দোয়া ও ইস্তিগফার অন্যের জন্য করা অত্যন্ত উত্তম ও বরকতময় আমল।
পবিত্র কুরআনে এসেছে,
“لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ”
“তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।”
(সূরা আম্বিয়া ২১:৮৭)
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি বিপদের সময় ইউনুস (আঃ)-এর এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাকে সেই বিপদ থেকে মুক্তি দেবেন।”
— (তিরমিজি, হাদীস ৩৫০৫)
অর্থাৎ, নিজের জন্য বা অন্যের জন্য এ দোয়া পড়া — উভয়ই জায়েয ও ফজিলতপূর্ণ।
তবে মনে রাখতে হবে:
দোয়া হলো সওয়াবের মাধ্যম ও কারণ; বিপদ থেকে রক্ষা আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
যদি আপনি আন্তরিক নিয়তে অন্যের জন্য ইস্তিগফার ও দোয়া ইউনুস পড়েন, আল্লাহ চাইলে তার বিপদ দূর করে দিতে পারেন।
কিন্তু এটি নিশ্চিত নিয়ম নয়, বরং আল্লাহর রহমতের আশাবাদ।
---
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী, বিপদে থাকা ভাই/বোনকে সান্ত্বনা, দোয়া ও সহানুভূতি দেওয়া খুব বড় সওয়াবের কাজ।
কুরআনের দিকনির্দেশনা:
“নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে আছে স্বস্তি।”
(সূরা ইনশিরাহ ৯৪:৫–৬)
“যখন বিপদ আসে, বলবে — ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য, এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’”
(সূরা বাকারা ২:১৫৬)
আপনি বলতে পারেন:
“আল্লাহ তোমার এই পরীক্ষার মাধ্যমে তোমাকে আরও শক্তিশালী বানাচ্ছেন।”
“তুমি ধৈর্য ধরো, আল্লাহর সাহায্য খুব কাছেই।”
“আমি তোমার জন্য দোয়া করছি, আল্লাহ ইনশাআল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন।”
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“যে মুসলিম ভাইয়ের দুঃখে অংশ নেয়, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দুঃখ দূর করবেন।”
(সহিহ মুসলিম, হাদীস ২৬৯৯)
বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে যেসব আমল করতে বলা যায়ঃ-
নিচে কয়েকটি আমল আছে, যেগুলো কুরআন-হাদীসে বিপদ ও কষ্টের সময় পড়তে বলা হয়েছে —
(১) সবর ও নামাজ
“তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।”
(সূরা বাকারা ২:৪৫)
(২) দোয়া ইউনুস (সূরা আম্বিয়া ২১:৮৭)
উপরের দোয়াটি নিয়মিত পড়তে বলা যায়।
(৩) ইস্তিগফার
“আমি আমার প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল।
তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং সম্পদ ও সন্তান বৃদ্ধি করবেন।”
(সূরা নূহ ৭১:১০–১২)
(৪) ‘হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু’
“আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনিই উত্তম কর্মনির্ণায়ক।”
— (সূরা আত-তাওবা ৯:১২৯)
(৫) সালাতুত তাওবা ও দোয়া
দুই রাকাআত নফল সালাত পড়ে আন্তরিক তওবা করা।
(৬) সূরা আল-ইনশিরাহ ও সূরা আদ-দুহা পাঠ
এই দুই সূরায় দুঃখ ও আশার বার্তা আছে; নিয়মিত পাঠে হৃদয় শান্ত হয়।