বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
(১)
লকডাউনের কারণে ঈদগাহ বা মসজিদে যেতে না পারলে ঘরেই ঈদের নামায পড়া যায়।
ঘরে ঈদের নামায সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-1498
(২)
ঈদের শুভেচ্ছার অর্থ হলো,
আল্লাহ আপনার নেক আ'মল সমূহ তথা রোযা,তারাবিহ,যাকাত,সদকাতুল ফিতর এবং কুরবানী ইত্যাদি-কে কবুল করুক।
যেহেতু অমুসলিমরা এ আ'মলগুলো করছে না।তাই তাদেরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর কোনো অর্থই হতে পারে না।বিধায় কোনো অমুসলিমকে ঈদ শুভেচ্ছা জানানো বৈধ হবে না।
(৩)
কোনো অমুসলিম যদি ঈদের শুভেচ্ছা জানায়,তাহলে প্রতিউত্তরে ঈদ-মোবারক না বলে হাদাকাল্লাহ বলতে হবে।কেননা ঈদ মোবারক অর্থ হল, বরকতয় খুশী।আর অমুসলিমের কোনো বরকতময় খুশী নেই,বিধায় তাদের হাদাকাল্লাহ বলাই যুক্তিসংগত।
(৪)
জ্বী মুসলিমদের উৎসবে অমুসলিমদেরকে দাওয়াত খাওয়ানোর রুখসত রয়েছে।ঠিকতেমনি অমুসলিমদের উৎসবে উপলক্ষ্যে তাদের আয়োজিত কোনো অনুষ্টানে আমন্ত্রিত হওয়ারও রুখসত রয়েছে।তবে শর্ত হলো,অমুসলিমদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব করা যাবে না।শুধুমাত্র ইসলাম এবং মুসলমানের স্বার্থেই তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা যাবে।আরো জানুন- 1382
(৫)
ﻓﺈﻥ ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ ﻟﻠﻄﻌﺎﻡ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺻﺎﺣﺒﻬﺎ ﻳﺮﻳﺪ ﺑﻬﺎ ﻫﺪﺍﻳﺘﻪ ﻭﺩﻋﻮﺗﻪ ﻟﻼﺳﻼﻡ ﻭﺗﺄﻟﻴﻒ ﻗﻠﺒﻪ ﻓﻬﻲ ﻣﺸﺮﻭﻋﺔ ﻟﻤﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻌﻲ ﻓﻲ ﻫﺪﺍﻳﺔ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻟﻺﻳﻤﺎﻥ، ﻭﻟﻌﻠﻪ ﺇﻥ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﻦ ﺍﻹﻧﻔﺎﻕ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺗﺸﺮﻉ ﻛﺬﻟﻚ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ ﺿﻴﻔﺎ ﺃﻭ ﻣﺤﺘﺎﺟﺎ ﻷﻥ ﺍﻟﺒﺮ ﻭﺍﻹﺣﺴﺎﻥ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﺤﺎﺭﺏ ﻣﺒﺎﺡ ﻣﻊ ﺗﺮﻙ ﻣﻮﺩﺗﻪ ﻭﻣﻮﺍﻻﺗﻪ،
অমুসলিমকে দাওয়াত প্রদানের উদ্দেশ্য যদি তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত,তাদের অন্তরে ইসলামের মাহাত্ম্য ফুটিয়ে তুলা ইত্যাদি হয়ে থাকে,তাহলে এমন মনোভাব রেখে অমুসলিমকে ইফতারের দাওয়া দেওয়ার অনুমোদন রয়েছে।সম্ভবত এটা আল্লাহর রাস্তার খরচের অন্তর্ভুক্ত হবে।এবং যদি কোনো অভাবী ও প্রয়োজন গ্রস্ত অমুসলিমকে দাওয়াত দেয়া হয়,তাহলে সেটাও বৈধ রয়েছে।কেননা যে সমস্ত অমুসলিম মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত নয়,এমন অমুসলিমদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব ব্যতীত এহসান-একরাম করা মুবাহ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻬَﺎﻛُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻦِ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﻢْ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﺨْﺮِﺟُﻮﻛُﻢ ﻣِّﻦ ﺩِﻳَﺎﺭِﻛُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﺒَﺮُّﻭﻫُﻢْ ﻭَﺗُﻘْﺴِﻄُﻮﺍ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﻘْﺴِﻄِﻴﻦَ
ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।(সূরা-মুমতাহিনাহ-০৮)
হ্যা যদি কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দাওয়াতের জন্য দাওয়াত না দেয়া হয়,বা ঐ অমুসলিম অভাবী না হয়, তাহলে এমতাবস্থায় অমুসলিমকে দাওয়া না দেয়াই শ্রেয়।বরং মু'মিন মুসলমান কে দাওয়াত দেয়াই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﻻ ﺗﺼﺎﺣﺐ ﺇﻻ ﻣﺆﻣﻨﺎ، ﻭﻻ ﻳﺄﻛﻞ ﻃﻌﺎﻣﻚ ﺇﻻ ﺗﻘﻲ
তুমি মু'মিন ব্যতীত অন্যকাউকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না।এবং তোমার খাদ্য যেন মুত্তাকী ব্যতীত অন্য কেউ না খায়।(আবু-দাউদ)
বিশেষ করে নিকটাত্মীয়দের প্রতি ইহসান অনুগ্রহ করাই উচিৎ।
যেমন রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﺍﻟﺼﺪﻗﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﺴﻜﻴﻦ ﺻﺪﻗﺔ، ﻭﻫﻲ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺮﺣﻢ ﺛﻨﺘﺎﻥ؛ ﺻﺪﻗﺔ ﻭﺻﻠﺔ .
মিসকিনকে সদকাহ করলে শুধুমাত্র সদকাহর সওয়াবই পাওয়া যাবে।তবে যদি নিকটাত্মীয় কাউকে দেয়া হয়,তবে দু'টি সওয়াব পাওয়া যাবে।সদকাহর সওয়াব এবং আত্মীয়তার সম্পর্ককে অটুট রাখার সওয়াব।(সুনানু-তিরমিযি)
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।