আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
452 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
‏اَلسَلامُ عَلَيْكُم وَرَحْمَةُ اَللهِ وَبَرَكاتُهُ‎
আমার প্রশ্ন এদের নিয়ে↓

ফারহান আর রিতু নামের ছেলে মেয়ে দুজন দুজনকে ভালোবাসে।তাদের মধ্যে যিনা(শারিরীক স্পর্শের যিনা মাত্র) হয়।কিন্তু তারা তখন জানতো না যে এটা যিনা আর এটা হারাম। ফারহান রিতুকে বিয়ের ওয়াদাও দেয়।
এখন ফারহান এর এক বান্ধবী বৃষ্টির প্রতিও ফারহান দূর্বল হয়ে পড়ে।
বৃষ্টি ফারহান থেকে বয়সে ৩ বছর ৮ মাস এর বড়।সে ফারহানের টিচার ছিল।ফারহান বৃষ্টিকে সবসময় বন্ধুর চোখেই দেখতো।যেহেতু দুইজনেরি বয়স কম।বৃষ্টি হেদায়েতপ্রাপ্ত ছিল।ফারহানও বৃষ্টির কাছ থেকে দ্বীনের ব্যাপারে জানতে পারে।
ফারহান বৃষ্টির কাছে থেকেই জানতে পারে যে এগুলা যিনা আর এগুলা হারাম।কিন্তু ফারহান আবার বৃষ্টির সাথেই অনুরূপ যিনায়(শারীরিক স্পর্শ শুধু) লিপ্ত হয়।বৃষ্টির জ্বীনের সমস্যা ছিল যার কারণে তার নফস দূর্বল ছিল।সে সবসময় নিজের ভালোবাসা আর পবিত্রতা নিজের স্বামীর জন্য বাঁচিয়ে রাখার মানসিকতা রাখতো।জ্বীনের সমস্যার কারণে তার মুখেও জড়তা আসতো সালাত আদায় আর কুরআন তিলাওয়াতের সময়।তাই তখন তার অনেক কষ্ট হয় তার এগুলো থেকে বেরোতে।শেষমেশ বৃষ্টি সফল হয় অনেকটা।কিন্ত বৃষ্টি এগুলো ভুলতে পারছিলো না।বৃষ্টি নিজেকে নিজেই ঘৃণা করতে থাকে যে সে কি করে ফেলেছে।যেহেতু ভুলতে পারছিলো না তাই সে ফারহান কেই বিয়ে করতে চাইলো।কিন্তু ফারহান রাজি না।বৃষ্টি ফারহান কে মাফ করেই দিলো বলতে গেলে যদিও সে ভুলতে পারছিলো ওই বাজে স্মৃতি গুলো।তাই বৃষ্টি ভেবে নিলো যে সে ইস্তিখারা করবে।আর ইস্তিখারায়ও পজিটিভই মনে হলো।কিন্তু সে ভাবলো এখন তো আর লাভ নেই ইস্তিখারা করে কারণ সে বিয়ে তো এখন করতে পারবেনা তাই ইস্তিখারার ব্যাপারে অত ভাবেনি।ফারহান আবার বৃষ্টির সাথে যিনায় লিপ্ত হয়।এবারও বৃষ্টি রিতু আর ফারহান এর কথা ভেবে মাফ করে দেয়।বৃষ্টি ফারহানকে কেঁদে কেঁদে জিজ্ঞেস করে এতোকিছুর পরো সে বৃষ্টিকে ছেড়ে চলে যাবে?এগুলো বলার পরও আবারও ফারহান বৃষ্টির সাথে যিনায় লিপ্ত হয়।তৃতীয়বার বৃষ্টি আর মাফ করতে পারছিলো না।তাই সে বিয়ের প্রস্তাব রাখে।কারণ এখন বৃষ্টিকে বিয়ে না করলে বৃষ্টির সাথে অন্যায় হয়।আর সে এক আলিমা আপুকে জিজ্ঞেসও করে যেহেতু ফারহান রিতুকে ওয়াদা দিয়েছিলো।আলিমা আপু বলে যে ওয়াদা ভঙ্গ করে বৃষ্টিকেই বিয়ে করা উচিত।কিন্তু ফারহান বলে রিতুর সাথেও তো অন্যায় হয় ওকে বিয়ে না করলে।আর ফারহান বলে সে রিতুর সাথে বেশি ক্লোজ ছিল।তাই রিতুর প্রতি বেশি অন্যায়।

