আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
307 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমার স্বামী বেকার। আমরা ২ জন ই স্টুডেন্ট। আমার শশুর একজন অধ্যাপক। আমার ননদ স্টুডেন্ট প্লাস টিউশনি করে। মোটামুটি আমার শশুর এর এতটুক টাকা পয়সা আছে যে সে নিজের টাকায় নিজে ই ভালো ভাবে চলতে পারবে তিনি আরও ৭ বছর চাকুরী করতে পারবেন। প্লাস মোটামুটি ব্যাংক ব্যালেন্স আছে। এর পর ও তিনি তার বড় ছেলে কে সংসার এর খরচ দেয়ার জন্য জোর করে, মেয়ে কে সংসার এর খরচ দেয়ার জন্য জোর করে। আমার হাজব্যান্ড ইন শা আল্লাহ একটা চাকুরীর অফার পেয়েছ। ২০০০০ টাকা বেতন ধারণ করা হয়েছে। এই বিশ হাজার টাকা থেকে ১২/১৫ হাজার থাকা খাওয়া তে চলে যাবে কারন আমি আরা হাজব্যান্ড একসাথে  সেপারেট থাকবো।বাসা ভাড়া তেই ৭/৭৫০০/৮ হাজার টাকা চলে যাবে। খাওয়া খরচ তো আছে ই। ১৫ হাজার এখানে ই চলে যাবে। বাকি ৫০০০ টাকা থেকে কিছু সনচয় করা খুব দরকার কারন আমাদের কে পরিবারের কেউ ই কোনো সাহায্য করবে না। বলে রাখা ভালো আমার শাশুড়ি পরিবারে খুব ফেতনা সৃষ্টি করে। এতো ই ফেতনা যে আমরা আলাদা থাকার চেষ্টা করতেছি। এখন এমনবস্থা তে যেখানে আমার শশুর নিজের টাকায় চলার ক্ষমতা রাখে প্লাস আরো সন্তান দের কে বাধ্য করে টাকা দিতে সেখান কি শারিয়াহ অনুযায়ী আমাদের বাবা মায়ের খরচ দেয়া ফরজ?  পরিবারে টাকা দিতে গেলে আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য কোনো প্রস্তুতি নিতে পারবো না প্লাস সঞ্চয় করতে পারবো না।, চিকিৎসার জন্য টাকা জোগান করে রাখতে পারবো না। প্লাস আমার হাজব্যান্ড আমার হক ও পালন করতে পারবেন না।
এমন অবস্থা তে শারীয়া কি  বলে? তার জন্য কি বাধ্য এখন তাদের দায়িত্ব ভাড় নেয়া???

1 Answer

0 votes
by (588,660 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সন্তানের মালে পিতার হক্ব ও অধিকার রয়েছে, সম্পর্কে একটি হাদীস শুনুন।হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত, 
ﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻥَّ ﺭَﺟُﻼ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻥَّ ﻟِﻲ ﻣَﺎﻻ ﻭَﻭَﻟَﺪًﺍ ﻭَﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﺘَﺎﺡَ ﻣَﺎﻟِﻲ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﻣَﺎﻟُﻚَ ﻷَﺑِﻴﻚَ
এক ব্যক্তি এসে নবীজী সাঃ কে বলল,আমার মাল আছে এবং সন্তানাদিও আছে।এখন আমার পিতা আমার মাল নিয়ে নিতে চায়। নবীজী সাঃ তদুত্তরে বললেনঃতুমি এবং তোমার মাল, তোমার পিতার জন্য বৈধ।অর্থ্যাৎ তোমার মালে তোমার পিতার হক্ব রয়েছে।(ইবনে মাজা ২২৯১,সহীহ ইবনে হিব্বান-২২৯২,মুসনাদে আহমাদ-৬৯০২)

সন্তানের উপর পিতা-মাতার খোরপোষ কখন ওয়াজিব হবে?
(وَ) تَجِبُ (عَلَى مُوسِرٍ) وَلَوْ صَغِيرًا (يَسَارَ الْفِطْرَةِ) عَلَى الْأَرْجَحِ وَرَجَّحَ الزَّيْلَعِيُّ وَالْكَمَالُ إنْفَاقَ فَاضِلِ كَسْبِهِ.
গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী সচ্ছল, নেসাব পরিমাণ মালের মালিক সন্তানের উপর উপর মাতা-পিতার নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে।ইমাম যাইলায়ী, ও আল-কামাল রাহ. দৈনন্দিন রোজগারের অতিরিক্ত উপার্জনকে (পিতা-মাতার জন্য খরছ করবে অন্য কিছু নয়) অগ্রাধিকার দেন।(দুর্রুল মুখতার৩/৬২১)

