আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (115 points)

সাদকা কি সামর্থ্যবানদেরই করা যায়না?যেমন কাউকে সওয়াবের নিয়তে বই দিলে বা কুরআন তাহলে কি সেই সওয়াব সেই ব্যাক্তি পাবেনা?অনেকসময় এমন হয় কাউকে বই হাদিয়া দিলে সেই বই পড়ার পর পরিবর্তন হতে চায় বা তর্জমাসহ কুরআন দিলে কুরআন পড়তে চায় খুব।কিন্তু সওয়াবের নিয়তে সামর্থ্যবান কাউকে দিলে তার সওয়াব কি একই পাব যেরকম অসামর্থ্যবান কাউকে দিলে পাওয়া যেতো?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ইসলামি পরিভাষায় দান করাকেই সদকা বলা হয়। 
সদকা শব্দটি এসেছে আরবি ‘সিদকুন’ থেকে। অর্থ: সত্যতা, যথার্থতা। পরিভাষায় সদকা বলা হয়, একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করার লক্ষ্যে স্বীয় সম্পদ ব্যয় করা।

সদকা দুই প্রকার। 
এক, আবশ্যকীয় যেমন যাকাত।
দুই, নফল দান।
,
এই নফল দান তথা যেটি আবশ্যকীয় নয়,সেটি আবার দুই প্রকার।
,
(১) সাধারণ সদকা (২) সদকায়ে জারিয়া। গরিব দুঃখীকে টাকা পয়সা দান করা, ভালো ব্যবহার করা সাধারণ সদকার অন্তর্ভুক্ত।

আর সাদকায়ে জারিয়া বলা হয় ঐ সমস্ত সৎকর্ম যেগুলোর কল্যাণকারিতা স্থায়ী হয়। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَمَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ ابْتِغَاء مَرْضَاتِ اللّهِ وَتَثْبِيتًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌ فَآتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ فَإِن لَّمْ يُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

‘যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং নিজের মনকে সুদৃঢ় করার জন্যে তাদের উদাহরণ টিলায় অবস্থিত বাগানের মতো, যাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়; অতঃপর দ্বিগুণ ফসল দান করে। যদি এমন প্রবল বৃষ্টিপাত না-ও হয়, তবে হাল্কা বর্ষণই যথেষ্ট। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম যথার্থই প্রত্যক্ষ করেন।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২৬৫)

مَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

‘যারা আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে তার উদাহরণ হচ্ছে সেই বীজের মতো যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। আর প্রতিটি শীষে একশতটি করে দানা থাকে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অতিরিক্ত দান করেন। আল্লাহ সুপ্রশস্ত সুবিজ্ঞ।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২৬১)

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/15514/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদিয়া শব্দের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ সম্পর্কে 'মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ' কিতাবে এভাবে বর্ণিত রয়েছে,
هَدِيَّةٌ التَّعْرِيفُ:أ - الْهَدِيَّةُ فِي اللُّغَةِ: هِيَ الْمَال الَّذِي أُتْحِفَ وَأُهْدِيَ لأَِحَدٍ إِكْرَامًا لَهُ، يُقَال: أَهْدَيْتُ لِلرَّجُل كَذَا: بَعَثْتُ بِهِ إِلَيْهِ إِكْرَامًا، فَالْمَال هَدِيَّةٌ (١) .وَاصْطِلاَحًا عَرَّفَهَا الْحَنَفِيَّةُ بِأَنَّهَا: تَمْلِيكُ عَيْنٍ مَجَّانًا.
হাদিয়া শব্দের শাব্দিক অর্থ হল,ঐ মাল যাকে কারো সম্মানার্থে দেয়া হয় বা খরছ করা হয়।
যেমন কেউ বলল,আমি অমুককে তা দিয়েছি।
আমি তার সম্মানার্থে তার নিকট এই জিনিষ প্রেরণ করেছি।যেহেতু মাল দ্বারাই হাদিয়া আদান-প্রদাণ করা হয়,তাই হাদিয়ার অপর নামই হল মাল/সম্পদ।হানাফি ফুকাহায়ে কেরামদের পরিভাষায় হাদিয়া বলা হয়,ফ্রিতে কাউকে কোনো জিনিষের মালিক বানিয়ে দেয়া। (৪২/২৫২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﻟﻮ ﺃُﻫـﺪﻳـﺖ ﺇﻟـﻲَّ ﺫﺭﺍﻉٌ ﻟﻘﺒـﻠﺖُ، ﻭﻟﻮ ﺩُﻋﻴﺖُ ﺇﻟﻰ ﻛُﺮﺍﻉٍ ﻷَﺟﺒﺖُ »
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ আমার নিকট জন্তুর বাহু হাদিয়া পাঠায়,তাহলে আমি তা কবুল করব।আর যদি কেউ আমাকে পায়ের খুরা রেঁধেও দাওয়াত দেয়, তাহলেও আমি জবাব দিবো।(সহীহ বুখারী-৪৮৮৩)

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﺗﻬﺎﺩﻭﺍ ﺗﺤﺎﺑﻮﺍ »
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা পরস্পর হাদিয়া দাও তবে তোমাদের পরস্পর মহব্বত সৃষ্টি হবে।(আল-আদাবুল মুফরাদ)ইরওয়াউল গালিল-৬/৪৪

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদিয়া ধণী গরীব যে কাউকে দেয়া যায়।  হাদিয়া এবং সদকাহ উভয়টিরও ফযিলত আছে। তবে সদকাহ যেহেতু গরীবের প্রয়োজন পূরণের জন্য, তাই এ দিক বিবেচনায় সদকাই বেশী ফযিলতপূর্ণ। সাদারণ দান আর নফল সদকাহ প্রায় একই। তবে যাকাত আর সাধারণ দান বা সদকাহ এক নয়। 

সুতরাং সওয়াবের নিয়তে সামর্থ্যবান কাউকে দিলে তার সওয়াব একই পাবেননা, যেরকম ছওয়াব অসামর্থ্যবান কাউকে দিলে পাওয়া যেতো।

সামর্থ্যবান কাউকে দিলে সেক্ষেত্রে সদকার ছওয়াব নয়,বরং হাদিয়া প্রদানের ছওয়াব পাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...