ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
গণক এমন লোককে বলা হয়, যে অনুমানের ওপর নির্ভর করে ভিত্তিহীন বিষয়ের অনুসন্ধান করে থাকে। জাহেলী যামানার কিছু পেশাদার লোকের সাথে শয়তানের যোগাযোগ ছিল। শয়তানেরা চুরি করে আকাশের সংবাদ শ্রবণ করত এবং তাদের কাছে বলে দিত। আকাশ থেকে যা শ্রবণ করত, তার সাথে আরো অনেক মিথ্যা কথা সংযোগ করে মানুষের মধ্যে তা প্রকাশ করত। তারা যা বলত, তার একটি কথা সত্য হলে মানুষ ধোকায় পড়ে যেত এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানের জন্য ও ভবিষ্যতে কি হবে, তা জানতে গণকদের কাছে আসা শুরু করত। এ জন্যই আমরা বলি যে, গণক হচ্ছে সেই লোক, যে ভবিষ্যতের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে থাকে। যারা গণকের কাছে আসে, তারা তিনভাগে বিভক্ত:
(১) গণকের কাছে এসে তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা এবং তার কথায় বিশ্বাস না করা। এটা হারাম। এ ধরণের লোক সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً»
“যে ব্যক্তি গণকের কাছে গিয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবূল হবে না।”(সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুস সালাম)
(২) গণকের কাছে এসে তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা এবং তার কথায় বিশ্বাস করা। এটা আল্লাহর সাথে কুফুরী করার অন্তর্ভুক্ত। কারণ, সে ইলমে গায়েবের দাবীতে গণককে বিশ্বাস করেছে। মানুষ ইলমে গায়েব জানে বলে বিশ্বাস করলে আল্লাহর কথাকে অবিশ্বাস করা হবে। আল্লাহ বলেন,
﴿قُل لَّا يَعۡلَمُ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ ٱلۡغَيۡبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ﴾ [النمل: ٦٥]
“বলুন, আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের সংবাদ অন্য কেউ জানে না।” [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬৫]
সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
“যে ব্যক্তি কোনো গণকের নিকট গমন করে তার কথায় বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ বিষয় (কুরআন ও সুন্নাহ)-এর সাথে কুফুরী করল।” (তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুত তাহারাহ) এ ধরণের মানুষ তাওবা না করে মারা গেলে কুফুরী অবস্থায় তার মৃত্যু হবে।
(৩) গণককে পরীক্ষার জন্য এবং মানুষের সামনে তার ধোঁকাবাজির কথা তুলে ধরার জন্য তার কাছে যেতে কোনো অসুবিধা নেই। ইবন সায়্যাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আগমণ করলে তিনি মনের মধ্যে একটি কথা গোপন করে ইবন সায়্যাদকে জিজ্ঞাসা করলেন, বল তো আমি কি গোপন করেছি? ইবন সায়্যেদ বলল, আদ-দুখ অর্থাৎ আদ-দুখান (ধোঁয়া)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অকল্যাণ হোক তোমার! তুমি তোমার সীমা অতিক্রম করতে পারবে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কোন মুসলমান যদি গণকের কাছে যায় ও কিছু জিজ্ঞেস করে আর অপর কোন মুসলমান যদি যে গিয়েছে তার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে গণক কী বলেছে- এই উভয় ব্যক্তির ঈমান থাকবে না।
(২)
জুম্মার দিনের গোসল নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে যে, এ গোসল কি জুম্মার দিনের সুন্নত না জুম্মার সালাতের সুন্নাত। বিশুদ্ধ এটাই যে, এ গোসল জুম্মার নামাযের সুন্নত। সুতরাং নামায পরবর্তী গোসল কোনো ফযিলতকে শামিল রাখবে না।
(৩) নাকে পানি ঢুকে গেলে যদি সন্দেহ হয় যে গলার ভিতরে ঢুকলো কি না, আর ধারণা প্রবল হয় যে ঢুকেনি, তাহলে এতে রোযা ফাসিদ হবে না।
(৪) পাক নাপাকির ওয়াসওয়াসা আছে বশত ভালোভাবে সন্দেহমুক্ত হয়ে টয়লেট সেরে পরিষ্কার হওয়া ও ওযু করতে ১৫/২০ মিনিট সময় চলে গেলেও ইতিকাফ নষ্ট হবে না। যদিও ওয়াসওয়াসা দূর করার যাবতীয় চেষ্টা করা উক্ত ব্যাক্তির জন্য জরুরী। এবং এজন্য বেশী বেশী আউযুবিল্লাহ পড়া উচিৎ।