জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পূর্বের কিছু ফতোয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে
যদি কাহারো কোন ওযরের কারনে বা ঘুমের কারনে কোন ওয়াক্তের নামাজ কাযা হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য সুযোগ হওয়ার সাথে সাথে তা আদায় করে নেয়া ওয়াজিব নয়, বরং বিলম্ব করা জায়েয আছে।
তবে নিষিদ্ধ সময়ে আদায় করা যাবেনা।
নিষিদ্ধ সময় সংক্রান্ত জানুনঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى
অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২)
শরীয়তে ঈমানের পরই নামাযের স্থান এবং তা ইসলামের স্তম্ভ ও বড় নিদর্শনের একটি। পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদায় করা ফরয। কখনো কোনো ওয়াক্তের ফরয নামায ছুটে গেলে কিংবা দীর্ঘকাল অবহেলাবশত নামায না পড়লে পরবর্তীতে এর কাযা আদায় করতে হবে। এ বিষয়টি সহীহ হাদীস, আছারে সাহাবা ও ইজমায়ে উম্মত দ্বারা প্রমাণিত।
এখানে কাযা আদায়ের বিধানটি শুধু ঘুম ও বিস্মৃতি এই দুই অবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। বরং অবহেলাবশত ছেড়ে দিলেও কাযা জরুরি।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, যখন তোমাদের কেউ নামাযের সময় ঘুমিয়ে থাকে বা নামায থেকে গাফেল থাকে তাহলে যখন তার বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৬৮৪, ৩১৬)
অন্য হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি নামায রেখে ঘুমিয়ে গেছে বা নামায থেকে গাফেল রয়েছে তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এর কাফফারা হল যখন তার নামাযের কথা স্মরণ হবে তখন তা আদায় করে নেওয়া। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৬১৪)
উপরোক্ত হাদীসসমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, কোনো নামায সময়মতো আদায় না করলে পরবর্তীতে তা আদায় করা অপরিহার্য। নামাযটি ভুলক্রমে কাযা হোক, নিদ্রার কারণে হোক অথবা গাফলতি বা অবহেলার কারণে হোক- সর্বাবস্থায় কাযা আদায় করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দলীল হল, ইজমায়ে উম্মত। চার মাযহাবে চার ইমামসহ প্রায় সকল মুজতাহিদ এ বিষয়ে একমত যে, ফরয নামায নির্ধারিত সময়ে আদায় করতে না পারলে পরে হলেও তা আদায় করতে হবে। ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া কিংবা ওজরবশত ছেড়ে দেওয়া উভয় ক্ষেত্রের একই বিধান।-আলইসতিযকার ১/৩০২
★মুফতী আব্দুল মালেক সাহেব দাঃবাঃ বলেছেন যে
কুয়েতের ইসলামী বিষয় ও ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ইফতা বোর্ডের সম্মিলিত ফাতাওয়াও এটিই।
(দেখুন : মাজমুয়াতুল ফাতাওয়া আশশারইয়্যাহ ১/২০৪)
সুনানে আবু দাউদে হাদীস এসেছে
إن أول ما يحاسب الناس به يوم القيامة من أعمالهم الصلاة، قال يقول ربنا عز وجل لملائكته وهو أعلم انظروها في صلاة عبدي أتمها أم نقصها؟ فإن كانت تامة كتبت له تامة وإن كان انتقص منها شيئا قال انظروا هل لعبدي من تطوع؟ فإن كان له تطوع قال أتموا لعبدي فريضة من تطوعه
কেয়ামতের দিন মানুষের সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে তা হল নামায। আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদেরকে বলবেন, তোমরা আমার বান্দার ফরয নাময দেখো। সে পূর্ণরূপে তা আদায় করেছে, নাকি তা আদায়ে কোনো ত্রুটি করেছে? যদি পূর্ণরূপে আদায় করে থাকে তবে তার জন্য পূর্ণ নামাযের ছওয়াব লেখা হবে। আর আদায়ে কোনো ত্রুটি করে থাকলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদেরকে বলবেন, দেখ, আমার বান্দার নফল নামায আছে কি না? যদি থাকে তবে এর দ্বারা তার ফরয নামায আদায়ে যে ত্রুটি হয়েছে তা পূর্ণ করে দাও। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৮৬৪)
,
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ এর ফাতওয়াও তাই-
المسارعة الى قضاء الفوائت الحثيرة اولى من الأشتغال بالنوافل، واما مع قلة الفوائت فقضاء السنن معها احسن،
অনুবাদ-যদি কাযা নামাযের পরিমাণ অনেক বেশি হয়,ম তবে সুন্নাত নামাযে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে ফরয নামাযসমূহ আদায় করাই উত্তম। আর যদি কাযা নামাযের পরিমাণ কম হয়,তবে ফরযের সাথে সুন্নাত নামায আদায় করলে তা একটি উত্তম কাজ হবে। {ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-২২/১০৪}
.
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেলো যে ওমরি কাজা আদায় করতেই হবে।
সহজের লক্ষ্যে উলামায়ে কেরামগন এর পদ্ধতি বলেছেনঃ
এখন একটি হিসেব কষতে হবে যে জীবনে বালেগ/বালেগাহ হওয়ার পর সর্বমোট কত ওয়াক্ত নামাজ কাজা হয়েছে।
,
যদি স্পষ্ট মনে না আসে,তাহলে প্রবল ধারনার ভিত্তিতে একটি হিসেব কষতে হবে।
দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ এবং বিতর মোট ৬ ওয়াক্ত নামাজের হিসেব বের করতে হবে।
প্রতি নামাজের হিসেব লিখে প্রতিদিন সময় বের করে তার কাজা আদায় করবে।(নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত)
,
এই ভাবে মনে মনে নিয়ত করবে যে আমার জীবনের ১ম ফজরের নামাজ যেটার কাজা আমি আদায় করিনি,সেটা আদায়ের নিয়ত করছি।
আমার জীবনের শেষ ফজর নামাজ যেটার কাজা আমি আদায় করিনি,সেটা আদায়ের নিয়ত করছি,,,,,।
,
এবং সাথে সাথে নির্দিষ্ট ওয়াক্তে নামাজ আদায় না করার কারনে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে।
,
এখানে রাকাত বলার প্রয়োজন নেই,ফজর বললেই সেটি যে ""দুই রাকাত ফরজ"" সেটি আপনার কাছে স্পষ্ট।
,
আরো জানুনঃ