আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)
১.ঈসা (আ) এর আসমানে চলে যাওয়া - এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানার কোনো লিংক বা সোর্স জানালে উপকার হয়....

২.উমার (রা) কে নিয়ে বানানো যে সিরিজটি আছে, সেটি দেখা কি জায়েজ?

...................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................

1 Answer

0 votes
by (709,800 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
হজরত মরিয়ম (আ.) এবং তাঁর পুত্র হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আর বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লিখিত মরিয়মের কথা, যখন সে তার পবিরবর্গ হতে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্বদিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল, অতঃপর উহাদিগ হতে সে পর্দা করল। অতঃপর আমি তার নিকট আমার রুহকে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল। মরিয়ম বলল, “আল্লাহকে ভয় করো যদি তুমি মুত্তাকী হও, আমি তোমা হতে দয়াময়ের শরণ নিচ্ছি।” সে বলল, “আমি তো তোমার প্রতিপালক প্রেরিত, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য।” মরিয়ম বলল, “কেমন করে আমার পুত্র হবে? যখন আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও নই।” সে বলল, “এই রূপেই হবে। তোমার প্রতিপালক বলেছেন—ইহা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং আমি উহাকে এই জন্য সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন ও আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ; ইহা তো এক স্থিরকৃত ব্যাপার।” অতঃপর সে গর্ভে উহাকে ধারণ করল; অতঃপর তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল; প্রসববেদনা তাকে এক খর্জুর-বৃক্ষ তলে আশ্রয় লইতে বাধ্য করল। সে বলল, হায়! ইহার পূর্বে আমি যদি মরে যেতাম ও লোকের স্মৃতি হতে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম। ফেরেশতা তার নিম্ন পার্শ্ব হতে আহ্বান করে তাকে বলল, “তুমি দুঃখ করো না, তোমার পাদদেশে তোমার প্রতিপালক এক নহর সৃষ্টি করেছেন। তুমি তোমার দিকে খর্জুর-বৃক্ষকে নাড়া দাও, উহা তোমাকে সুপরিপক্ক তাজা খর্জুর দান করবে। সুতরাং আহার করো, পান করো ও চক্ষু জুড়াও। মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখো তখন বলো, “আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতা অবলম্বনের রোজার মান্নত করেছি সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সহিত বাক্যালাপ করব না।” অতঃপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হলে; উহারা বলল, “হে মরিয়ম! তুমি তো এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসে আছো। ‘হে হারুন-ভগ্নি! তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিলেন না ব্যভিচারিণী।” অতঃপর মরিয়ম সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করল। উহারা বলল, “যে কোলের শিশু তার সহিত আমরা কেমন করে কথা বলব?” সে (শিশু ঈসা নবী আ.) বলল, “আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়াছেন, আমাকে নবী করেছেন। যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও জাকাত আদায় করতে। আর আমাকে আমার মাতার প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেননি উদ্ধত ও হতভাগ্য; আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্মলাভ করেছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হব।” এই-ই হলো মরিয়ম তনয় ঈসা (আ.)। আমি বললাম সত্য কথা, যে বিষয়ে উহারা বিতর্ক করে।’ (সূরা: ১৯ মরিয়ম, আয়াত: ১৬-৪০)।

কোরআন কারিমে হজরত ঈসা (আ.)–এর নাম বিভিন্ন প্রসঙ্গে ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে। হজরত মরিয়ম (আ.)–এর নামে কোরআনুল কারিমে একটি স্বতন্ত্র সুরাও রয়েছে এবং মরিয়ম শব্দটি কোরআন কারিমে নানানভাবে ৩৫ বার উল্লিখিত হয়েছে। হজরত ঈসা (আ.)–এর সৃষ্টি হজরত আদম (আ.)–এর মতো। ‘আল্লাহর নিকট নিশ্চয় ঈসা (আ.)–এর দৃষ্টান্ত আদম (আ.)–এর দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাকে মৃত্তিকা হতে সৃষ্টি করেছিলেন; অতঃপর তাকে বলেছিলেন “হও”, ফলে সে হয়ে গেল।’ (সুরা-৩, আল ইমরান, আয়াত: ৫৯)।

