ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
দু'আ অন্যান্য ইবাদতের ন্যয় একটি ইবাদত। হযরত নু'মান বিন বশির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে
ﻋﻦ ﺍﻟﻨﻌﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺑﺸﻴﺮ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻫﻮ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﺛﻢ ﻗﺮﺃ ﻭﻗﺎﻝ ﺭﺑﻜﻢ ﺍﺩﻋﻮﻧﻲ ﺃﺳﺘﺠﺐ ﻟﻜﻢ ﺇﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺴﺘﻜﺒﺮﻭﻥ ﻋﻦ ﻋﺒﺎﺩﺗﻲ ﺳﻴﺪﺧﻠﻮﻥ ﺟﻬﻨﻢ ﺩﺍﺧﺮﻳﻦ
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺳﻨﻦ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺪﻋﻮﺍﺕ » ﺑﺎﺏ ﻣﻨﻪ
নবীজী সাঃ বলেন, দু'আ-ই একটি ইবাদত।অতঃপর নবীজী সাঃ সূরা আল-মু'মিনের ৬০ নং আয়াত তেলাওয়াত করেন।যার ভাবার্থ হল,"তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে লাঞ্ছিত হয়ে দাখিল হবে।{সুনানে তিরমিযি-৩৩৭২}
সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ডাকা, আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে নেয়া,দু'আ করা একজন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।এমনকি হাদীস শরীফে এসেছে যদি কারো জুতার ফিতা খুলে যায় তাহলে যেন সে প্রথমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চায় এবং ফিতা বাধে।নামায,রোযা,হজ্ব,যাকাত,ইত্যাদি পৃথক পৃথক ইবাদত।দু'আ ও একটি ইবাদত,তবে দু'আ নির্দিষ্ট পৃথক কোনো ইবাদত নয় বরং কখনো উপরোক্ত ইবাদত সমূহের সাথে সংযুক্ত হয়ে আসে।আবার দু'আকে পৃথক ভাবেও করা যায়।নামাযের বাইরে এবং নামাযের ভিতরকার পরিচিত ও প্রসিদ্ধ দু'আ-দুরূদ সমূহকে সবাই পড়ে থাকেন এবং সুন্নাত বা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য করে থাকে।
নামাযের ভিতরকার পরিচিত ও প্রসিদ্ধ দু'আ সমূহ ব্যতীত অন্যান্য দু'আ, এবং নিজ প্রয়োজন উল্লেখপূর্বক দু'আ ও নিজ মাতৃভাষায় দু'আ যাবে কি?বা জায়েয আছে কি?
এমন প্রশ্নের জাবাবে বলা যায় যে, নামায দু-প্রকার, ফরয ও নফল।
আমরা নিম্নে দু'আ সম্পর্কে আলোচনা করব। ফরয নামাযে নির্ধারিত প্রসিদ্ধ দু'আ সমূহ ব্যতীত কি অন্যান্য দু'আ করা যাবে? নিজপ্রয়োজন উল্লেখ করে কি দু'আ করা যাবে? নিজ মাতৃভাষায় কি দু'আ করা যাবে? এ সমস্ত প্রশ্নের জবাব খুজতেই আমাদের এ প্রচেষ্টা। আল্লাহ কবুল করুক।আমীন। আসুন প্রথমে নামাযে বর্ণিত দু'আ সমূহ সম্পর্কে আংশিক কিছু ধারণা নিয়ে নেই।
প্রথমে আমরা তন্মধ্যের দু-একটি হাদীসের দিকে আলোকপাত করব।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত, নবীজী সাঃ বলেনঃ
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺗَﺸَﻬَّﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ [ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ : ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺮَﻍَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺘَّﺸَﻬُّﺪِ ﺍﻵﺧِﺮِ ] ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻣِﻦْ ﺃَﺭْﺑَﻊٍ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﻭَﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ ﻭَﺍﻟْﻤَﻤَﺎﺕِ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴﺢِ ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ .
ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ 588
যখন তোমাদের মধ্যে কেউ তাশাহ্হুদ পড়ে নেবে,তখন যেন সে আল্লাহর কাছে চারটি জিনিষ থেকে ক্ষমা চায়,(১)জাহান্নামের আগুন থেকে(২)কবরের আযাব থেকে(৩)জীবিত ও মৃতদের ফিৎনা-ফাসাদ থেকে(৪)দাজ্জালের ফিৎনা থেকে {সহীহ মুসলিম-৫৮৮}
এবং হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﺧْﺒَﺮَﺗْﻪُ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺪْﻋُﻮ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴﺢِ ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ ﻭَﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﺄْﺛَﻢِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻐْﺮَﻡِ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﻗَﺎﺋِﻞٌ ﻣَﺎ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣَﺎ ﺗَﺴْﺘَﻌِﻴﺬُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﻐْﺮَﻡِ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞَ ﺇِﺫَﺍ ﻏَﺮِﻡَ ﺣَﺪَّﺙَ ﻓَﻜَﺬَﺏَ ﻭَﻭَﻋَﺪَ ﻓَﺄَﺧْﻠَﻒَ .. ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ 833
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ নামাযে প্রায় এভাবে দু'আ করতেন।হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে কবরের আযাব থেকে,এবং দাজ্জালের ফিৎনা থেকে, জীবিত ও মৃতদের ফিৎনা-ফাসাদ থেকে,এবং গুনাহ ও ঋণের বোঝা থেকে ক্ষমা চাইতেছি।তখন উপস্থিত একজন নবী করিম সাঃকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আপনাকে ঋণের বোঝা থেকে ক্ষমা চাইতে দেখছি,তখন নবী করিম সাঃ প্রতিউত্তরে বললেন, যখন মানুষ ঋণগ্রস্ত হয় তখন দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে মিথ্যা কথা বলতে থাকে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করতে থাকে।{সহীহ বোখারী-৮৩৩} বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/185
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) নামাযের বিভিন্ন রুকুনে কুরআন হাদীস দ্বারা যে সমস্ত দু’আ বর্ণিত হয়েছে, সেই সমস্ত দু’আ নামায়ে পড়া যাবে। চায় অর্থ নিজের জন্য হোক বা সবার জন্য হোক।
(২)
২.কেরাতে ভুল হইলে সাহু সিজদা লাগবে না।
(৩ ) এ প্রশ্নটি আবার বুঝিয়ে কমেন্ট করবেন। আমীন।