জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
হারাম উপার্জন কারীর হাদীয়া গ্রহন সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
যদি উক্ত টাকার সবটাকাই হারাম হয়,অর্থাৎ অন্য কোনো হালাল উপার্জন যদি সেখানে না থাকে,তাহলে তা উক্ত আত্নীয়ার কাছেই ফেরত দিতে হবে।
কেননা হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।
নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।
من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34،
الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37)
যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)
وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ.
আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৫
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা পরিত্যাগ করো। যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের সংবাদ জেনে নাও। -সূরা বাকারা : ২৭৮-২৭৯
হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদ ভক্ষণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের লেখক এবং সাক্ষীগণকে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, (গুনাহের ক্ষেত্রে) তারা সবাই বরাবর।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮
ولا يجوز قبول هدية أمراء الجور لأن الغالب في مالهم الحرمة إلا إذا علم أن أكثر ماله حلال بأن كان صاحب تجارة أو زرع فلا بأس به لأن أموال الناس لا تخلو عن قليل حرام فالمعتبر الغالب (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الثاني عشر في الهدايا والضيافات-5/342)
অনুবাদ-জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কেননা তার অধিকাংশ মাল হয় হারাম। তবে যদি জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। কেননা সাধারণত মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}
আর যদি উক্ত টাকা হালাল ও হারাম মালের সাথে মিশ্রিত হয়, আর হারাম মাল বেশি হয়, তাহলে তা নেয়া জায়েজ নয়,ফেরত দিতে হবে,নতুবা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া ছদকাহ করে দিতে হবে।
তবে যদি হারাম মাল কম হয় তাহলে তা নেয়া জায়েজ হবে,ব্যবহার করাও জায়েজ আছে।
চাইলে ছদকাহও করতে পারে।
তবে তারপরেও এটা না নেওয়াই উত্তম।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تُقْبَلُ صَلاَةٌ بِغَيْرِ طُهُورٍ وَلاَ صَدَقَةٌ مِنْ غُلُولٍ "
ইবনু উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ পবিত্রতা ছাড়া নামায কবুল হয় না। আর হারাম উপায়ে প্রাপ্ত মালের সাদকাও কুবুল হয় না।
(তিরমিজি ০১ ইবনে মাজাহ ২৭২)
বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রথমেই দেখতে হবে যে উক্ত ব্যাক্তি কোন টাকা থেকে ইফতারী করাচ্ছে,যদি হালাল টাকা থেকে ইফতার সামগ্রী দিলে সেটি গ্রহন জায়েজ।
এতে কোনো সমস্যা নেই।
,
যদি সম্পূর্ণ হারাম টাকা বা অধিকাংশই হারাম টাকা থেকে ইফতার সামগ্রী দেয়,তাহলে সেটি গ্রহন জায়েজ নেই।
,
যদি কিছু টাকা শুধু হালাল হয়,তাহলে তাহা গ্রহন জায়েজ আছে।
,
যদি কোনোভাবেই জানতে না পারা যায় যে এটা হালাল টাকায় ক্রয়কৃত?
নাকি হারাম টাকায় ক্রয়কৃত?
তাহলে সতর্কতামূলক সেটি গ্রহণ না করাই উচিত হবে। ,
(০২)
তাহলে আপনি সেটি খাবেননা,যদি না খাওয়া ছাড়া কোনো উপায় না থাকে,তাহলে অল্প খাবেন।
পরবর্তীতে সেই পরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া ছদকাহ করে দিবেন।