হজরত ঈসা (আ.)–এর জন্ম যেমন বিস্ময়কর, তাঁর পুনরাবির্ভাবও হবে বিস্ময়করভাবে। তাঁর সম্পর্কে কোরআন মাজিদে আছে, ‘আর “আমরা আল্লাহর রাসুল মারইয়াম তনয় ঈসা মাসিহকে হত্যা করেছি”—তাদের এই উক্তির জন্য (তাদের এই পরিণতি)। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি; কিন্তু তাদের এইরূপ বিভ্রম হয়েছিল। যারা তার সম্বন্ধে মতভেদ করেছিল, তারা নিশ্চয় এই সম্বন্ধে সংশয়যুক্ত ছিল; এই সম্পর্কে অনুমানের অনুসরণ ব্যতীত তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। ইহা নিশ্চিত যে তারা তাকে হত্যা করেনি, বরং আল্লাহ তাকে তঁার নিকট তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ১৫৭-১৫৮)।

হাদিসমতে, ঈসা (আ.) চতুর্থ আসমানে রয়েছেন। কিয়ামতের পূর্বে তিনি দুনিয়ায় আসবেন হজরত মুহাম্মাদ (স.)–এর উম্মত হয়ে; অতঃপর তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করবেন এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর রওজার পাশেই তাঁর দাফন হবে।

(২)
লাইভ সম্প্রচার জায়েয এটা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই।রেকর্ড ভিডিও নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।মুফতী তাক্বী উসমানী রেকর্ড ভিডিওকে তাসবীর(যা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম)এর আওতাধীন করতে ইতস্ততাবোধ করেছেন।উনি উনার অমরগ্রন্থ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিমে লিখেন,
ﻭﺍﻣﺎ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺘﻰ ﻟﻴﺲ ﻟﻬﺎ ﺛﺒﺎﺕ ﻭﺍﺳﺘﻘﺮﺍﺭ، ﻭﻟﻴﺴﺖ ﻣﻨﻘﻮﺷﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻴﺊ ﻳﺼﻔﺔ ﺩﺍﺋﻤﺔ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺑﺎﻟﻈﻞ ﺍﺷﺒﻪ (ﺍﻟﻰ ﻗﻮﻟﻪ) ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻻ ﺗﺴﺘﻘﻮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﻴﺴﺮﺍ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺸﺎﺷﺔ ﻭﺗﻈﻬﺮ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺑﺘﺮﺗﻴﺒﻬﺎ ﺍﻷﺻﻠﻰ ﺛﻢ ﺗﻔﺘﻰ ﻭﺗﺰﻭﻝ،
ভাবার্থ-ঐ ছবি যার কোনো স্থায়িত্ব বা দীর্ঘতা নেই, এবং যা কোনো জিনিষের উপর স্থায়ী অঙ্কিত ও নয়।সেটা ছায়ার অধিকতম নিকটবর্তী। কেননা ছবি স্কীনে অবশিষ্ট থাকে না বরং তা মেমোরি বা রিলে সংরক্ষিত ধারাবাহিকার সাথে স্কীনে আসে আবার তা দূতই চলে যায়।(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম-৪/১৬৪)

দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো ফিল্ম তৈরী হলে এবং তাতে কোনো প্রকার হারাম জিনিষ যেমন গান-বাদ্য, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকলে, অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল;১/২৩৬)

প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে মুভি দেখাকে কখনো জায়েয বলা যাবে না।কেননা নারীদেরকে দেখা,ও তাদের আওয়াজ শ্রবণ করা সম্পূর্ণই হারাম।-বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/361

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উমার (রা) কে নিয়ে বানানো যে সিরিজ রয়েছে.তাতে যেহেতু নারী দৃশ্য রয়েছে, তাই এমন সিরিজ দেখার রুখসত থাকবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...