আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
376 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (49 points)
১. আমাদের বাড়িওয়ালার বাড়ি বানানোর জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় যারা যারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে চায় তাদের থেকে ভাড়া দেওয়ার আগে টাকা নিয়েছে।  এখানে শর্ত ছিলো- যে যত টাকা দিতে পারবে তার জন্য ১লক্ষে ১ হাজার টাকা ভাড়া মওকুফ করা হবে। আমরা ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছি, এই টাকা দিয়ে উনি বাড়ি বানানোর কাজ করিয়েছেন এবং বিনিময়ে আমাদের বাসা ভাড়া ৮০০০ টাকা কমিয়ে দিয়েছেন।  আর এই শর্ত ৩ বছরের জন্য মানে যেদিন তারা ৮ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়ে দিবে সেদিন আমাদেরকে নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া দিতে হবে ( মানে ১৬০০০ টাকা দিতে হবে)। এভাবে প্রত্যেক ফ্ল্যাটের জন্য উনি ভাড়াটিয়াদের থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি বানানো কমপ্লিট করেছেন। এখানে কি সুদ হবে? আর সুদ যদি হয় তাহলে করণীয় কি কারণ আমরা ২ বছর ধরে এই বাসায় থাকছি

1 Answer

0 votes
by (681,640 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই জানা প্রয়োজন সূদ (রিবা) কি? সূদ (রিবা) কাকে বলে? আরবী ‘রিবা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হ’ল বৃদ্ধি, অতিরিক্ত, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি। অবশ্য এর অর্থ এই নয় যে, ইসলামে সব ধরনের বৃদ্ধি বা প্রবৃদ্ধিকে হারাম বা নিষিদ্ধ গণ্য করা হয়েছে। 

শরী’আতে রিবা বলতে ঐ অর্থকে বোঝায়, যা ঋণের শর্ত হিসাবে মেয়াদ শেষে ঋণগ্রহীতা মূল অর্থসহ অতিরিক্ত অর্থ ঋণদাতাকে পরিশোধ করতে বাধ্য হয়।

ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহঃ বলেন, জাহেলী যুগে আরববাসী সকলেরই রিবা সম্বন্ধে জানা ছিল এবং তাদের মধ্যে এটি বহুল প্রচলিতও ছিল। সে যুগেও তারা প্রথাসিদ্ধভাবে ঋণ দিত এবং শর্ত অনুসারে তার উপর মাসে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আদায় করত, কিন্তু আসলের পরিমাণ থাকত অপরিবর্তিত। যখন ঋণের মেয়াদ শেষ হ’ত এবং ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হ’ত তখন সূদ বাড়িয়ে দেওয়ার শর্তে পরিশোধের সময়ও বাড়িয়ে দেওয়া হ’ত {তাফসীরুল কাবীর}।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠] 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০] 

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

আরো জানুনঃ 
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বাড়ি ওয়ালা আপনাদের পূর্ণ ৮ লক্ষ টাকা ঠিকই পরিশোধ করবে,এই টাকা শোধের আগ পর্যন্ত আপনাদের ভাড়া দিতে হবে অর্ধেক টাকা করে।
,
যেদিন বাড়ি ওয়ালা আপনাদের দেওয়া ঋনের পূর্ণ ৮ লক্ষ টাকা ফেরত দিবে,সেই মাস থেকে আপনাদের ভাড়া ১৬০০০ টাকা করে দিতে হবে।
,
তার মানে ঐ ঋনের ৮ লক্ষ  টাকা পরিশোধের আগ পর্যন্ত লাভ হিসেবে আপনাদের অর্ধেক বাসা ভাড়া (৮০০০ টাকা) দিতে হচ্ছেনা। 
এটি আপনারা লাভ পাচ্ছেন।
যেটি স্পষ্ট সূদ।
,
আপনাদের জন্য করনীয় হলো নিয়ম অনুযায়ী যেই ভাড়া আসে,শুরু থেকেই সেই ভাড়া দেওয়া।
অর্থাৎ শুরু থেকেই ১৬০০০ টাকা করেই বাসা ভাড়া দেওয়া।
,
এখন পর্যন্ত যেহেতু সেভাবে দেননি,তাই এই দুই বছরের প্রতিমাসের ৮ হাজার টাকা করে হিসেব করে বাসা ওয়ালাকে তাহা ফিরিয়ে দেওয়া। 
,
দুই বছর = ২৪ মাস।
৮০০০×২৪= ১৯২০০০ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে।
এবং এখন থেকেও সম্পূর্ণ মাসের ভাড়া দিতে হবে। 
,
অথবা বাসা ওয়ালা যেদিন আপনাদের ৮ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে আসবে,সেদিন আপনাদের প্রতিমাসের ৮০০০ টাকা করে হিসেব করে যত টাকা আসে,সেটি মাইনাস করতে হবে।
বাকি টাকা আপনারা নিবেন।
,
যদি তিনি আপনাদের থেকে এটা না নেন,তাহলে সেই পরিমান টাকা গরিব মিসকিনদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে।
,
নতুবা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
শক্ত আযাবের সম্মুখীন হতে হবে।    
,
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 90 views
...