ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
হযরত শীছ (আঃ) আদম (আঃ)-এর তৃতীয় পুত্র সন্তান। হাবীলের মৃত্যুর পর আল্লাহ তা‘আলা শীছ (আঃ)-কে (যমজের বদলে) একক সন্তান হিসাবে দান করেন। সেজন্য তার নাম রাখা হয় শীছ। অর্থ আল্লাহর দান। তাঁর বংশধারায় আজকের পৃথিবীর সকল মানুষ বলে একদল বিদ্বান মত পোষণ করেন (ইবনু কাছীর, আল-বেদায়াহ ১/১০৯; ইবনুল আছীর, আল কামেল ফীত তারীখ ১/১৭)।
শেষ জীবনে শীছ (আঃ) রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে পুত্র আনূশকে ডেকে তিনি অছিয়ত করেন। অতঃপর মক্কাতেই ৯১২ বৎসর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। অতঃপর আবু কুবায়েস পাহাড়ের গুহায় স্বীয় পিতা-মাতার পাশেই তাঁকে দাফন করা হয় (ইবনুল আছীর, আল কামেল ফিত-তারীখ ১/১৭)।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
পূর্ববর্তী ইতিহাস তথা ইসরায়েলী বর্ণনা দ্বারা জানায় যায়, উনি রাসূল ছিলেন, উনার উপর পুস্তিকা বা সহিফা নাযিল হয়েছিলো। তবে কুরআনে উনার সম্পর্কে কিছু আসেনি।
(২)
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ
ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল।( সূরা আর-রাহমান-২৬)
আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুই ধংসশীল, এমন আকিদা আমাদের সাবইকে রাখতে হবে। শক্তির কোনো শেষ নেই এমন আকিদা রাখা যাবে না। বরং আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুই ধংস হবে। হ্যা কিছু শক্তির সাময়িক রূপান্তর হতে পারে। তবে স্থায়ীভাবে কোনো শক্তিই রূপান্তর হবে না। বরং একদিন না একদিন তা শেষ হয়ে যাবে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শক্তির সাময়িক রূপান্তর হতে পারে। তবে স্থায়ী ভাবে রূপান্তর হবে না।
(৩)
হাদীসে আত্মহত্যার ভয়াবহ শাস্তির কথা এসেছে,হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
عَنْ أبي هريرة , عَن النبي – صلى الله عليه وسلم – قال : من تردى من جبل , فقتل نفسه , فهو في نار جهنم يتردى فيها خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن تحسى سما , فقتل نفسه , فسمه في يده يتحساه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن قتل نفسه بحديدة , ثم انقطع علي شيء , يعني خالدا , كانت حديدته في يده يجأ بها في بطنه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরদিন সে জাহান্নামের মধ্যে অনুরূপভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে, যে ব্যক্তি লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের মধ্যে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তার দ্বারা নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৪৪২, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১৯৬৪}
এ হাদীস দ্বারা যদিও আত্মহত্যাকারী চিরস্থায়ী জাহান্নামী বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি আসলে এমন নয়। বরং আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি যদি ঈমানদার হয়, আর ঈমানের সাথেই যদি মৃত্যুবরণ করে থাকে, তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে না। চিরস্থায় জাহান্নামী হবে কেবল কাফের-মুশরিকরা। কোন মুসলমান চিরস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে না। তবে দীর্ঘস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে। এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্যও এটাই। আরবের পরিভাষায় خالدا مخلداশব্দ, যার অনুবাদ করা হয়, “চিরকাল”মূলত এর দ্বারা আরবের লোকেরা কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী অবস্থাকে বুঝিয়ে থাকেন। উক্ত হাদীসেও উদ্দেশ্যও দীর্ঘস্থায়ী হওয়া। চিরস্থায়ী হওয়া নয়। [দ্রষ্টব্য শরহু সহীহিল বুখারী লিইবনে বাত্তাল, উমদাতুল কারী}
(৪)
এটা নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে। ধারণা করা হয় যে, নবী নুহ আঃ এর জামানা থেকে শিরিক শুরু হয়।
(৫)
এমন কিছুর বিত্তি শরীয়তে নাই। যে মারা পড়বে, তাকে কখনো আর দেখা যাবে না।
(৬)
”যেই ব্যক্তি দোয়া করল আল্লাহর কাছে আল্লাহ সেটা পূর্বে থেকেই জানতেন যে সেই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন এবং আল্লাহতালা তার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিবেন এটাও আল্লাহ তাআলা পূর্বে থেকেই লিখে রেখেছিলেন ”
একথা বিশুদ্ধ।