ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
উভয় কথা মাঝে কোনো পার্থক্য নাই।মুফতী ওলী উল্লাহ সাহেব বলেছেন,তাওবাহ করে নিলে সে কাফির হবে না,অর্থাৎ তার ঈমান বহাল থাকবে,অর্থাৎ সাথে সাথেই তাওবাহ করে নিলে, তার ঈমান বহাল থাকবে। কেননা সাথে সাথে তাওবাহ করার অর্থই হচ্ছে, সে অনিচ্ছাকৃত এমনটা বলছে।
আর আমি বলেছিলাম যে,ঈমান থাকবে না,সাথে সাথেই ঈমান চলে যাবে,আমি বলেছিলাম এজন্য যে,যেহেতু সে ইচ্ছাকৃত বলছে,তাহলে সে তাওবাহ করবে না। তাই তার ঈমান চলে যাবে। কেননা ইচ্ছাকৃত বলার পর সাধারণত সাথে সাথেই তাওবাহ করবে না।
এবং এটাই যুক্তিসম্মত যে,যে ইচ্ছাকৃত এমনটা করবে,সে কখনো তাওবাহ করবে না।
(২)
মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল হয়,সেটাই সে করবে।
(৩)
মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয়,সে সেটাই করবে।
(৪)
এক্ষেত্রেও সেব্যক্তি মুসলমান হওয়ার জন্য যে গোসল করতে হয়,সে সেটাই করবে।
(৫)
নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা যাবে না এটা জেনেও যদি কেউ নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করে নেয়, তাহলে সে গোনাহগার হবে,তবে কাফের হবে না।
কুরআনের অবমাননার উদ্দেশ্য না নিয়ে যদি কেউ কুরআন পায়ের নিচে রাখে,তাহলে সে গোনাহের কাজ করেছে, তবে সে কাফের হবে না।
(৬)হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﺭَﺑَّﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟْﻴَﻨْﺘَﻪِ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺴﻠﻢ : ( ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻠﻪ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,শয়তান তোমাদের কারো নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা কে বানিয়েছে?ওটা কে বানিয়েছে?শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে, খোদা-কে বানিয়েছে? যখন এমন অবস্থায় কেউ পতিত হবে,সে যেন আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।এবং সাথে সাথে সে যেন উক্ত বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকে।এক বর্ণনায় এসেছে সে যেন আ'মানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি পড়ে নেয়।(সহীহ বোখারী-৩১০২,সহীহ মুসলিম-১৩৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মনে মনে ইচ্ছাকৃতভাবে শিরকমূলক কথা বললে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। হ্যা অনিচ্ছায় মনের মধ্যে চলে আসলে সে কাফির হবে না।