আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
369 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

১) রোজাদ্বার ব্যাক্তি রোজা রেখে নামাজ না পড়লে রোজা হবে কি ?

২) যাকাতের পরিমান কি কারও সমগ্র সম্পত্তির ( যেমনঃ জমি,ঘর-বারি ইত্যাদি ) উপর হিসাব হবে নাকি নগত টাকা ,স্বর্ণ এর উপর ?

৩) ফিতরা দেয়া কার জন্য ওয়াজিব হয় ?

৪) হাদিসে আছে এক শ্রেনির কুরআন পাঠকারীকে কুরআন অভিশাপ দেয় । আমার আশঙ্খা তারাবি পড়ানো অধিকাংশ হাফেজরা এর মধ্যে পরে কি না ?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
রোযাদার ব্যাক্তি রোযা রেখে নামাজ না পড়লে রোজা হয়ে যাবে।

তবে নামায নিয়ে অলসতা করা মোটেও উচিত নয়। বিশেষ করে রমজান মাসে। এ মাসে সওয়াবের কাজ করার যেমন অনেক বেশি সওয়াব তেমনি গোনাহের শাস্তিটাও হবে কঠোর। তাই নামাযের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত বিষয়ে অলসতা করা যাবে না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيقٍ العُقَيْلِيِّ، قَالَ: كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلاَةِ.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাকীক রহঃ বলেছেন, হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাগণ কোন আমল ছেড়ে দেয়াকে কুফরী মনে করতেন না শুধু নামায ব্যতীত। অর্থাৎ নামায ছেড়ে দেওয়াকে তারা কুফরীর প্রায় নিকটবর্তী কাজ মনে করতেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬২২]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلَّا أَنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لاَسْتَهَمُوا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاَسْتَبَقُوا إِلَيْهِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ، لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আযানে ও প্রথম কাতারে কী (ফাযীলাত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, কুরআহর মাধ্যমে বাছাই ব্যতীত এ সুযোগ লাভ করা যদি সম্ভব না হত, তাহলে অবশ্যই তারা কুরআহর মাধ্যমে ফায়সালা করত। যুহরের সালাত আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী (ফাযীলাত) রয়েছে, যদি তারা জানত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। আর ‘ইশা ও ফাজরের সালাত আদায়ের কী ফাযীলাত তা যদি তারা জানত, তাহলে নিঃসন্দেহে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা হাজির হত। [বুখারী, হাদীস নং-৬১৫]
,
(০২)
সব ধরনের সম্পদ ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরয হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরয হয়।
,
সুতরাং জমি,বাসা বাড়ির উপর যাকাত আসবেনা। 
তবে যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি, বাড়ি ক্রয় করা হয়,তাহলে তার উপর যাকায় আসবে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ   

(০৩)
নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয়ভার ব্যতীত প্রত্যেক  নেসাব (৭.৫ ভড়ি স্বর্ণ/৫২.৫ ভড়ি রূপা বা রূপার সমমূল্য) পরিমাণ মালের মালিক স্বাধীন মুসলমানের উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।
,
আরো জানুনঃ 

(০৪)
রাসূল (সা.) যখন কুরআন তেলাওয়াত করতেন তখন প্রতিটি শব্দ স্পষ্ট করে উচ্চারণ করতেন। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেছেন,
وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا
‘আর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে কুরআন পাঠ কর।’ [সূরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ৪]

অর্থাৎ ধীরস্থিরতার সাথে প্রতিটি অক্ষরের তাজবীদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে। এটি একটি ফরজ নির্দেশ। তাই এই নির্দেশ অমান্য করে সাধারণত অধিকাংশ জায়গায় তারাবিহ নামাজে যেভাবে কুরআন তেলাওয়াত করে হয়, তা আদৌ ঠিক নয়। 

 কোনো অবস্থাতেই কুরআনের সাথে জুলুম করা যাবে না। কেননা, হাদিস শরিফে এসেছে,
رب تال للقرآن والقرآن يلعنه
‘এমন অনেক কুরআন তেলাওয়াতকারী রয়েছে, কুরআন যাকে অভিশম্পাত করে।’ [ইহয়াউ উলুমিদ্দীন ১/২৭৪]

رب قارئ للقرآن والقرآن يلعنه “কুরআন শরীফ তিলাওয়াতকারী অনেক ব্যক্তি কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে অথচ কুরআন তাকে অভিশাপ দেয় (অশুদ্ধ তিলাওয়াতের কারণে)”

তাই আমরা কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে ধীরস্থিরতার সাথে তেলাওয়াত করব। তাড়াহুড়া করব না। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নিজের আমলকে বরবাদ না করি।
,
(মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন যে  যদিও হাদীসের কোনো গ্রন্থে উক্ত হাদীস খুজে পাওয়া যায়নি।
তবে এর অর্থ ছহীহ।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 347 views
...