সুরা ইউসুফের ০৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِذۡ قَالَ یُوۡسُفُ لِاَبِیۡهِ یٰۤاَبَتِ اِنِّیۡ رَاَیۡتُ اَحَدَعَشَرَ کَوۡکَبًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ رَاَیۡتُهُمۡ لِیۡ سٰجِدِیۡنَ ﴿۴﴾
অর্থঃ যখন ইউসুফ তার পিতাকে বলল, ‘হে আমার পিতা, আমি দেখেছি এগারটি নক্ষত্র, সূর্য ও চাঁদকে, আমি দেখেছি তাদেরকে আমার প্রতি সিজদাবনত অবস্থায়’।
*স্বপ্নটি ছিল ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।
এই আয়াতের ব্যখ্যায় বলা হয়েছেঃ
ইউসুফ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ”কারীম ইবনে করীম ইবনে কারীম ইবনে কারীম হল ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে ইবরাহীম আলাইহিমুস সালাম। অর্থাৎ চার পুরুষ ধরে সম্মানিত হচ্ছেন ইউসুফ আলাইহিস সালাম। [বুখারীঃ ৩৩৯০, ৪৬৮৮] অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, সবচেয়ে সম্মানিত কে? তিনি বললেনঃ তাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত হল যে বেশী তাকওয়ার অধিকারী। লোকেরা বললঃ আমরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করছি না, তখন তিনি বললেনঃ তাহলে সবচেয়ে সম্মানিত হলেন আল্লাহর নবী ইউসুফ। তার পিতা একজন নবী ছিলেন, আর তার দাদাও একজন নবী, যেমনিভাবে তার পরদাদাও নবী। [বুখারী ৩৩৫০, মুসলিমঃ ২৩৭৮]
,
★ইউসুফ আলাইহিস সালাম তার পিতাকে বললেনঃ পিতা! আমি স্বপ্নে এগারটি নক্ষত্র এবং সূর্য ও চন্দ্রকে দেখেছি। আরো দেখেছি যে, তারা আমাকে সিজদা করছে। এটা ছিল ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর স্বপ্ন। এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ এগারটি নক্ষত্রের অর্থ হচ্ছে ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর এগার ভাই, সূর্য ও চন্দ্রের অর্থ পিতা ও মাতা। তিনি আরো বলেনঃ নবীদের স্বপ্ন ছিল ওহীর নামান্তর। [তাবারী; ইবন কাসীর]
হাদীসে এসেছে, ‘নেক স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন কোন খারাপ স্বপ্ন দেখবে তখন সে যেন তা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং তার বাম দিকে থুথু ফেলে। ফলে সেটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। [বুখারী: ৬৯৮৬]
ইউসুফ (আ.) স্বপ্ন দেখেছেন যে ১১টি নক্ষত্র, সূর্য ও চন্দ্র তাঁর জন্য সিজদাবনত হয়েছে। এর ব্যাখ্যা হলো, অল্প সময়ের ব্যবধানে ইউসুফ (আ.) উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবেন। একপর্যায়ে তাঁর ১১ ভাই ও মা-বাবা সবাই তাঁর অনুগত হবেন।