) ছোট বাচ্চাদের পড়ানোর সময় কথা না শুনলে রাগ করলে কি গুনাহ হবে বা আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন ?

৪) নেকির কাজ করে কি নিজের উপর সদকাহর সওয়াব পাওয়া যায়?

৫) কিভাবে ইস্তেগফার পড়লে ইস্তেগফার এর ফল পাওয়া সম্ভব?

৬) কুরআনের তাদাববুর কিভাবে করবো?

৭) মুরাকাবা কিভাবে করবো?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
উল্লেখিত সময়ে মহান আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে, তাঁর রজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। তিনি অসীম দয়ালু। 

মূলত এই নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহরই। 

তিনি বলেন,
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তুমি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম-সিজদাহ ৩৬)

হারাম কাজকে  গুরুত্ব না দিয়ে সাথে সাথে কোনো উপকারী কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতে হবে। 

তালিমের পরিবেশ, আমলের পরিবেশ, তেলাওয়াতের পরিবেশ, জিকির-মুরাকাবা, দোয়ার পরিবেশে বেশি বেশি সময় দিতে হবে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ

  দুটো নিয়ামত এমন যে দুটোর বিষয়ে বহু লোক ধোঁকায় নিপতিত- স্বাস্থ্য এবং অবসর। (তিরমিযী ২৩০৭)

(০২)
হযরত আনাস রাযি,থেকে বর্ণিত

(مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ ، وَعُمْرَةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ) 

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামায পড়বে,অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকবে,তারপর দু'রাকাত নামায পড়বে,তাহলে সে একটি হজ্ব ও একটি উমরার সওয়াব পাবে।এরপর তিনি তাকিদ করে বলেন,হ্যা পূর্ণ হজ্ব ও উমরার সওয়াব সে পাবে।(সুনানু তিরমিযি-৫৮৬)

হাদীসের ভাষ্যমতে উক্ত ফযিলত ঐ ব্যক্তির সাথেই খাস মনে হচ্ছে, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাতের সাথে পরে মসজিদে বসে থেকে সূর্যোদয়ের পর ইশরাকের নামায পড়বে।

যদি কেহ মসজিদে নামাযের জায়গায় বসে যিকির ইত্যাদিতে লিপ্ত হন এবং সেখানে ইশরাকের নামাজ আদায় করেন তবে তার ফজিলত ঘরে ইশরাক আদায় করার চেয়ে বেশি হবে।
,

তাই কবুল হজের ছওয়াবের জন্য হাদীসের হুবহু অর্থের উপর আমল করাই উচিত।

আরো জানুনঃ 
,
(০৩)
না গুনাহ হবেনা।
তবে প্রহার করা যাবেনা।

আরো জানুনঃ
,
(০৪)
যদি সদকাহ মূলক নেকীর কাজ করা হয়,তাহলে সদকাহ এর ছওয়াব পাওয়া যাবে।
,
(০৫)
তওবার পদ্ধতি সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুনঃ  
,
(০৬)
আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন, “এক মুবারক কিতাব, এটা আমরা আপনার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহে তাদাব্বুর করে (গভীরভাবে চিন্তা করে) এবং যাতে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে।”[সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯]

শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ) বলেছেনঃ
মুমিন ব্যক্তি কুরআন তাদাব্বুর করবে। অর্থাৎ গুরুত্ব দিয়ে কুরআন পড়বে এবং কুরআনের অর্থ নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। অর্থ বুঝার চেষ্টা করবে। এভাবে কুরআন থেকে উপকৃত হবে। যদি পরিপূর্ণ অর্থ তার বুঝে নাও আসে; কিন্তু অনেকটুকু সে বুঝতে পারবে। কিন্তু সে বুঝে বুঝে পড়বে। অনুরূপভাবে মুমিন নারীও এটা করবে; যাতে করে সে আল্লাহ্র কালাম থেকে উপকৃত হতে পারে। এবং যাতে করে আল্লাহ্ তাআলার উদ্দেশ্য বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে পারে। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “তবে কি তারা কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর করে না (গভীর চিন্তা করে না)? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে?”[সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ২৪]

সুতরাং জানা গেল, আমাদের রব্ব আমাদেরকে তাঁর বাণী বুঝে বুঝে, চিন্তাভাবনা করে পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাই মুমিন নর-নারীর জন্য আল্লাহ্র কিতাব চিন্তাভাবনাসহ, বুঝে বুঝে, গুরুত্বসহকারে পড়া শরিয়তে গ্রাহ্য। যাতে করে সে আল্লাহ্র কালাম থেকে উপকৃত হতে পারে, কথাগুলো বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে পারে। 

এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি তাফসির গ্রন্থগুলোর সহযোগিতা নিবে; যে গ্রন্থগুলো আলেমগণ রচনা করেছেন। যেমন- তাফসিরে ইবনে কাছির, তাফসিরে ইবনে জারির, তাফসিরে বাগাভী, তাফসিরে শাওকানি ইত্যাদি। এছাড়া আরবী ভাষার উপর লিখিত গ্রন্থগুলোরও সহায়তা নিবে।

এ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ  
,
(০৭)
মুরাকাবা শব্দটি বাবে মুফায়ালাতুন হতে নির্গত যার অর্থ চিন্তা করা,গবেষণা করা,সুদর্শন,গভীর মনোনিবেশ ইত্যাদি।

মসজিদে অথবা আপন ঘরের নির্জন কোন জায়গায় দোজানু হয়ে বসে দুই চক্ষু বন্ধ করে একাগ্রতার সহিত ক্বলবে আল্লাহ কে স্মরণ করা, জিকির করা।

 আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الَّذِينَ ءَامَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
 যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়; জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ  দ্বারাই অন্তরসমূহ  প্রশান্ত হয়।
{সূরা রাদঃ ২৮}
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
উল্লেখিত বিষয় নিয়ে কোনো হক্কানী শায়েখের পরামর্শ নিয়ে আমল করুন।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 162 views
...