অন্যত্র এসেছে,
إلَّا إذَا كَانَ الْأَصْلُ زَمِنًا لَا كَسْبَ لَهُ، فَلَا يُشْتَرَطُ سِوَى قُدْرَةِ الْوَلَدِ عَلَى الْكَسْبِ
কিন্তু যদি পিতা-মাতা বার্ধক্যর ধরুণ দুর্বল,রোগগ্রস্ত হন।যদ্দরুন উপার্জন করতে অক্ষম হন।তাহলে সন্তান উপার্জন সক্ষম হলেই তার উপর পিতা-মাতার নাফক্বাহ দেওয়া ওয়াজিব।
এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (খঃ৪১/পৃঃ ৭৫) বর্ণিত রয়েছে....

يُشْتَرَطُ لِوُجُوبِ الإِْنْفَاقِ عَلَى الأُْصُول مَا يَأْتِي
নিম্নবর্ণিত মূলনীতির আলোকে নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে।
أ - أَنْ يَكُونَ الأَْصْل فَقِيرًا أَوْ عَاجِزًا عَنِ الْكَسْبِ، فَلاَ يَجِبُ عَلَى الْفَرْعِ نَفَقَةُ أَصْلِهِ إِنْ كَانَ أَصْلُهُ غَنِيًّا أَوْ قَادِرًا عَلَى الْكَسْبِ، لأَِنَّهَا تَجِبُ عَلَى سَبِيل الْمُوَاسَاةِ وَالْبِرِّ، وَالْقَادِرُ عَلَى الْكَسْبِ كَالْمُوسِرِ مُسْتَغْنٍ عَنِ الْمُوَاسَاةِ
(ক)পিতা-মাতা সহ সমস্ত উসূল বা মূল জ্বড়(বাপ-দাদা তার এবং উপরের জন) গরিব, উপার্জনে অক্ষম হওয়া শর্ত।সুতরাং উসূল ধনী বা উপার্জনে সক্ষম অবস্থায় ফুরু' বা সন্তানাদির উপর না নাফক্বাহ দেওয়া ওয়াজিব হবেনা।তখন নেকী অর্জন ও আত্মীয়তার বন্ধনকে দৃঢ়তর করতে নাফক্বাহকে ওয়াজিব করা হবে।(যাকে মুস্তাহাব বলা যাবে)
ب - أَنْ يَكُونَ الْفَرْعُ مُوسِرًا وَهَذَا بِاتِّفَاقِ الْفُقَهَاءِ، أَوْ قَادِرًا عَلَى التَّكَسُّبِ وَهُوَ مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الْحَنَابِلَةُ وَهُوَ الأَْصَحُّ عِنْدَ الشَّافِعِيَّةِ، وَالرِّوَايَةُ الَّتِي جَزَمَ بِهَا صَاحِبُ الْهِدَايَةِ عِنْدَ الْحَنَفِيَّةِ (٣) ، وَأَنْ يَكُونَ فِي مَالِهِ أَوْ كَسْبِهِ فَضْل عَنْ نَفَقَةِ نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَامْرَأَتِهِ، فَإِنْ لَمْ يَفْضُل مِنْهُ شَيْءٌ لاَ تَجِبُ عَلَيْهِ النَّفَقَةُ
(খ) ফারা' বা সন্তানাদি ধণী হওয়া। এটা সমস্ত উলামায়ে কেরামদের অভিমত।(আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়-৪১/৭৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/3712

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনার স্বামীর পিতা বিত্তবান অন্যদিকে আপনার স্বামীর বেতনের বেচে যাওয়া অবশিষ্ট টাকা নিতান্তই কম ও স্বল্প। তাই আপনার স্বামীর জন্য পিতাকে টাকা দেওয়া জরুরী হবে না। তবে সর্বদা আপনার স্বামী তার মাতাপিতার সাথে উত্তম আচরণকে অব্যাহত রাখবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (20 points)
জরুরী হবে নাকি হবে না? কোনটা বুঝাচ্ছেন?
by (588,660 points)
+1
জ্বী সংযোজন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...