আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (71 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

১। বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীকে সঠিকভাবে জেনে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তো এই ক্ষেত্রে কি পাত্র/পাত্রীর চিন্তাচেতনা কেমন বা অনলাইনে তার মনোভাব কেমন, কী ধরনের পোস্ট করেন তা বুঝার জন্য ফেসবুকে এড করা যাবে? অনেক সময় তো অনলাইনেও মানুষের প্রকৃত চেহারা ফুটে উঠে। অনলাইনে অনেকের প্রোফাইল লক করা থাকে, সেক্ষেত্রে তো তিনি কী পোস্ট করেন তা দেখতে গেলে এড ক্রাই লাগবে। যদি পাত্র পাত্রীর মধ্যে কথা হওয়ার কথাই বলেন তবে উল্লেখ্য যে এখানে পাত্র পাত্রী একা কথা বলবে না, মাঝে একজন থাকবেন।

২। হেদায়েতের আগে অনেকে আমার সাথে ফেসবুকে ছবি আপলোড করত। বারবার বলার পরও ডিলিট করেনি কেউ কেউ। এমতাবস্থায় ঐ ছবি থাকলে কি আমার গুনাহ হবে? যদি ছবি থাকা অবস্থাতেই মারা যাই তাহলে কি কবরের আযাব হবে?

বিঃদ্রঃ আমি এখন আর প্রয়োজন বাদে ছবি তুলি না আলহামদুলিল্লাহ। অন্য কেউ আমার সাথে ছবি তুললেও মানা করে দেই যাতে সোশ্যাল মিডিয়াতে না দেয়।

1 Answer

0 votes
ago by (678,540 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/111617 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
বিবাহের আগে দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায়ঃ-
পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভালো করে দেখে নিন, সে ইবাদতগুজার ও অনুগত স্বভাবের কিনা। সে সময়মতো নামাজ পড়বে এবং নফল নামাজ ও রোজার পাবন্দি করবে। কুরআন তিলাওয়াত করা ও মুখস্থ করার প্রতি আগ্রহী হবে। আবার সকাল-সন্ধ্যার আমলগুলোও ঠিকঠাক আদায় করবে। এগুলো জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া যেতে পারে পাত্রী দেখার সময়:
কতটুকু কুরআন মুখস্থ আছে? 
 নফল নামাজের মধ্যে কোনোটা পড়া হয় কি না? তাহাজ্জুদ বা ইশরাক?

জুমআর দিন সূড়া কাহফ পড়া হয় কি না?
.
সবগুলোর উত্তর 'হ্যাঁ'-ই হতে হবে, তা নয়। তবে এতে করে পাত্রীর দ্বীনদারির একটা আইডিয়া করা যাবে। 

নবীজি (ﷺ) বলেন: 'যে নারী সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, রমযান মাসে রোজা রাখবে, নিজের সতিত্ব রক্ষা করে চলবে এবং স্বামীর অনুগত থাকবে, কিয়ামতের দিন তাঁকে বলা হবে, "তুমি জান্নাতের যে দরজা দিয়ে মন চায় সেদিক দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারো।"' (আহমাদ, ১৬৬১)
.
কোন একজন ব্যক্তিকে চেনার অন্যতম উপায় হলো তার বন্ধু/বান্ধবীকে চেনা। কারণ, মানুষ সে ধরনের লোককেই ফ্রেন্ড বানায়, যাকে সে ভালোবাসে এবং যার আচরণ ও চলাফেরায় সে মোটাদাগে সন্তুষ্ট। 

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন— ‘ব্যক্তি তার বন্ধুর চালচলন অনুসরণ করে। সুতরাং, তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ করে,সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে!’’ (ইমাম তিরমিযী ২৩৭৮,আবূ দাঊদ ৪৮৩৩, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৯২৭, হাদিসটি হাসান)। 

সুতরাং, পাত্র/পাত্রী কাদের সাথে ঘনিষ্ঠ, সেদিকে খেয়াল করুন। তাদের খোঁজ নিন। 

পাত্র/পাত্রী কোন পরিবেশে বেড়ে উঠেছে সেই এলাকায় বা হোস্টেল, আবাসিক হল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি জায়গাতে খোঁজ নিলে প্রকৃত অবস্থা অনেকটাই বুঝা যায়। কারণ, এসব স্থানে সে চাইলেও মুখোশ পরে থাকতে পারবে না। তার প্রকৃত অবস্থা লোকজন জানবেই। বিশেষ করে রুমমেট বা ক্লাসমেটদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। 

বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম আলেম শাইখ ইমাম ইবনু উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: মেয়ের অভিভাবকের উপর ফরজ হচ্ছে- প্রস্তাব দেয়া ছেলের দ্বীনদারি ও চারিত্রিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া। যদি ভালো তথ্য পাওয়া যায় তাহলে বিয়ে দিবে। আর যদি বিরূপ তথ্য পাওয়া যায় তাহলে বিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকবে। যদি আল্লাহ দেখেন যে, এই অভিভাবক শুধু দ্বীনদারি ও চারিত্রিক কারণে এই ছেলের কাছে বিয়ে দেয়নি তাহলে তিনি অচিরেই তার মেয়ের জন্য দ্বীনদার ও চরিত্রবান ছেলের ব্যবস্থা করে দিবেন।(শাইখ উসাইমীন (রহঃ) এর নুরুন আলাদ দারব ফতোয়া সংকলনে; বিবাহ/পাত্র নির্বাচন/প্রশ্ন নং-১৬ ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০৪০৫৪)
.
স্থানীয় মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন থেকে ধারণা নেওয়া।