আর ফারহানের এক প্রকার ভুলে যাওয়ার সমস্যা আছে।অনেক সাধারণ কথা বলেও সে ভুলে যায়।সে আল্লাহর কসম দিয়েও বলে ফেলে যে সে বলেনি।তার কথা সে বুঝেনি সে যে যিনা করে ফেলেছে।আল্লাহর কসম দিয়ে বলে।অথচ যখন যিনা হতো তাকে দেখে মনে হতো না যে সে কিছু বুঝেনি।সে তখন বলতো আম্মু  দেখলে যে কি করবে?আবার বলে সে নাকি বুঝেনি।সে মাঝে মাঝেই বৃষ্টিকে দূরে সরিয়ে দিতো।কিন্তু বেশিরভাগ সময় সে নিজেই কাছে আসতো।আর তাদের মধ্যে যে যিনা হয়েছিলো তা দুষ্টামির ছলে ছলে।তখনই ফারহান অনেক বেশি ক্লোজ হয়ে যেতো।সে যেমন সবসময় বাহানা খুজতো বৃষ্টির কাছে যাওয়ার।

বৃষ্টি আর ফারহান দুজনই দুজনের অনেক কেয়ার করতো।কিন্তু বৃষ্টি একটু বেশিই।বৃষ্টি ফারহানের আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার জন্যই তাকে অনেক স্নেহ করতো।বৃষ্টি সবসময়ই এমনভাবে কথা বলতো যাতে ফারহান কষ্ট না পায়।কারণ বৃষ্টি কখনোই ফারহান এর কষ্ট কেনো যেন সহ্য করতে পারতো না।নিজের খুশির চেয়ে ফারহানের খুশিকে বেশি মূল্য দিতো।সবসময় নিঃস্বার্থ ছিল।এজন্য যিনার জন্য তাকে দুইবার ক্ষমাও করেছিলো শুধু ফারহান আর রিতুর কথা ভেবে।কারণ সে কখনোই তাদের মাঝে আসতে চায়নি আর আলাদাও করতে চায় না।কিন্তু এখন সে আর পারছেনা।সে প্রথমবার যখন যিনা ঘটেছিলো তখন থেকেই ভয়ানকভাবে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল।আর এখন তো আরো অবস্থা খারাপ।সে অন্য কাউকে বিয়ের কথা ভাবতেই পারেনা।সে ফারহান ছাড়া কাউকে বিয়েই করতে চায় না।
কিন্তু রিতুর কথা উঠলে ফারহান আর কারো কথাই ভাবে না।এক প্রকার মাথা নষ্ট হয়ে যায়।এখন সে বৃষ্টির কষ্টেরও পাত্তা দিচ্ছে না।স্বার্থপরের মতো আচরণ করছে যদিও বাস্তবে সে স্বার্থপর না।রিতুর কথা উঠলেই সে এরকম করে।ফারহান যে রিতু কে বিয়ে করা ছাড়া খুশি হতে পারবেনা এরকম না।সে বৃষ্টির প্রতিও দূর্বল যদিও সে স্বীকার করতে চায় না।কিন্তু তার কথা বার্তা ভাবসাবে বোঝাই যায় সে বৃষ্টির প্রতিও দূর্বল।এবং এ কারণেই যিনাও হয়ে গেছে বৃষ্টির সাথে।কিন্তু ফারহান এর শুধু জেদ রিতু কে বিয়ে করার।কিন্তু সে বলে যেটা ন্যায় সে সেটা মেনে নিবে যদি রিতু খুশি থাকে।এখন ফারহান এর কি করা উচিত?কাকে বিয়ে করা উচিত?

উল্লেখ্য যে, প্রথমবার যিনার পর বৃষ্টি আর ফারহান কে পড়াতে চেতো না।ফারহানের মা অনেক কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও বৃষ্টিকে আগে পড়াতো তাই ফারহান এর মা যখন বৃষ্টিকে বলে বৃষ্টি মানা করতে পারেনি।সে বছর শেষে ভেবেছিলো ছেড়ে দিবে। ফারহান এর মা কেও বলছিলো।কিন্তু তখনও ফারহান এর মা তাকে অনুরোধ করায় ছাড়তে পারেনি।সে এসব কথা ফারহান এর মাকে বলতেও পারছিলো না।
............................

