আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
433 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম

এক ভাইয়ের প্রশ্ন-

" আমি ক্লাস 9 থেকে আল্লাহর রহমতে নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের চেষ্টা করে আসছি। কিন্তু নিয়মিত মসজিদে যাওয়া হয়ে উঠে না। সম্প্রতি আল্লাহর অশেষ কৃপায় এক দ্বীনি ভাইয়ের ঈমানদীপ্ত লেকচার শুনে চেষ্টা করছি মসজিদে নিয়মিত হওয়ার কিন্তু... এখানেই বাধা আসলো পরিবার থেকে। বাবা ও মা (আল্লাহ তাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন) উভয়েই বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। আল্লাহর অশেষ কৃপায় সুস্থ হয়েছেন কিছুদিন হলো। আমিও বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম। এখন তাদের ভয় হচ্ছে আমি যে নিয়মিত সালাত আদায় করতে মসজিদে যেতে চাচ্ছি আল্লাহ না করুন তাতে যদি আমার সাথে করোনা ভাইরাস ঘরে ঢুকে পড়ে আবার আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে যাই । মূলত এই চিন্তাভাবনা থেকেই তারা মসজিদে যেতে বাধা দিচ্ছেন (উল্লেখ্য, বাবা ও মা উভয়েই ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন নিয়মিত )। তাছাড়া আমারও এলার্জি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে। এমতাবস্থায় আমার জন্য উত্তম করণীয় কি হবে বলে আপনারা মনে করেন? বাবা-মার কথা মেনে বাসায়ই ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে যাবো নাকি মসজিদে জামাতের সাথে সালাত চালিয়ে যাবো? "

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


ফরয নামাযের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য শরীয়তের বিধান হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা। কোনো শরয়ী ওযর ব্যতীত মসজিদের জামাত তরক করা জায়েয নেই।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-

لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ.

আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫

হযরত ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন-

إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.

নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হেদায়েতের তরীকাগুলো শিখিয়েছেন। হেদায়েতের এই তরীকাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে আযান হয় সেখানে নামায আদায় করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এ-ও ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কাল (হাশরের ময়দানে) ‘মুসলিম’ অবস্থায় আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে চায় তার উচিত এই নামাযগুলো মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করা।

(مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللهَ غَدًا مُسْلِمًا، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ)

তারপর তিনি বলেন-

فَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّهُنَّ منْ سُنَن الْهُدَى، وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ، لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ.

কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়েতের পথ সুনির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর এই নামাযগুলো মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা এই হেদায়েতের পথসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যদি তোমরা ঘরে নামায পড়তে থাক যেভাবে পিছিয়ে থাকা লোক (মুনাফিক) ঘরে নামায আদায় করে তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর নবীর পথ ছেড়ে দিলে তো তোমরা গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৬

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.

অর্থাৎ একাকী নামায পড়া অপেক্ষা জামাতে নামায আদায় করা সাতাশ গুণ বেশি ফযীলতপূর্ণ। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৭৫

মসজিদে সরকারের বেধে দেওয়া নিয়ম মানা হচ্ছেনা বলে মসজিদে নামাজ না পড়ে বাসায় নামাজ পড়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করছিনা।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার এলাকার অবস্থা যদি তেমন শোচনীয় না হয়,তাহলে বাড়িতে নামাজ না পড়ে মসজিদেই নামাজ পড়ুন।

বিস্তারিত জানুনঃ
,
★ প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার এলাকার অবস্থা শোচনীয় না হলে মসজিদেই নামাজ পড়বেন,স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারেন,মাস্ক পড়ে আসতে পারেন, ফাকা ফাকা হয়ে দাড়াতে পারেন।

,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আজকে (৫ ই এপ্রিল ২০২১) যেহেতু ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মসজিদে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।
,

★বর্তমান পরিস্থিতিতে কোথাও যদি স্বাস্থ্যবিধি কে অনুসরণ না করা হয়।এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও সচেতন ভূমিকা না রাখে,তাহলে এক্ষেত্রে ঘরে নামায আদায় রুখসত রয়েছে।মাতাপিতার আদেশকে ফলো করা যেতে পারে।কেননা ঘরে জামাতে নামায আদায় করে নিলেই জামাতের হক্ব আদায় হয়ে যাবে।নতুবা মসজিদেই জামাত পড়তে হবে।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...