আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম।আমি গত ২/৩ বছর যাবত ফজরের নামাজ পড়তে পারছি না। প্রতিদিন কায়া হয়ে যায় এমনকি কয়েকটি এলার্ম দেয়া সত্ত্বেও সজাগ হওয়া সত্ত্বেও নামাজ প্রতিদিন কাযা হয়ে যায়।এটা কি কোনো বদনজর জনিত সমস্যা কিনা আমি বুঝতে পারছি না।এখন আমি এই সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি দয়া করে জানাবেন।আমার মন সবসময় অস্থির থাকে আর মনের মধ্যে সবসময় ঘুম থেকে উঠার পর থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত শুধু অপ্রয়োজনীয় চিন্তা ভাবনা আসতেই থাকে।আমি এইসব থেকে কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করবো? আমি নামাজ, জিকির, দোয়া, তিলাওয়াত কোনো কিছুর প্রতি মনোযোগ দিতে পারি না।আমার কিছুই পড়তে মন চায় না আমি কোনো ভাবেই মনকে স্থির রাখতে পারি না।সবসময় মন শুধু অপ্রয়োজনীয় চিন্তায় ডুবে থাকে। শশুড়,শাশুড়িকে খুব অসহ্য লাগে। এমনকি অল্পতেই খুব রাগ উঠে যায়।রাগের মাথায় নিজের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রন এ রাখতে পারি না সবাইকে আঘাত দিয়ে ফেলি কিন্তু পরে খুব খারাপ লাগে।

আমি কিভাবে এইসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারি দয়া করে আমাকে একটা সমাধান দিন।

1 Answer

0 votes
by (84,270 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/6835/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

রাগ সম্পর্কে মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে। 

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন।

.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এ থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন- 

إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْكُتْ.

কেউ যখন রেগে যায় সে যেন চুপ হয়ে যায়। (যাতে গালিগালাজ, মন্দ কথা থেকে বাঁচতে পারে।) -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৩৬

,

এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শোয়ে পড়ে। ’ -তিরমিজি

.

আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’

,

★সুতরাং রাগ উঠলে রাসুল সা. এর নির্দেশ মানতে হবে।

আর আল্লাহ তায়ালার কাছে রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে, ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।  

.

https://ifatwa.info/79340/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ড. আয়িদ আল করনী 'লা-তাহযান' কিতাবে রাগ দমন সম্পর্কে আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন,

“আর যদি তোমার মনে শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা আসে তবে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-২০০)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার একজন সাহাবীকে এই বলে উপদেশ দিয়েছিলেন যে, ‘তুমি রাগ করিও না’ একথা তিনি তিনবার বলেছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যখন এক লোক রাগান্বিত হয়েছিল তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাইতে আদেশ করেছিলেন।

“এবং আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, হে আমার প্রতিপালক! যাতে শয়তানরা আমার নিকট হাজির হতে না পারে।" (২৩-সূরা আল মু'মিনূনঃ আয়াত-৯৮)

“নিশ্চয় যারা মুত্তাকী, তাদেরকে যখন শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের অন্তদৃষ্টি খুলে যায়।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-২০১)

যা মানুষকে হতাশ ও বিষন্ন করে ক্রোধও তার মধ্যে একটি। নিচে রাগ দমন করার কয়েকটি পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো-

১. রাগকে আপনার শক্ৰ মনে করে তা দমন করার জন্য প্রতিযোগিতা করুন।

“এবং ক্রোধ সংবরণকারীগণ এবং মানুষদেরকে ক্ষমাকারীগণ, আর নিশ্চয় আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের ভালবাসেন।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৩৪)

“আর যখন তারা ক্রুদ্ধ হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়।” (৪২-সূরা আশ শূরাঃ আয়াত-৩৭)

“আর যখন মূসার রাগ পড়ল তখন তিনি ফলকগুলো তুলে নিলেন।” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-১৫৪)

২. অযু করুন, কেননা ক্রোধ আগুনের একটি কণা, এটাকে পানি দ্বারা নিভানো যায়।

৩ আপনি দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়ুন আর বসা অবস্থায় থাকলে শুয়ে পড়ুন।

৪. ক্রুদ্ধ অবস্থায় চুপ থাকুন।

৫. যারা রাগ দমন করে ও যারা ক্ষমা করে তাদের পুরস্কারের কথা স্মরণ করুন।

.

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

.

১. আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহের বা জ্বীনের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়। তিনি আপনার উপরোক্ত বিষয়গুলোর বিষয়ে বেশী ভালো বলতে পারবেন। 

.

২. আল্লাহ তায়ালার কাছে রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে, ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...