আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited ago by
আমার স্বামীর সাথে আমার ৬ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক। ২ ছেলে সন্তান আছে। আমি আমার স্বামীর সমবয়সি এবং আমার বয়স ২৮। বিয়ের শুরুতে আমার সহবাসে আগ্রহ থাকলেও আস্তে আস্তে এখন প্রচন্ড অনীহা কাজ করে। আর শুরু থেকেই আমার হাসবেন্ড এর চাহিদা স্বাভাবিক মানুষের থেকে অনেক বেশি; এমনকি সময়সীমাও বেশি।এটা ৬ বছরে বুঝতে পেরেছি আমার সমবয়সি বান্ধবীদের বৈবাহিক সম্পর্কের আলোচনা করে। আমরা দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ। স্বামী সহবাসের জন্য ডাকলে স্ত্রীর সাড়া দেয়া ওয়াজিব জানি কিন্তু তাও আমি নিজেকে প্রায়ই এখন মানাতে পারিনা।আমার অনেকটা দমবন্ধ লাগে সহবাস করতে গেলে। আর না করলে প্রচন্ড অপরাধবোধ কাজ করে। প্রায়ই স্বামীকে বলি দ্বিতীয় বিয়ে করে নিতে কারণ আমি তার হক রক্ষা করতে পারছিনা। আমার সহবাস একদমই ইচ্ছা করেনা এমন না আমার চাহিদা আছে যদিও সেটা আমার স্বামীর তুলনায় অনেক কম। কিন্তু অজানা কোন কারণে আমি আমার স্বামীর সাথে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না সহবাসে।মাসে আমার স্বামীর চাহিদা ১০-১৫ বার সহবাস আর আমি পারছি ২-৩ বার। দিনকে দিন ব্যাপারটা সিরিয়াস হচ্ছে মনে হচ্ছে।আমার স্বামীও আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ছে।আমি খুবই অসহায় বোধ করছি। আমার কি গুনাহ হচ্ছে? আমি চেষ্টা করি কিন্তু বুঝি তাতে আমার স্বামী সন্তুষ্ট হচ্ছে না। প্লাস আমার ছোট ২ টা বাচ্চা আছে ওদেরকেও সামলাতে হয়।আবার দেশের বাইরে থাকার কারণে বাসার সমস্ত কাজ একাই সামলাতে হয়।উল্লেখ্য আমার স্বামি ঘরের কাজে আমাকে খুব একটা হেল্প করতে আগ্রহী না আর মোস্ট অফ দা টাইম কাজের জন্য হোক বা এমনি ফোন আর লেপটপে বেশি সময় দেয়।বাচ্চা লালনপালনে আমি খুব একটা সাপোর্ট পাইনা। এখন এই অবস্থায় আমার করনীয় কি হতে পারে??প্লিজ যথাযথ সাজেশন দিয়ে হেল্প করবেন ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
ago by (81,840 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও একটি ইবাদত । যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-

 হযরত আবু যর রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِي، ذَرٍّ أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ . قَالَ " أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَّدَّقُونَ إِنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ " أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ " .

কিছু সাহাবা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল। তারা নামায পড়ছে যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে। তিনি বললেন, আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।

সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের যৌনক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে? তিনি বললেন, কী রায় তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? (নিশ্চয় হবে।) অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কামক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে। (সহীহ মুসলিম ২৩৭৬)

,

স্বামী স্ত্রী উভয়ের শারীরিক সক্ষমতা অনুযায়ী সহবাস করবে।

কোনো সীমা নির্দিষ্ট নেই।

https://ifatwa.info/12098/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

স্বামী-স্ত্রী পরস্পর হকঃ

স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের উপর অনেক হক রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হল, সহবাসের হক। স্ত্রীর উপর স্বামীর সহবাস হক কতটুকু?

উত্তরঃ স্বামী স্ত্রীকে সহবাসের জন্য তলব করলে স্ত্রীর জন্য তৎক্ষনাৎ স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব। শরয়ী উযর ব্যতীত জবাব না দেয়ার কোনো অপশন নেই।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত

عن أبي هريرة رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا دعا الرجل امرأته إلى فراشه فأبت فبات غضبان عليها لعنتها الملائكة حتى تصبح»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশ্তাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে। (সহীহ বুখারী-৩২৩৭)

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

.

স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের উপর অনেক হক রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হল, সহবাসের হক। স্ত্রীর উপর স্বামীর সহবাস হক কতটুকু?

উত্তরঃ স্বামী স্ত্রীকে সহবাসের জন্য তলব করলে স্ত্রীর জন্য তৎক্ষনাৎ স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব। শরয়ী উযর ব্যতীত জবাব না দেয়ার কোনো অপশন নেই।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গাইনি বিষেশজ্ঞ মহিলা ডাক্তারকে দেখাতে পারেন। ভালো চিকিৎসা করাতে পারেন। সাথে রুকইয়া আমলও করতে পারেন ইনশাআল্লাহ এবং পুষ্টিকর খাবারও আহার করবেন।

পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকুন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে কান্নাকাটি করে দুআ করতে থাকুন। যাতে করে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সুস্থ করে দেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...