আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
223 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামুআলাইকুম

১।আমি এক জায়গায় পড়ছিলাম যে রাসূল(সাঃ) বলেছেন ওযু তে ও অপচয় আছে।এইটার উপর আমল করতে যেয়ে আমি চাইতাম পানি কম খরচ করতে।আমি যখন ওয়াশরুমে ওযু করতাম নিচে মগ রেখে টেপ ছেড়ে দিতাম আর হাত মুখ ওই পানি দিয়ে দিতাম আর নিচে মগে ওই হাত মুখ ধোয়া পানি আর টেপ এর পানি মিলে যেই পানি টা জমা হত ঐটা দিয়ে পা ধুয়ে নিতাম। IOM এ ক্লাস করার পর জানলাম একবার যে পানি দিয়ে ওযু করা হয় সেই পানি দিয়ে আবার ওযু করা যায় না।এখন আমি যে ব্যাবহৃত পানি দিয়ে পা ধুয়েছি আমার ওযু কি আদায় হয়েছে? আর না হয়ে থাকলে তো আমার নামাজ গুলো আদায় হয় নি।এখন এই বিষয় এ আমার করনীয় কি?আমার কি সব নামাজ আবার আদায় করতে হবে?

২। আর একটা হাদিস দেখলাম যেইখানে রাসূল(সাঃ) বলেছেন "তোমরা যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হও তখন পাত্রে দেওয়ার আগে তিনবার হাত দিয়ে নিবে কেননা তুমাদের যানা নেই যে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত কোথায় কোথায় স্পর্শ করেছে (সহীহ মুসলিম-৫৫০)। বিশেষ করে শীতকাল মগে গরম পানি নিয়ে ওযু করার সময় হাত ধোয়া ছাড়া হাত প্রবেশ করিয়ে দিতাম যেহুতু এই হাদীস টা আমার জানা ছিল না।এইক্ষেত্রে কি আমার ওযু আদায় হয়েছে?

৩।বালেগ হওয়ার পর থেকে আলহামদুলিল্লাহ ৫ ওয়াক্তে নামাজ পড়া হত তবে দ্বীনের বুঝ ছিল না বলে নামাজে খুব একটা খুশু খুজো থাকতো না ।এখন সন্দেহ হয় ঐ নামগুলো তে শুরুতে তাকবীর তাহরীমা বলার ফরজ বিধান টা মাঝে মধ্যে আমি আদায় করি নি।এখন সন্দেহ বশত কি আবার ঐ নামাজ গুলোর কাযা আদায় করতে হবে?

বেশি লেখার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।জাজাকাল্লাহু খায়রান

1 Answer

+1 vote
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকে, যা ‘হাদাস’ (অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। 
ব্যবহারকারীর শরীর থেকে আলাদা হওয়ার পর সেই পানি ব্যবহৃত পানি বলে গণ্য হবে।

হাদিসের স্পষ্ট বর্ণনার কারণে ব্যবহৃত পানি পবিত্র। তবে হাদিসের ভাষ্য মতে, এই পানি দ্বারা অজু হবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫২৪৪)

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
أو بماء استعمل لأجل قربۃ أي ثواب ولو مع رفع حدث أو غسل میت۔ قال الشامي: قولہ أو غسل میت معطوف علی رفع حدث وکون غسالتہ مستعملۃ ہو الأصح۔ (شامی کراچی ۱؍۱۹۸، درمختار مع الشامي زکریا ۱؍۳۴۸- ۳۴۹) 

ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকে, যা ‘হাদাস’ (অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। 

ওজুর ব্যাবহৃত পানি পবিত্র । সুতরাং ওজুর অব্যবহৃত পবিত্র পানির পরিমান যদি ওজুতে ব্যবহৃত পানির তুলনায় বেশি হয় , তাহলে সে পানি দিয়ে ওজু বৈধ হবে ।
جاء في الفتاوي السراجية: ص 34 (ط. الاتحاد ) كتاب الطهارة : الماء المستعمل في الوضوء في رواية محمد عن أبي حنيفة رحمهما الله تعالى : طاهر ، و عليه الفتوى ، انتهى
وجاء في الامداد الفتاح : ص: 36 ( الاتحاد ) كتاب الطهارة : فإن اختلط رطلان من الماء المستعمل ، برطل من المطلق، لايجوز به الوضوء ، و بعكسه جاء . انتهى

যার সারমর্ম হলো যদি দুই রিতিল ব্যবহারিত পানির সাথে এক রিতিল সাধারণ পানি মিলে যায়,তাহলে সেই পানির দ্বারা অযু গোসল জায়েয হবেনা। 
,
অন্যথায় জায়েজ হবে।   
,
আরো জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে,
"" আপনি ওযু করার সময় নিচে মগ রেখে টেপ ছেড়ে দিতেন, আর হাত মুখ টেপের পানি দিয়ে ধুয়ে নিতেন, আর নিচে মগে ওই হাত মুখ ধোয়া পানি আর টেপ এর পানি মিলে যেই পানি টা জমা হত ঐটা দিয়ে পা ধুয়ে নিতেন।

এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলোঃ
এক, মগের ভিতর শুধু হাত মুখ ধোয়ার পানিই জমা হতোনা,বরং হাত মুখ ধোয়ার মাঝের সময়ের টেপের সরাসরি পানি ও সেই মগে জমা হতো,যার অংশ নিতান্ত কম নয়।

দুই, আপনি ঐ মগের জমা পানি আর টেপের পানি মিলে শেষে পা ধুয়ে নিতেন,সুতরাং পা ধোয়ার ক্ষেত্রে শুধু সেই মগের পানিই ব্যবহার করতেননা, বরং টেপের ভালো পানি ও ব্যবহার করতেন।
,
★সুতরাং বুঝা গেলো যে আপনার পা ধোয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহারিত পানি এবং অব্যবহারিত পানি উভয় পানিই ব্যবহার হয়েছে। 
  
যেহেতু এক্ষেত্রে অব্যবহারিত পানিই বেশি,তাই আপনার অযু হয়ে যাবে,উক্ত নামাজ গুলোও আদায় হয়ে গেছে।
পুনরায় আর আদায় করার প্রয়োজন নেই।
,  
(০২)
হ্যাঁ আপনার অযু আদায় হয়ে গেছে।
তবে আপনি যদি নিশ্চিত হোন যে আপনার হাতে নাপাক লেগেছিল, তাহলে সেই পাত্রে নাপাক হাত ব্যবহারের কারনে পানি গুলো যেহেতু নাপাক  হয়ে যাবে,তাই সেই ছুরতে অযু হবেনা।   
,
(০৩)
এটি আপনার মনের সন্দেহ মাত্র।
আপনি যেহেতু এই বিষয়ে নিশ্চিত নন,তাই আপনার উক্ত নামাজ গুলো আদায় হয়ে গেছে। 
আপনাকে আর উক্ত নামাজ গুলো পুনরায় আদায় করতে হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 273 views
0 votes
1 answer 159 views
...