আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
270 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)

১. আল্লাহকে নিয়ে অশ্লীল চিন্তা করা কোন ধরনের গুনাহ? এর উত্তরে মুফতি ইমদাদুল হক বলেছেন, "আল্লাহকে নিয়ে অশ্লীল চিন্তা করা কবিরা গোনাহ ও কুফরি । সাথে সাথেই ঈমান চলে যাবে।" আবার, "আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে কোনো মুসলিম যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মনে মনে অশ্লীল কিছু্ ভাবে তবে সে আর মুসলমান থাকবে কি না?" এই প্রশ্নের উত্তরে মুফতি ওলি উল্লাহ বলেছেন, "আল্লাহর তা’আলার ব্যাপারে যদি কোনো মুসলিম ইচ্ছাকৃতভাবে মনে মনে অশ্লীল কিছু্ ভাবে, তবে সাথে সাথে তাওবাহ করে নেয়, এবং কারো সামনে প্রকাশ না করে, তাহলে তার ঈমান চলে যাবে না। কিন্তু যদি সে ভাবতেই থাকে, এই ভাবনার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখে, এবং মনে মনে তার ভাবনাকে সত্য মনে করে থাকে, তাহলে তার ঈমান চলে যাবে।" কোনটা ঠিক তাহলে? আমার প্রশ্ন হলো, আল্লাহকে নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অশ্লীল চিন্তা করা কোন ধরনের গুনাহ? এর জন্য কখনো ঈমান চলে যাবে কি এবং কখন ঈমান চলে যাবে?

২. ধরুন কোনো ব্যক্তি মুরতাদ অবস্থায় সহবাস করলো এবং সহবাসজনিত কারণে তার মনি ও মযী বের হয়ে গেলো। ওই ব্যক্তি সহবাসের কারণে মনি ও মযি বের হওয়ার পর গোসল করে নি। এরপর যদি সেই ব্যক্তি মুসলমান হয় তাহলে কি সে মনি ও মযী বের হওয়ার কারণে ফরজ গোসল করবে নাকি মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয় সেটা করবে?

৩. ধরুন কোনো ব্যক্তি মুসলমান অবস্থায় সহবাস করলো এবং সহবাসজনিত কারণে তার মনি ও মযী বের হয়ে গেলো। ওই ব্যক্তি সহবাসের কারণে মনি ও মযি বের হওয়ার পর গোসল করে নি। এরপর সে ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে গেলো এবং পরবর্তীতে সেই ব্যক্তি মুসলমান হলো। তো এবার তাহলে কি সে মনি ও মযী বের হওয়ার কারণে ফরজ গোসল করবে নাকি মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয় সেটা করবে?

৪. ধরুন কোনো ব্যক্তি মুরতাদ অবস্থায় সহবাস করলো এবং সহবাসজনিত কারণে তার মনি ও মযী বের হয়ে গেলো। ওই ব্যক্তি সহবাসের কারণে মনি ও মযি বের হওয়ার পর গোসল করে নি। এরপর সে ব্যক্তি মুসলমান হয়ে গেলো এবং তারপর সেই ব্যক্তি আবার মুরতাদ হলো। তো এবার যদি সেই ব্যক্তি মুসলমান হয় তাহলে কি সে মনি ও মযী বের হওয়ার কারণে ফরজ গোসল করবে নাকি মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয় সেটা করবে?

৫. নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা যাবে না এটা জেনেও যদি কেউ নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে কি? কুরআনের অবমাননার উদ্দেশ্য না নিয়ে যদি কেউ কুরআন পায়ের নিচে রাখে তবে সে কাফের হয়ে যাবে কি?

৬. মনে মনে ইচ্ছাকৃতভাবে শিরকমূলক কথা বললে কি কেউ ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়?

প্রশ্নগুলো অদ্ভুত মনে হতে পারে কিন্তু জানার দরকার ছিলো।

আল্লাহ আপনার এ কষ্টের উত্তম প্রতিদান দিক।

1 Answer

0 votes
by (709,320 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
উভয় কথা মাঝে কোনো পার্থক্য নাই।মুফতী ওলী উল্লাহ সাহেব বলেছেন,তাওবাহ করে নিলে সে কাফির হবে না,অর্থাৎ তার ঈমান বহাল থাকবে,অর্থাৎ সাথে সাথেই তাওবাহ করে নিলে, তার ঈমান বহাল থাকবে। কেননা সাথে সাথে তাওবাহ করার অর্থই হচ্ছে, সে অনিচ্ছাকৃত এমনটা বলছে। 
আর আমি বলেছিলাম যে,ঈমান থাকবে না,সাথে সাথেই ঈমান চলে যাবে,আমি বলেছিলাম এজন্য যে,যেহেতু সে ইচ্ছাকৃত বলছে,তাহলে সে তাওবাহ করবে না। তাই তার ঈমান চলে যাবে। কেননা ইচ্ছাকৃত বলার পর সাধারণত সাথে সাথেই তাওবাহ করবে না। 

এবং এটাই যুক্তিসম্মত যে,যে ইচ্ছাকৃত এমনটা করবে,সে কখনো তাওবাহ করবে না।

(২)
মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল হয়,সেটাই সে করবে।

(৩)
মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয়,সে সেটাই করবে।
(৪)
এক্ষেত্রেও সেব্যক্তি মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয়,সে সেটাই করবে।

(৫)
নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা যাবে না এটা জেনেও যদি কেউ নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করে নেয়, তাহলে সে গোনাহগার হবে,তবে কাফের হবে না। 
কুরআনের অবমাননার উদ্দেশ্য না নিয়ে যদি কেউ কুরআন পায়ের নিচে রাখে,তাহলে সে গোনাহের কাজ করেছে, তবে সে কাফের হবে না।
(৬)হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﺭَﺑَّﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟْﻴَﻨْﺘَﻪِ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺴﻠﻢ : ( ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻠﻪ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,শয়তান তোমাদের কারো নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা কে বানিয়েছে?ওটা কে বানিয়েছে?শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে, খোদা-কে বানিয়েছে? যখন এমন অবস্থায় কেউ পতিত হবে,সে যেন আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।এবং সাথে সাথে সে যেন উক্ত বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকে।এক বর্ণনায় এসেছে সে যেন আ'মানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি পড়ে নেয়।(সহীহ বোখারী-৩১০২,সহীহ মুসলিম-১৩৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মনে মনে ইচ্ছাকৃতভাবে শিরকমূলক কথা বললে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। হ্যা অনিচ্ছায় মনের মধ্যে চলে আসলে সে কাফির হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (37 points)
"অন্তরে এ বিষয়ে ধীর আকিদা বিশ্বাস রাখলে" এ কথার অর্থ কি?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...