ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)আল্লাহ তা’আলা বলেন,
سَوَاء مِّنكُم مَّنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَن جَهَرَ بِهِ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ بِاللَّيْلِ وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللّهِ إِنَّ اللّهَ لاَ يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنْفُسِهِمْ وَإِذَا أَرَادَ اللّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلاَ مَرَدَّ لَهُ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ
তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা রা’দ-১০-১১)
ইবেন আব্বাস রাযি বলেন
أن المعقبات مِن الله هم الملائكة جعلهم الله ليحفظوا الإنسان من أمامه ومن ورائه ، فإذا جاء قدر الله - الذي قدّر عليه أن يقع به من حادث ومصاب ونحوه - تخلوا عنه
মানুষের সাথে আল্লাহ হেফাজতের জন্য দুইজন ফিরিস্তা দিয়েছেন, যা তাকদিরে লিখিত নেই, সেই বিপদ থেকে মানুষকে হেফাজত করার জন্য তাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা এই হেফাজতকারী সম্পর্কে অন্যত্র বলেন,
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُم حَفَظَةً حَتَّىَ إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমাদেরকে বলে দিবেন, যা কিছু তোমরা করছিলে। তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। এমন কি, যখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়। ( সূরা আন’আম-৬১)
(তৃতীয়ত) ঐ সমস্ত ফিরিস্তা যারা নেক কাজ এবং গোনাহের কাজে লিখে থাকেন।
প্রত্যেকা মানুষের নেকী এবং বদী লিখার জন্য দুই জন ফিরিস্তা থাকেন, যারা ছোট বড় সকল প্রকার গোনাহ লিখে থাকেন। ডানের ফিরিস্তা নেকি লিখে থাকেন, আর বামের ফিরিস্তা গোনাহ লিখে থাকেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ
অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে।
كِرَامًا كَاتِبِينَ
সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ।
يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ
তারা জানে যা তোমরা কর।(সূরা ইনফেতার-১০-১২)
আল্লাহ তা’আলা আরোও বলেন,
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ
যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে।
مَا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। ( সূরা ক্বাফ-১৬-১৮)
হযরত আবু উমাম থেকে বর্ণিত,
عن أبي أمامة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : إن صاحب الشمال ليرفع القلم ست ساعات عن العبد المسلم المخطئ ، فإن ندم واستغفر الله منها ألقاها ، وإلا كتبت واحدة .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, বাম দিকের ফিরিস্তা বান্দার গোনাহ লিখা থেকে নিজেকে ছয় ঘন্টা বিরত রাখেন, যদি বান্দা এই ছয় ঘন্টার ভিতরে তাওবাহ করে নেয়, তাহলে ফিরিস্তা আর লিখেন না। নতুবা এক টা লিখেন। (তাবারানি-৮/১৫৮)
ইবনে কাসির রাহ বলেন,
وقوله : له معقبات من بين يديه ومن خلفه يحفظونه من أمر الله أي : للعبد ملائكة يتعاقبون عليه حرس بالليل وحرس بالنهار ، يحفظونه من الأسواء والحادثات ، كما يتعاقب ملائكة آخرون لحفظ الأعمال من خير أو شر ملائكة بالليل وملائكة بالنهار .فاثنان عن اليمين والشمال يكتبان الأعمال صاحب اليمين يكتب الحسنات وصاحب الشمال يكتب السيئات .وملكان آخران يحفظانه ويحرسانه ، واحد من ورائه وآخر من قدامه .فهو بين أربعة أملاك بالنهار وأربعة آخرين بالليل . " "
এক জন মানুলের সাথে সর্বমোট চার জন ফিরিস্তা থাকে, দুইজন আ’মল নামা লিখক , একজন নেকি লেখক ,এবং আরেকজন বদি লেখক। আর দুইজন সংরক্ষণকারী,একজন সামনে এবং একজন পিছনে। দিলে রাতে পালাক্রমে ফিরিস্তারা তাদের দায়িত্বকে আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। (তাফসীরে ইবনে কাসির-২/৫০৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক জন মানুষের সাথে সর্বমোট চার জন ফিরিস্তা থাকে, দুইজন আ’মল নামা লিখক, আর দুইজন সংরক্ষণকারী। একজন সামনে এবং একজন পিছনে। তাছাড়া প্রত্যেক মানুষের সাথে একটি কারিন বা দুষ্ট জ্বীন থাকে, যা শয়তানের এক প্রকার।
(২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " تَخْرُجُ الدَّابَّةُ مَعَهَا خَاتَمُ سُلَيْمَانَ وَعَصَا مُوسَى فَتَجْلُو وَجْهَ الْمُؤْمِنِ وَتَخْتِمُ أَنْفَ الْكَافِرِ بِالْخَاتَمِ حَتَّى إِنَّ أَهْلَ الْخِوَانِ لَيَجْتَمِعُونَ فَيَقُولُ هَاهَا يَا مُؤْمِنُ وَيُقَالُ هَاهَا يَا كَافِرُ وَيَقُولُ هَذَا يَا كَافِرُ وَهَذَا يَا مُؤْمِنُ "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ একটি জানোয়ার বের হয়ে আসবে এবং তার সাথে সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর আংটি ও মূসা আলাইহিস সালাম-এর লাঠি থাকবে। সে (লাঠি দিয়ে) মুমিনদের চেহারা সাফ ও দীপ্তিমান করবে এবং আংটি দিয়ে কাফিরদের নাকে মোহর মেরে দিবে। পরিশেষে তারা একই ভোজসভায় একত্রে মিলিত হবে এবং সেই জানোয়ারটি ডেকে বলবে, এই যে মু’মিন, এই যে কাফির। অতঃপর সে বলবে হে মুমিন, আর সে বলবে হে কাফির। ( সুনানে তিরমিযি-৩১৮৭)