আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসালামু আলাইকুম,
যদি কারো বিপদ দেখি তার নিয়তে ইস্তিগফার, দুয়া ইউনুস পড়লে কি তার বিপদ কেটে যায়?
আর যে বিপদে পড়ে তাকে কিভাবে স্বান্ত্বনা দিতে পারি। তাকে কি কি আমল করতে বলতে পারি।
অনেকে ভাবে আজাব এসেছে এতে সে হতাশ হয়ে আমল করা ছেড়ে দেয়।
আর বিপদে সে শুরুতে সবর করতে পারেনা সে কি দুর্বল ঈমানদার? বিপদে কান্না করা ভেংগে পড়া টা কি স্বাভাবিক।
জাজাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (689,850 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

দোয়া ও ইস্তিগফার অন্যের জন্য করা অত্যন্ত উত্তম ও বরকতময় আমল।

পবিত্র কুরআনে এসেছে,

“لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ”
“তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।”
 (সূরা আম্বিয়া ২১:৮৭)

রাসূল ﷺ বলেছেন:

“যে ব্যক্তি বিপদের সময় ইউনুস (আঃ)-এর এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাকে সেই বিপদ থেকে মুক্তি দেবেন।”
— (তিরমিজি, হাদীস ৩৫০৫)

অর্থাৎ, নিজের জন্য বা অন্যের জন্য এ দোয়া পড়া — উভয়ই জায়েয ও ফজিলতপূর্ণ।

তবে মনে রাখতে হবে:
দোয়া হলো সওয়াবের মাধ্যম ও কারণ; বিপদ থেকে রক্ষা আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।

যদি আপনি আন্তরিক নিয়তে অন্যের জন্য ইস্তিগফার ও দোয়া ইউনুস পড়েন, আল্লাহ চাইলে তার বিপদ দূর করে দিতে পারেন।

কিন্তু এটি নিশ্চিত নিয়ম নয়, বরং আল্লাহর রহমতের আশাবাদ।
---

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী, বিপদে থাকা ভাই/বোনকে সান্ত্বনা, দোয়া ও সহানুভূতি দেওয়া খুব বড় সওয়াবের কাজ।

কুরআনের দিকনির্দেশনা:
“নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে আছে স্বস্তি।”
 (সূরা ইনশিরাহ ৯৪:৫–৬)

“যখন বিপদ আসে, বলবে — ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য, এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’”
 (সূরা বাকারা ২:১৫৬)

আপনি বলতে পারেন:

“আল্লাহ তোমার এই পরীক্ষার মাধ্যমে তোমাকে আরও শক্তিশালী বানাচ্ছেন।”

“তুমি ধৈর্য ধরো, আল্লাহর সাহায্য খুব কাছেই।”

“আমি তোমার জন্য দোয়া করছি, আল্লাহ ইনশাআল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন।”

রাসূল ﷺ বলেছেন:

“যে মুসলিম ভাইয়ের দুঃখে অংশ নেয়, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দুঃখ দূর করবেন।”
 (সহিহ মুসলিম, হাদীস ২৬৯৯)


বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে যেসব আমল করতে বলা যায়ঃ-

নিচে কয়েকটি আমল আছে, যেগুলো কুরআন-হাদীসে বিপদ ও কষ্টের সময় পড়তে বলা হয়েছে —

 (১) সবর ও নামাজ

“তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।”
 (সূরা বাকারা ২:৪৫)

(২) দোয়া ইউনুস (সূরা আম্বিয়া ২১:৮৭)

উপরের দোয়াটি নিয়মিত পড়তে বলা যায়।

(৩) ইস্তিগফার

“আমি আমার প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল।
তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং সম্পদ ও সন্তান বৃদ্ধি করবেন।”
(সূরা নূহ ৭১:১০–১২)

(৪) ‘হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু’

 “আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনিই উত্তম কর্মনির্ণায়ক।”
— (সূরা আত-তাওবা ৯:১২৯)

(৫) সালাতুত তাওবা ও দোয়া

দুই রাকাআত নফল সালাত পড়ে আন্তরিক তওবা করা।

(৬) সূরা আল-ইনশিরাহ ও সূরা আদ-দুহা পাঠ

এই দুই সূরায় দুঃখ ও আশার বার্তা আছে; নিয়মিত পাঠে হৃদয় শান্ত হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...