আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
266 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (29 points)
বিখ্যাত একজন হুজুর আশরাফ আলী থানবী উনার (সূফি তত্ত্ব কিতাবের ৭৮-৯২ পৃষ্ঠায় ফতোয়া দিয়েছেন যে গ্রামোফোনে কুরআন পাঠ এবং আযান উচ্চারণ কুফরী।এটা কি আসলে সহীহ কিনা?আমাকে এও বলুন যে তিনি কি কারণে কুফরী বলেছেন?

তো আমি কি এখন মোবাইলে কোরআন তেলওয়াত শুনে মুখস্ত করতে  পারবো কি? আমাকে স্পষ্ট ভাবে বলুন।এমন হলে তো দুনিয়ার অনেক মুসলিম ই এমন করছে, তবে?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
গ্রামোফোনে কুরআন পাঠ এবং আযান উচ্চারণ কুফরী বলে আমরা কোথাও পাইনি। 

মাইকে আজান সম্পর্কে জামেয়া রাহমানিয়ার ফাতওয়া লক্ষ্যণীয়।
মাইকে আজান ও ইকামত দেয়া সম্পূর্ণ বৈধ। বৈধতার বিষয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তবে উত্তম অনুত্তম নিয়ে দৃষ্টি ভঙ্গির ভিন্নতা রয়েছে। বর্তমানেও অনেকে মাইকের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও মুখে আজান ও ইকামত দেয়াকে উত্তম বলেন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, ইসলামের শুরু যুগ থেকে এভাবেই আজান দেয়া হতো, তাই মুখে আজান দেয়ার মধ্যেই মূল বিষয়ের অনুসরণ রয়েছে। তাই তা উত্তম। তবে চিন্তা করলে একথা প্রতিয়মান হয় যে, ইসলামে আজান প্রবর্তন করার উদ্দেশ্য হলো, এর মাধ্যমে নামাজিদের নামাযের সময় হওয়া সম্পর্কে অবগত করা এবং নামাজের জন্য আহবান করা। বলাবাহুল্য, আজানের আওয়াজ যত উচ্চ হবে ততবেশী মানুষ নামাযের সময় সম্পর্কে অবগত হবে এবং নামাযের দাওয়াত ততবেশী মানুষের নিকট পৌঁছবে। আজান সংক্রান্ত শরিয়তের বিভিন্ন হুকুম থেকেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়। যেমন,أذان فى الصومعة  অর্থাৎ- আজান ঘরে আজান দিলে সে ক্ষেত্রে জানালা দিয়ে মাথা বের করে আজান দেয়ার আদেশ রয়েছে। যেন আজানের আওয়াজ দূর পর্যন্ত পৌঁছে। আরো একটি বিষয় হলো যে, আজানকে দাওয়াতে তাম্মাহ তথা পরিপূর্ণ আহবান বলা হয়েছে। তাহলে আজান যেহেতু দাওয়াত, তাই যতদূর পর্যন্ত সম্ভব তার প্রচার হওয়া কাম্য। সুতরাং যেহেতু মাইকে আজান দেয়ার বৈধতা নিয়ে কোনো বিরোধ নেই, তাই মাইকে আজান দেয়া উত্তম হওয়া যুক্তিযুক্ত। কেননা, তাতে শরিয়তের উদ্দেশ্য, মুখে আজান দেয়ার চেয়ে বেশী প্রতিফলিত হয়।

কিন্তু মুখে আজান ও মাইকে ইকামত দেয়ার তেমন কোনো কারণ বুঝে আসে না। তবে হ্যাঁ, যদি তাতে এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি থাকে যে, আজান স্বতন্ত্র একটি ইবাদত তাই তাতে আসলের অনুকরণ হোক। আর ইকামত যেহেতু আনুষঙ্গিক বিষয়। তাই তাতে আসলের অনুসরণ না হলেও ক্ষতি নেই। তা হলে ভিন্ন কথা।

আর বড় জামাতে ইমাম সাহেবের আওয়াজ শেষ পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা আবশ্যক। অন্যথায় তারা ইমামের অনুসরণ করবে কিভাবে। তবে এ জন্য শুধু মুকাব্বিরেরও ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মাইকের পাশাপাশি মুকাব্বিরেরও ব্যবস্থা রাখার প্রয়োজন নেই। তদুপরি সাবধানতা বশত: এমন করা যেতে পারে। কেননা, অনেক সময় বিদ্যুৎ চলে যায় কিংবা মাইক যন্ত্রে গোলযোগ দেখা দেয়।

كما أخرج ابن خزيمة فى صحيحه : (1/ 189)

 عن محمد بن عبد الله بن زيد عن أبيه قال : لما أصبحنا أتينا رسول الله صلى الله عليه و سلم فأخبرته بالرؤيا فقال : إن هذه الرؤيا حق فقم مع بلال فإنه أندى أو أمد صوتا منك.

وفى بدائع الصنائع : (1/ 149)

 أما الذي يرجع إلى نفس الأذان فأنواع منها أن يجهر بالأذان فيرفع به صوته لأن المقصود وهو الإعلام يحصل به ألا ترى أن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعبد الله بن زيد علمه بلالا فإنه أندى وأمد صوتا منك … وكذا يجهر بالإقامة لكن دون الجهر بالأذان لأن المطلوب من الأعلام بها دون المقصود من الأذان.

 وفى تبيين الحقائق : (1/ 92)

قال رحمه الله ( ويستدير في صومعته ) هذا إذا لم يمكنه مع ثبات قدميه بأن كانت الصومعة متسعة فيستدير ويخرج رأسه منها ليحصل المقصود به.

وفى الموسوعة الفقهية الكويتية : (10/ 117)

فإن كان صوته لا يبلغ من وراءه فينبغي التبليغ عنه من أحد المأمومين ، والمراد من التكبير ما يشمل تكبيرة الإحرام وغيرها . وقال ابن قدامة : يستحب للإمام أن يجهر بالتكبير ، بحيث يسمع المأمومون ليكبروا ، فإنهم لا يجوز لهم التكبير إلا بعد تكبيره ، فإن لم يمكنه إسماعهم جهر بعض المأمومين ليسمعهم ، أو ليسمع من لا يسمع الإمام . لما روى جابر رضي الله عنه قال : صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم وأبو بكر خلفه ، فإذا كبر رسول الله صلى الله عليه وسلم كبر أبو بكر ليسمعنا.

ويراجع أيضا : آلات ِ جدیدہ کی شرعی احکام : مفتی شفیع  رحمہ اللہ

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

মুবাইল বা রেডিওতে কুরআন তেলাওয়াত শুনা যাবে, এবং আশা রাখা যায় যে, এতে সওয়াবও পাওয়া যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...