ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/6835/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
রাগ সম্পর্কে মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন।
.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন-
إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْكُتْ.
কেউ যখন রেগে যায় সে যেন চুপ হয়ে যায়। (যাতে গালিগালাজ, মন্দ কথা থেকে বাঁচতে পারে।) -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৩৬
,
এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শোয়ে পড়ে। ’ -তিরমিজি
.
আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’
,
★সুতরাং রাগ উঠলে রাসুল সা. এর নির্দেশ মানতে হবে।
আর আল্লাহ তায়ালার কাছে রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে, ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।
.
https://ifatwa.info/79340/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
ড. আয়িদ আল করনী 'লা-তাহযান' কিতাবে রাগ দমন সম্পর্কে আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন,
“আর যদি তোমার মনে শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা আসে তবে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-২০০)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার একজন সাহাবীকে এই বলে উপদেশ দিয়েছিলেন যে, ‘তুমি রাগ করিও না’ একথা তিনি তিনবার বলেছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যখন এক লোক রাগান্বিত হয়েছিল তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাইতে আদেশ করেছিলেন।
“এবং আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, হে আমার প্রতিপালক! যাতে শয়তানরা আমার নিকট হাজির হতে না পারে।" (২৩-সূরা আল মু'মিনূনঃ আয়াত-৯৮)
“নিশ্চয় যারা মুত্তাকী, তাদেরকে যখন শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের অন্তদৃষ্টি খুলে যায়।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-২০১)
যা মানুষকে হতাশ ও বিষন্ন করে ক্রোধও তার মধ্যে একটি। নিচে রাগ দমন করার কয়েকটি পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো-
১. রাগকে আপনার শক্ৰ মনে করে তা দমন করার জন্য প্রতিযোগিতা করুন।
“এবং ক্রোধ সংবরণকারীগণ এবং মানুষদেরকে ক্ষমাকারীগণ, আর নিশ্চয় আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের ভালবাসেন।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৩৪)
“আর যখন তারা ক্রুদ্ধ হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়।” (৪২-সূরা আশ শূরাঃ আয়াত-৩৭)
“আর যখন মূসার রাগ পড়ল তখন তিনি ফলকগুলো তুলে নিলেন।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-১৫৪)
২. অযু করুন, কেননা ক্রোধ আগুনের একটি কণা, এটাকে পানি দ্বারা নিভানো যায়।
৩ আপনি দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়ুন আর বসা অবস্থায় থাকলে শুয়ে পড়ুন।
৪. ক্রুদ্ধ অবস্থায় চুপ থাকুন।
৫. যারা রাগ দমন করে ও যারা ক্ষমা করে তাদের পুরস্কারের কথা স্মরণ করুন।
.
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
.
১. আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহের বা জ্বীনের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়। তিনি আপনার উপরোক্ত বিষয়গুলোর বিষয়ে বেশী ভালো বলতে পারবেন।
.
২. আল্লাহ তায়ালার কাছে রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে, ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।