আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
363 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম,

যদি কোনো মুসলমান বাপদাদার অনুসরণের কথা বলে এক্ষেত্রে কি শিরক হয়?

বাপ দাদার অনুসরণের কথা বলে কুরআন এবং সুন্নাহকে অস্বীকার করে( যদিও এইসব ব্যাপারে জ্ঞান খুবই কম ), এবং বাপদাদা করে গেছে বলেই ইসলামিক বিভিন্ন কাজ( ইবাদত, আমল) করে ( যদিও প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতই করে কিন্তু মুখে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের কথা না বলে বাপ দাদার কথা বলে এবং আল্লাহ ও রাসুলের কথার থেকে বাপ দাদার কর্মকে প্রাধান্য বেশি দেয়, রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাহ এবং কুরআনে কি বলা আছে সে ব্যাপারে খেয়াল না করেই শুধুমাত্র বাপ দাদার কর্মের কথা বলে এবং এই কর্মকেই অনুসরণ করতে হবে এই কথা বলে) এইসব কিছু কি শিরক এর পর্যায়ে চলে যায়?

সুরা বাকারার ১৭০ নং আয়াতে যা বলা হয়েছে হুবহু সেরকম।  কিন্তু আমি এক লেখাতে পড়েছিলাম এই আয়াত টি রাসুলের যুগে মুর্তিপুজারীদের বুঝানো হয়েছে, এই কথা কি সঠিক? এই আয়াতের আওতায় কি কোনো মুসল্মান পড়বে না?

( আমরা যে দৃষ্টিতে মাজহাব মানি সে দৃষ্টিতে মূলত বাপ দাদা কে মানার কথা বুঝাই নি। শুধু মাত্র বাপদাদা করে গেছে বলেই করব এরকম একটা দৃষ্টিভংগি বুঝিয়েছি)

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা বাকারার ১৭০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ اِذَا قِیۡلَ لَهُمُ اتَّبِعُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ قَالُوۡا بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلۡفَیۡنَا عَلَیۡهِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَ لَوۡ کَانَ اٰبَآؤُهُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ شَیۡئًا وَّ لَا یَهۡتَدُوۡنَ ﴿۱۷۰﴾

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা অনুসরণ কর, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন’, তারা বলে, ‘বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি’। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছু না বুঝে এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত না হয়, তাহলেও কি? 

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
এ আয়াতের দ্বারা বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষের তাকলীদ বা অন্ধ অনুকরণ-অনুসরণের যেমন নিন্দা প্রমাণিত হয়েছে, তেমনি বৈধ অনুসরণের জন্য কতিপয় শর্ত এবং একটা নীতিও জানা যাচ্ছে। যেমন, দু'টি শব্দে বলা হয়েছে (لَا يَعْقِلُونَ) এবং (لَا يَهْتَدُونَ) এতে প্রতীয়মান হয় যে, বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষের আনুগত্য ও অনুসরণ এ জন্য নিষিদ্ধ যে, তাদের মধ্যে না ছিল জ্ঞান-বুদ্ধি, না ছিল কোন আল্লাহ প্রদত্ত হিদায়াত। হিদায়াত বলতে সে সমস্ত বিধি-বিধানকে বোঝায়, যা পরিস্কারভাবে আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিল করা হয়েছে। আর জ্ঞান-বুদ্ধি বলতে সে সমস্ত বিষয়কে বোঝানো হয়েছে, যা শরীআতের প্রকৃষ্ট ‘নস’ বা নির্দেশ থেকে গবেষণা করে বের করা হয়।

অতএব, তাদের আনুগত্য ও অনুসরণ নিষিদ্ধ হওয়ার কারণটি সাব্যস্ত হলো এই যে, তাদের কাছে না আছে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত কোন বিধি-বিধান, না আছে তাদের মধ্যে আল্লাহ্ তা'আলার বাণীর পর্যালোচনা-গবেষণা করে তা থেকে বিধি-বিধান বের করে নেয়ার মত কোন যোগ্যতা। এতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, কোন আলেমের ব্যাপারে এমন নিশ্চিত বিশ্বাস হলে যে, কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞানের সাথে সাথে তার মধ্যে ইজতিহাদ (উদ্ভাবন)-এর যোগ্যতাও রয়েছে, তবে এমন মুজতাহিদ আলেমের আনুগত্য অনুসরণ করা জায়েয। অবশ্য এ আনুগত্য তার ব্যক্তিগত হুকুম মানার জন্য নয়, বরং আল্লাহর এবং তার হুকুম-আহকাম মানার জন্যই হতে হবে। [মা'আরিফুল কুরআন, পরিমার্জিত]

সমাজে কিছু মানুষ আছে,যারা নাজায়েজ কাজে মগ্ন,বা বিদ'আতে মগ্ন,যদি তাদেরকে বলা হয় যে এসব কাজের দ্বীনে কোন ভিত্তি নেই, তবে তারা এই উত্তরই দেয় যে, এই প্রথাগুলো তো আমাদের পূর্বপুরুষদের নিকট থেকেই চলে আসছে। অথচ হতে পারে যে, পূর্বপুরুষরাও দ্বীনী ব্যাপারে অজ্ঞ এবং হিদায়াত থেকে বঞ্চিত ছিল। কাজেই শরীয়তের দলীলের মোকাবেলায় বাপ-দাদার (অন্ধ) অনুকরণ জায়েজ নেই।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
যদি বাব দাদার অনুকরণ করতে গিয়ে কোনো নাজায়েজ কাজ করে,তাহলে কাজটি নাজায়েজ হবে,যদি অনুকরণ করতে গিয়ে শিরক কাজ করে,তাহলে কাজটি শিরক হবে।
যদি বিদ'আত কাজ করে তাহলে কাজটি বিদ'আত হবে।
যদি জায়েজ কাজ করে,তাহলে কাজটি জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...