পাত্রী চেনার ক্ষেত্রে খুব ভাল একটি উপায় হতে পারে, পাত্রীর মা। কারণ পাত্রীর চরিত্র দেখার আগে তার বাপ-মায়ের চরিত্রও বিচার্য।

বাবা-মা ও পরিবারের লোকদের সাথে পাত্র/পাত্রীর আচরণ ও সম্পর্ক যাচাই করতে পারলে, সেটি দিয়েও অনেক কিছু অনুমান করা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ। কারণ, এই লোকগুলোর সাথে ব্যক্তির আসল চরিত্র প্রকাশিত হয়। তাই, এঁদের সাক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সর্বোত্তম ব্যক্তি সে-ই, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম ব্যক্তি।’’ (ইমাম তিরমিযি হা/৩৮৯৫, দারিমী ২২৬০, ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ১৯৭৭; হাদিসটি সহিহ)
.
উমর (রা.)-সহ বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন, কয়েকটি সময় একজন ব্যক্তিকে প্রকৃত অর্থে চেনা যায়। সেগুলো হলো: (১). তার সাথে দীর্ঘ ও কষ্টকর সফর করলে, (২). তার সাথে লেনদেন করলে, (৩). তার সাথে রাগারাগি হলে এবং (৪). তার প্রতিবেশী হলে। এবার খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

কনে দেখার সময় সামনাসামনি বর এবং কনে একে অপরকে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। এগুলোর উত্তরের মাধ্যমেও ব্যক্তির ব্যাপারে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া সম্ভব। বিশেষ করে যেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারে: জীবনের উদ্দেশ্য কী, বিয়ে কেন করতে চায়, আল্লাহ আমাদেরকে কেন সৃষ্টি করেছেন? আল্লাহ তার রাসূল ﷺ ফিরিস্তা আখিরাত, ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের বিশুদ্ধ আক্বীদা কেমন হবে? মাহরাম এবং নন-মাহরাম মেন্টেইন করে চলে কি না, সপ্তাহে কয় দিন কুরআন পড়ে, প্রতিদিন বারো অথবা দশ রাকাআত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ আদায় করে কি না, (কনের ক্ষেত্রে) স্বামীর আনুগত্যের ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং স্বামীর আনুগত্যের সর্বোচ্চ সীমারেখা জানে কি না ইত্যাদি।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মহিলাদের জন্য গায়রে মাহরামদের সামনে অথবা বাহিরে যেতে হলে সর্বাবস্থায় নেকাব,হাত,পা মোজা ব্যাবহার করতে হবে।
সুতরাং গায়রে মাহরাম পুরুষ এর সামনে মহিলাদের হাত পা চেহারা সহ পূর্ণ শরীর সতর।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

পাত্র দ্বীনদার কিনা,সেটা যাচাইয়ের জন্য জানুনঃ-  https://ifatwa.info/100035

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি নয়। এতে গায়রে মাহরাম মহিলার ছবি দেখা হতে পারে,যাহা কোনোক্রমেই জায়েজ নেই।

(০২)
তাওবাহ কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল,অতীতের যাবতীয় কৃতকর্মের উপর লজ্জিত হয়ে ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে বর্তমানে সে গোনাহকে পরিত্যাগ করা।এবং সাথে সাথে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাওয়া।
বর্তমানে আর ছবি পোস্ট করবেননা। এবং ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় সংকল্প রাখবেন।

অতীতের কিছু ছবি বিভিন্ন জায়গায় ছিলো।সেগুলোকে ডিলেট করার আপ্রাণ চেষ্টা করুন,চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। শতচেষ্টার পরও যদি ডিলেট করানো সম্ভব না হয়,তাহলে এর দায়ভাড় আপনার উপর বর্তাবে না।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (71 points)
মুফতি সাহেব আপনি মেহেরবানী করে আমার ১ম প্রশ্নটা একটু ঠিকঠাক করে পড়ুন। সবসময় বন্ধুবান্ধব বা পরিবার দেখে পাত্র/পাত্রীকে চেনা যায় না, অন্তত এই যুগে তো নয়ই। আর কারও বন্ধু বান্ধব কে সেটা খুঁজে বের করতে গেলেও তো ফেসবুক আইডি দেখা লাগবে। সত্যি বলতে অনেক সময় একজন মানুষ অফলাইনে একরূপ দেখায়, অনলাইনে আরেক রূপ। তো আমি যাকে বিয়ে করছি তার চিন্তাভাবনা আমার জানা লাগবে না! দ্বীনদারিতা শুধু নামাজ-কালাম, দাঁড়ি আর পর্দায় সীমাবদ্ধ না। আচার-ব্যবহার, আখলাকও দ্বীনদারিতার বড় অংশ। 
ago by (71 points)
আর গায়রে মাহরাম  মহিলার চেহারা দেখার কথাই যখন তুললেন। প্রাথমিক কথাবার্তা হওয়ার পর যখন আগাতে চাইবে তখনই না ফেসবুকে এড হওয়ার প্রসঙ্গ আসবে। প্রাথমিক কথাবার্তাতে তো নিশ্চয়ই আইডিয়া হবে যে মেয়ে কেমন হতে পারে, ছবি আপলোড করে কিনা। এরপরই না ডিটেইলস জানার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া চেক করবে। তখন যদি দেখে যে মেয়ে ছবি আপলোড করে, তখন 'না' করে দেবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...