আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
290 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (0 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. ফেরেশতারা কি আমাদের ভাষা বুঝে?
২. আমাদের দুই কাধে কি দুইটা ফেরেশতা আছে?  আর কারিন জীন কয়টা আছে?

৩.ফেরেশতা কি জীনের মতো হাজির করা জায় না?

৪. জীন হাজির যারা  করে তারা জীনের সাথে কি ভাষায় কথা বলে?

1 Answer

0 votes
by (711,840 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) ফিরিস্তারা পৃথিবীর সবার ভাষা বুঝেন। 

(২)
েজন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ফিরিস্তা মানুষের সাথে থাকে, এমনকি কবর জগত এবং আখেরাতেও মানুষের সাথে ফিরিস্তা থাকবে। 

(প্রথমত) দুনিয়াতে মানুষের সাথে ফিরিস্তাঃ
মানুষের সৃষ্টির সময়ে মানুষের সাথে ফিরিস্তা 

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। 
عن أنس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : وكَّل الله بالرحم ملَكاً ، فيقول : أي رب نطفة ؟ أي رب علقة ؟ أي رب مضغة ؟ فإذا أراد الله أن يقضي خلقها قال : أي رب ذكر أم أنثى ؟ أشقي أم سعيد ؟ فما الرزق ؟ فما الأجل ؟ فيكتب كذلك في بطن أمه .
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ রেহেমে (মাতৃগর্ভে) একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, হে প্রতিপালক! এটি বীর্য। হে প্রতিপালক! এটি রক্তপিন্ড। হে প্রতিপালক! এটি গোশতপিন্ড। আল্লাহ্ যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান, তখন ফেরেশতা বলে, হে প্রতিপালক! এটি নর হবে, না নারী? এটি দুর্ভাগা হবে, না ভাগ্যবান? তার রিযক্ কী পরিমাণ হবে? তার জীবনকাল কী হবে? তখন (আল্লাহর নির্দেশমত) তার মায়ের পেটে থাকাকালে ঐ রকমই লিখে দেয়া হয়। (সহীহ বোখারী- ৬৫৯৫) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪৩) সহীহ মুসলিম-২৬৪৬


(দ্বিতীয়ত) মানুষের সাথে পাহারায় ফিরিস্তা

قال تعالى :  سوآءٌ منكم مَن أسرَّ القول ومَن جهر به ومَن هو مستخف بالليل وسارب بالنهار . له معقِّبات مِن بين يديه ومِن خلفه يحفظونه من أمر الله  [ الرعد/10-11] .
سَوَاء مِّنكُم مَّنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَن جَهَرَ بِهِ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ بِاللَّيْلِ وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ
لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللّهِ إِنَّ اللّهَ لاَ يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنْفُسِهِمْ وَإِذَا أَرَادَ اللّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلاَ مَرَدَّ لَهُ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ
তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা রা’দ-১০-১১)

ইবেন আব্বাস রাযি বলেন
  أن المعقبات مِن الله هم الملائكة جعلهم الله ليحفظوا الإنسان من أمامه ومن ورائه ، فإذا جاء قدر الله - الذي قدّر عليه أن يقع به من حادث ومصاب ونحوه - تخلوا عنه 
 মানুষের সাথে আল্লাহ হেফাজতের জন্য দুইজন ফিরিস্তা দিয়েছেন, যা তাকদিরে লিখিত নেই, সেই বিপদ থেকে মানুষকে হেফাজত করার জন্য তাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে।

আল্লাহ তা’আলা এই হেফাজতকারী সম্পর্কে অন্যত্র বলেন,
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُم حَفَظَةً حَتَّىَ إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমাদেরকে বলে দিবেন, যা কিছু তোমরা করছিলে। তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। এমন কি, যখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়। ( সূরা আন’আম-৬১)

(তৃতীয়ত) ঐ সমস্ত ফিরিস্তা যারা নেক কাজ এবং গোনাহের কাজে লিখে থাকেন।

প্রত্যেকা মানুষের নেকী এবং বদী লিখার জন্য দুই জন ফিরিস্তা থাকেন, যারা ছোট বড় সকল প্রকার গোনাহ লিখে থাকেন। ডানের ফিরিস্তা নেকি লিখে থাকেন, আর বামের ফিরিস্তা গোনাহ লিখে থাকেন। 
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ
অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে।
كِرَامًا كَاتِبِينَ
সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ।
يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ
তারা জানে যা তোমরা কর।(সূরা ইনফেতার-১০-১২)

আল্লাহ তা’আলা আরোও বলেন,
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ
যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে।
مَا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। ( সূরা ক্বাফ-১৬-১৮)


হযরত আবু উমাম থেকে বর্ণিত, 
عن أبي أمامة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : إن صاحب الشمال ليرفع القلم ست ساعات عن العبد المسلم المخطئ ، فإن ندم واستغفر الله منها ألقاها ، وإلا كتبت واحدة .
رواه الطبراني في " المعجم الكبير " ( 8 / 158 ) .
والحديث : صححه الشيخ الألباني في " صحيح الجامع " ( 2 / 212 ) .

(তাবারানি-৮/১৫৮)


ইবনে কাসির রাহ বলেন,
وقوله :  له معقبات من بين يديه ومن خلفه يحفظونه من أمر الله  أي : للعبد ملائكة يتعاقبون عليه حرس بالليل وحرس بالنهار ، يحفظونه من الأسواء والحادثات ، كما يتعاقب ملائكة آخرون لحفظ الأعمال من خير أو شر ملائكة بالليل وملائكة بالنهار .
فاثنان عن اليمين والشمال يكتبان الأعمال صاحب اليمين يكتب الحسنات وصاحب الشمال يكتب السيئات .
وملكان آخران يحفظانه ويحرسانه ، واحد من ورائه وآخر من قدامه .
فهو بين أربعة أملاك بالنهار وأربعة آخرين بالليل . " تفسير ابن كثير " ( 2 / 504 ) .

এক জন মানুলের সাথে সর্বমোট চার জন ফিরিস্তা থাকে, দুইজন আ’মল নামা লিখক, আর দুইজন সংরক্ষণকারী। একজন সামনে এবং একজন পিছনে। 
(তাফসীরে ইবনে কাসির-২/৫০৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক জন মানুলের সাথে সর্বমোট চার জন ফিরিস্তা থাকে, দুইজন আ’মল নামা লিখক, আর দুইজন সংরক্ষণকারী। একজন সামনে এবং একজন পিছনে। তাছাড়া প্রত্যেক মানুষের সাথে একটি কারিন বা দুষ্ট জ্বীন থাকে, যা শয়তানের এক প্রকার।

(৩) না ফিরিস্তাদেরকে জ্বীনের মত হাজির করা যায় না। 

(৪)
জ্বীন যে মানুষের উপর ভর করে হাজির হয়, তার ভাষাতেই সে কথা বলে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...