আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
507 views
in সালাত(Prayer) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম।
দূরবর্তী কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে যেমন ধরেন  ময়মনসিংহ সদর থেকে শেরপুর বাসে বা কোনো চলতি গাড়িতে ২-৩ ঘন্টা নাগাদ টাকা সফরকালে কিভাবে সালাত আদায় করবে?

১) গাড়িতে থাকলে তো বুঝা যায়না কিবলা কোনদিকে। এক্ষেত্রে করণীয় কি?

২) ওজু করে গাড়িতে উঠার পর ওজু ছুটে গেলে চলতি গাড়িতে তো আর ওজু করা যাবেনা ইনফ্যাক্ট তারা গাড়ি থামাবেও না। এক্ষেত্রে কিভাবে ওজু করবো? তখন কি তায়াম্মুম করা যাবে?

৪) মোট কথা ওই অবস্থায় সালাত কিভাবে আদায় করবো জানাবেন প্লিজ।

৫) যদি কসর নামাজের কাতারে পড়ে তবুও কি ওই নিয়ম বাদ দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে সালাত আদায় করা যাবে?

৬) কসর নামাজের নিয়ম কিভাবে
উত্তরটা একটু তারাতারি দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
কেউ কিবলা সম্পর্কে না জানলে,সে জানার চেষ্টা করবে।সম্ভব হলে কাউকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেবে।যদি জানার কোনো মাধ্যম না থাকে,তাহলে তাহাররি করে,তথা চিন্তা গবেষনা করে কোনো একদিককে কা'বা নির্ধারণ করে নামায পড়ে নিবে।

(০২)
অজু না থাকলে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে। এবং পরে বাসায় এসে নামায কে আবার দোহড়িয়ে পড়তে হবে। 
,
(০৩)
যানবাহনে নামাজ পড়া সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

(০৪)
যদি মুকিম ইমামের পিছনে মুসাফির ইক্তেদা করে,তাহলে আর কসর করা যাবেনা,বরং পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।
,   
মুসলিম শরীফে এসেছেঃ  
وعن موسى بن سلمة الهذلي قال: سألت ابن عباس كيف أصلي إذا كنت بمكة إذا لم أصل مع الإمام، فقال: "ركعتين سنة أبي القاسم صلى الله عليه وسلم" (رواه مسلم).
 وهذا يفيد أنه إذا صلى مع الإمام أتم الرباعية.
সারমর্মঃ  
মুসা ইবনে সালমাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি ইবনে আব্বাস রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম যদি আমি মক্কায় (যেটি তার সফরের দূরত্বে ছিলো) ইমামের পিছনে ইক্তেদা না করি,তাহলে কিভাবে নামাজ পড়বো?
তিনি বললেন যে দুই রাকাত।
এই হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে যদি ইমামের পিছনে নামাজ পড়ে,তাহলে চার রাকাত পূর্ণ করবে।  

ورواه أحمد بأصرح من ذلك، عن موسى بن سلمة قال: كنا مع ابن عباس بمكة فقلت: إذا كنا معكم صلينا أربعاً – أي بالمسجد مقتدين بإمام مقيم-  وإذا رجعنا إلى رحالنا صلينا ركعتين، قال: "سنة أبي القاسم صلى الله عليه وسلم" الفتح الرباني 5/102.
সারমর্মঃ 
আহমদ রহঃ আরেক হাদীস বর্ণনা করেন,যেটি আগের হাদীস থেকে আরো বেশি স্পষ্ট। 
মুসা ইবনে সালমাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি ইবনে আব্বাস রাঃ এর সাথে মক্কায় ছিলাম,যখন তাদের সাথে ছিলাম (মুকিম ইমামের সাথে জামাতে ইক্তেদা করেছিলাম  ) তখন চার রাকাত নামাজ পড়তাম,আর যখন থাকার ঘরে আসতাম,তখন দুই রাকাত আদায় করতাম।
    
(০৬)
মুসাফিরের জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া  (কসর) ওয়াজিব;  চার রাকাত (পূর্ণ পড়া) নাজায়েয,এতে সে গুনাহগার হবে । কারণ মুসাফিরের নামাযের বিধান হল কসর।

তবে যদি ভুলে ৪ রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে ২ রাকাত পড়ে যদি বৈঠক করে থাকে তাহলে প্রথম ২ রাকাত ফরয হবে, আর বাকি ২ রাকাত নফল হিসেবে ধর্তব্য হবে। কিন্তু সালাম ফিরাতে দেরী হওয়ায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 
(মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৫৪১)

যদি নামাযের শেষে সেজদায়ে সাহু দেয়, তাহলে নামায হয়ে যাবে,(মাকরুহের সহিত)। আর যদি সেজদায়ে সাহু না দেয়, তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।
যদি ২ রাকাতের পর বৈঠক না করে থাকে, তাহলে নামায হয় নি, নামাযটি পূণরায় পড়তে হবে।
(মারাকিল ফালাহ ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮)

 আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ
মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)
,
মাগরীব আর বিতির নামাজে কসর করা যাবেনা,পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 273 views
0 votes
1 answer 140 views
...