ইসলাম ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে যে বিধি-বিধান দিয়েছে, এর অন্যতম একটি হচ্ছে, ব্যক্তি পণ্য ক্রয়ের পর কবজা করার পূর্বে অন্যত্র বিক্রি করতে পারবে না।
কবজা বলতে নিজের অধীনে নিয়ে আসাই নয় বরং পণ্যে যেকোনো ধরণের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়াও কবজার অন্তর্ভূক্ত।
যেমন: একজন একটি পণ্য কেনার পর বিক্রেতার ঘরেই রেখে দিলো এবং বিক্রেতাও তাকে পণ্যের মধ্যে সর্বপ্রকার হস্তক্ষেপের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিলো তাহলে এটাও ক্রেতার কবজায় আছে বলে ধরা হবে।
হাদিস শরিফে কবজার পূর্বে পণ্য অন্যত্র বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ قَالَ أَنْبَأَنَا ابْنُ الْقَاسِمِ عَنْ مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ ابْتَاعَ طَعَامًا فَلَا يَبِعْهُ حَتَّى يَقْبِضَهُ
মুহাম্মাদ ইবন সালামা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন খাদ্যবস্তু ক্রয় করে, যেন তা কবজা করার আগে বিক্রয় না করে।
(নাসায়ী ৪৫৯৬)
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ، بْنُ عُثْمَانَ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ لِمَرْوَانَ أَحْلَلْتَ بَيْعَ الرِّبَا . فَقَالَ مَرْوَانُ مَا فَعَلْتُ . فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَحْلَلْتَ بَيْعَ الصِّكَاكِ وَقَدْ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الطَّعَامِ حَتَّى يُسْتَوْفَى . قَالَ فَخَطَبَ مَرْوَانُ النَّاسَ فَنَهَى عَنْ بَيْعِهَا . قَالَ سُلَيْمَانُ فَنَظَرْتُ إِلَى حَرَسٍ يَأْخُذُونَهَا مِنْ أَيْدِي النَّاسِ .
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একদা মারওয়ানকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সূদী কেনাবেচা বৈধ করে দিয়েছেন? মারওয়ান বললেনঃ না, আমি তো তা করিনি। আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি রেশন কার্ড বিক্রি বৈধ করে দেননি? অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্যদ্রব্য পুরোপুরি হস্তগত করার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। এরপর মারওয়ান এক বক্তৃতায় তা বিক্রি করতে লোকদের নিষেধ করে দেন।
রাবী সুলাইমান (রহঃ) বলেনঃ আমি দেখলাম যে, মানুষের কাছ থেকে সরকারী কর্মচারীগণ রেশন কার্ড ফিরিয়ে নিচ্ছে। (মুসলিম ৩৭৪১.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৭০৬, ইসলামিক সেন্টার ৩৭০৬)
قال الزیلعی: (لا بَیْعُ الْمَنْقُولِ) أَیْ لا یَجُوزُ بَیْعُ الْمَنْقُولِ قَبْلَ الْقَبْضِ
সারমর্মঃ কবজা করার পূর্বে মানকুল বস্তুর বিক্রয় নাজায়েজ।
بدائع الصنائع :
’’( وأما ) بيع المشتري العقار قبل القبض فجائز عنه عند أبي حنيفة ، وأبي يوسف استحسانا‘‘۔(11/259)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পন্যটি আপনাকে দিবে আরো কয়েকদিন পর,তার মানে তারা এখনো আপনাকে পন্য দেয়নি।
সুতরাং এই পন্য আপনার কবজায় আসেনি,এই পন্যে আপনার সর্বপ্রকার হস্তক্ষেপের পূর্ণ স্বাধীনতা আসেনি।
তাই যে কাস্টমারের কাছে এখন আপনি উক্ত পন্য বিক্রয় করতে চাচ্ছেন,সেটি শরীয়তের বিধান অনুযায়ী জায়েজ হবেনা।