আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,098 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওস্তায

হাদিয়া এবং সাদকা মধ্যে পাথর্ক্য কী?

আমরা সাদকার ফজিলত সম্পর্কে কম বেশি জানি। হাদিয়ার প্রদানের খাত সমূহ এবং এর ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাই।

কাউকে হাদিয়া দিতে চাইলে তা কি মনে মনে নিয়ত করব, নাকি যাকে দিচ্ছি তাকে জানিয়ে দিতে হবে এটি আপনার জন্য হাদিয়া। হাদিয়ার ফজিলত বেশী? নাকি সাদকার ফজিলত বশী?
সাধারণ দান আর সাদকার মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কী??

 জাযাক্কাল্লাহু খাইরান। ওস্তায।
closed

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হাদিয়া শব্দের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ সম্পর্কে 'মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ' কিতাবে এভাবে বর্ণিত রয়েছে,
هَدِيَّةٌ التَّعْرِيفُ:أ - الْهَدِيَّةُ فِي اللُّغَةِ: هِيَ الْمَال الَّذِي أُتْحِفَ وَأُهْدِيَ لأَِحَدٍ إِكْرَامًا لَهُ، يُقَال: أَهْدَيْتُ لِلرَّجُل كَذَا: بَعَثْتُ بِهِ إِلَيْهِ إِكْرَامًا، فَالْمَال هَدِيَّةٌ (١) .وَاصْطِلاَحًا عَرَّفَهَا الْحَنَفِيَّةُ بِأَنَّهَا: تَمْلِيكُ عَيْنٍ مَجَّانًا.
হাদিয়া শব্দের শাব্দিক অর্থ হল,ঐ মাল যাকে কারো সম্মানার্থে দেয়া হয় বা খরছ করা হয়।
যেমন কেউ বলল,আমি অমুককে তা দিয়েছি।
আমি তার সম্মানার্থে তার নিকট এই জিনিষ প্রেরণ করেছি।যেহেতু মাল দ্বারাই হাদিয়া আদান-প্রদাণ করা হয়,তাই হাদিয়ার অপর নামই হল মাল/সম্পদ।হানাফি ফুকাহায়ে কেরামদের পরিভাষায় হাদিয়া বলা হয়,ফ্রিতে কাউকে কোনো জিনিষের মালিক বানিয়ে দেয়া। (৪২/২৫২)
 
কোরআনে কারীমে হাদিয়া শব্দের ব্যবহার রয়েছে, শুনুন-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﻣُﺮْﺳِﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢ ﺑِﻬَﺪِﻳَّﺔٍ ﻓَﻨَﺎﻇِﺮَﺓٌ ﺑِﻢَ ﻳَﺮْﺟِﻊُ ﺍﻟْﻤُﺮْﺳَﻠُﻮﻥَ০
ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺟَﺎﺀ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥَ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺗُﻤِﺪُّﻭﻧَﻦِ ﺑِﻤَﺎﻝٍ ﻓَﻤَﺎ ﺁﺗَﺎﻧِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِّﻤَّﺎ ﺁﺗَﺎﻛُﻢ ﺑَﻞْ ﺃَﻧﺘُﻢ ﺑِﻬَﺪِﻳَّﺘِﻜُﻢْ ﺗَﻔْﺮَﺣُﻮﻥَ
(৩৫)আমি তাঁর কাছে কিছু 'উপঢৌকন' পাঠাচ্ছি; দেখি প্রেরিত লোকেরা কি জওয়াব আনে।
(৩৬)অতঃপর যখন দূত সুলায়মানের কাছে আগমন করল, তখন সুলায়মান বললেন, তোমরা কি ধনসম্পদ দ্বারা আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন, তা তোমাদেরকে প্রদত্ত বস্তু থেকে উত্তম। বরং তোমরাই তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে সুখে থাক।(সূরা আন্-নামল-৩৫-৩৬)

হাদিয়ার ফযিলত সম্পর্কে হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে
ﻭﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ : « ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘﺒﻞُ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻭﻳُﺜﻴﺐُ ﻋﻠﻴﻬﺎ »
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ হাদিয়া গ্রহণ করতেন।এবং তার বিনিময়/প্রতিদান ও দিতেন।(সহীহ বুখারী-২৪৪৫)

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﻟﻮ ﺃُﻫـﺪﻳـﺖ ﺇﻟـﻲَّ ﺫﺭﺍﻉٌ ﻟﻘﺒـﻠﺖُ، ﻭﻟﻮ ﺩُﻋﻴﺖُ ﺇﻟﻰ ﻛُﺮﺍﻉٍ ﻷَﺟﺒﺖُ »
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ আমার নিকট জন্তুর বাহু হাদিয়া পাঠায়,তাহলে আমি তা কবুল করব।আর যদি কেউ আমাকে পায়ের খুরা রেঁধেও দাওয়াত দেয়, তাহলেও আমি জবাব দিবো।(সহীহ বুখারী-৪৮৮৩)

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﺗﻬﺎﺩﻭﺍ ﺗﺤﺎﺑﻮﺍ »
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা পরস্পর হাদিয়া দাও তবে তোমাদের পরস্পর মহব্বত সৃষ্টি হবে।(আল-আদাবুল মুফরাদ)ইরওয়াউল গালিল-৬/৪৪

হাফেয ইবনে আব্দুল বার রাহ বলেন,
[ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﺒﻞ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻭﻧﺪﺏ ﺃﻣﺘﻪ ﺇﻟﻴﻬﺎ، ﻭﻓﻴﻪ ﺍﻷﺳﻮﺓ ﺍﻟﺤﺴﻨﺔ ﺑﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ . ﻭﻣﻦ ﻓﻀﻞ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻊ ﺍﺗﺒﺎﻉ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺃﻧﻬﺎ ﺗﻮﺭﺙ ﺍﻟﻤﻮﺩﺓً ﻭﺗُﺬﻫﺐ ﺍﻟﻌﺪﺍﻭﺓ ] 
রাসূলুল্লাহ সাঃ হাদিয়াকে গ্রহণ করতেন,এবং হাদিয়া দিতে উম্মতকে উৎসাহ দিতেন।এতেই নিহিত রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর উত্তম আদর্শ ও নমুনা।সুন্নাতের অনুসরণে হাদিয়ার তাৎপর্য হল যে,তা মহব্বত সৃষ্টি করে ও শত্রুতাকে দূর করে।(ফতহুল মালিক-৯/৩৫৮-৩৫৯) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1382

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদিয়া ধণী গরীব যে কাউকে দেয়া যায়। হাদিয়া বা সদকাহ বা যাাকাত সবকটির ক্ষেত্রে মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট। মোটকথা নিয়ত অন্তরের বিষয়। যেকোনো কাজের নিয়ত অন্তর দ্বারা করে নিলেই যথেষ্ট হয়ে যায়। হাদিয়া এবং সদকাহ উভয়টিরও ফযিলত আছে। কোনোটাকে ছোট করে দেখা যাবে না। তবে সদকাহ যেহেতু গরীবের প্রয়োজন পূরণের জন্য, তাই এ দিক বিবেচনায় সদকাই বেশী ফযিলতপূর্ণ। সাদারণ দান আর নফল সদকাহ প্রায় একই। তবে যাকাত আর সাধারণ দান বা সদকাহ এক নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
 জাযাক্কাল্লাহু খাইরান। ওস্তায।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...