আলিমা আপুর কাছে এই প্রশ্ন করা হয়েছিলো।

প্রশ্নঃ আপু এক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে দ্বীনদারই হয় কিন্তু,ছেলে টা অন্য মেয়ের সাথে যিনা(ব্যভিচার না, শারীরিক স্পর্শ এরকম আরকি) করে ফেলে শয়তান এর ওয়াসওয়াসায়। এখন অন্য মেয়েটি যদি অন্য কোনো ছেলের কথা ভাবতে না পারে,ছেলেটির কি উচিত হবে শুধু মাত্র ওয়াদা রাখার জন্য অন্য মেয়েটিকে ছেড়ে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করা।যিনার ঘটনা টি শুধু একবারই না আগেও ঘটেছে কিন্তু মেয়েটি(যার সাথে যিনা করা হয়েছিল) মাফ করেছিল কিন্তু এবার সহ্য সীমার বাইরে চলে গেছে।

আর ছেলেটির কি ওই ওয়াদা রাখা ঠিক হবে? সে তো অন্য একটা মেয়ের সাথে অন্যায় করেই ফেলেছে,এখন ফেলে রেখে গেলে কি আরেকটা অন্যায় হবে না?অন্য মেয়েটা চায় যে ছেলেটা রাকে বিয়ে করুক।কারণ তার guilty feel হয়।ছেলেটার কি এখন বিয়ের প্রস্তাবে মানা করা উচিত হবে ওই ওয়াদার দোহাই দিয়ে?
অন্য মেয়েটির guilty feel হয় অন্য কোনো ছেলেকে বিয়ে করতে আর সে অন্য কোনো ছেলের কথা ভাবতেও পারেনা।সে মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছে।

উত্তরঃ ওয়াদা কি বলে করেছিল তা ত জানিনা।
ওয়াদা ভাঙ্গলে কাফফারা আসবে কিনা আলিম কারো হতে জেনে নিতে পারে।
তার উচিত ওয়াদা ভেঙে ওই মেয়েকেই বিয়ে করা।

উল্লেখ্য ফারহান আর রিতুর সময় বেশিরভাগ সময় রিতুই ফারহানের কাছে আসতো।যতদূর জানি রিতুই প্রথম তার দিকে এগিয়ে আসে।। আর বৃষ্টির সময় ফারহান কাছে আসতো।

*অশ্লীল ভাবে লিখার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী
লিখা টা বাজে অশ্লীল হয়ে গেছে তাই ক্ষমাপ্রার্থী।

1 Answer

+1 vote
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো কোন গুনাহের কাজের প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করা জায়েজ নয়। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিবাহ পূর্ব প্রেম ভালোবাসায় কৃত কোনো ওয়াদা পালন করা জরুরি নয়।  

শরীয়ত বলে যে গোনাহের কর্মের কোন প্রতিশ্রুতিই পূর্ণ করা আবশ্যক নয়।
এমন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে কোনো গুনাহ হবেনা। 

وَلَا تَجْعَلُوا اللَّهَ عُرْضَةً لِّأَيْمَانِكُمْ أَن تَبَرُّوا وَتَتَّقُوا وَتُصْلِحُوا بَيْنَ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ [٢:٢٢٤

আর নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না মানুষের সাথে কোন আচার আচরণ থেকে পরহেযগারী থেকে এবং মানুষের মাঝে মীমাংসা করে দেয়া থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সবকিছুই শুনেন ও জানেন। {সূরা বাকারা-২২৪}

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم– « مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَلْيَأْتِ الَّذِى هُوَ خَيْرٌ وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কিছুর কসম খায়, তারপর এর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখে, তাহলে সে যেন উক্ত কল্যাণধর্মী কাজটি করে এবং স্বীয় কসমের কাফফারা প্রদান করে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৩৬২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৩৫২,৪৩৪৭, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৯৩১, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং-১৮২৫১, মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-৫১৬, মুসনাদে ইবনুফ জিদ, হাদীস নং-১৩৬, মুসনাদে তায়ারিসী, হাদীস নং-১৩৭০, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪৫৭, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৩৪৫, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৭২৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৮৬৩৪, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২১০৮, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬২৪৭}
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে রিতুকে বিবাহ না করলে কোনো গুনাহ হবেনা।

তবে শরীয়তের বিধান হলো অবৈধ প্রেমের ক্ষেত্রে    যদি তার কোনো হক নষ্ট করা হয়,তাহলে তার কাছ থেকে অবশ্যই ক্ষমা  চেয়ে নিতে হবে,নতুবা মহান আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেননা।
কারন এটি বান্দার হক।

একজন অবেলা মেয়েকে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে তার হক নষ্ট (,,,,,) করা। তারপর  তাকে ভুলে যাওয়া কোন ভাল কাজ নয়। তাই এহেন অবস্থা কাহারো হলে উক্ত মেয়েকেই বিয়ে করে ফেলা উচিত।

শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রেম হারাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ২য় মহিলার সাথে যেহেতু সে ৩ বার যেনা করেছে,আর উক্ত মেয়েটি যেহেতু আর তাকে ক্ষমা করতে চাচ্ছেনা, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে   তাকেই (বৃষ্টিকেই) বিবাহ করা উচিত।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
JazakAllahu Khair

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...