ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কিন্তু রজব মাসে রোজা রাখা বা রজব মাসের কিছু অংশে রোজা রাখার ব্যাপারে কোন সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়নি। কিছু কিছু মানুষ রজব মাসের বিশেষ ফজিলত রয়েছে মনে করে এ মাসের বিশেষ কিছু দিনে যে রোজা রাখে এ ধরণের বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই।
তবে হারাম মাসসমূহে (রজব একটি হারাম মাস) রোজা রাখা মুস্তাহাব মর্মে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণিত আছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখ; এবং রোজা ভঙ্গও কর”[আবু দাউদ, হাদিস নং- ২৪২৮, আলবানী হাদিসটিকে যয়ীফ বা দুর্বল বলেছেন]
এ হাদিসটি যদি সাব্যস্ত হয় তাহলে হারাম মাসে রোজা রাখা মুস্তাহাব প্রমাণ হবে। অতএব, যে ব্যক্তি এ হাদিসের ভিত্তিতে রজব মাসে রোজা রাখে এবং অন্য হারাম মাসেও রোজা রাখে এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে রজব মাসকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে রোজা রাখা যাবে না।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) মাজমুউল ফাতাওয়া (২৫/২৯০) গ্রন্থে বলেন:
পক্ষান্তরে রজব মাসে রোজা রাখা সংক্রান্ত সবগুলো হাদিস দুর্বল; বরঞ্চ মাওযু (বানোয়াট)। আলেমগণ এর কোনটির উপর নির্ভর করেন না। ফজিলতের ক্ষেত্রে যে মানের দুর্বল হাদিস বর্ণনা করা যায় এটি সে মানের নয়। বরং এ সংক্রান্ত সবগুলো হাদিস মাওজু (বানোয়াট) ও মিথ্যা।
মুসনাদে আহমাদ ও অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি হারাম মাসসমূহে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হারাম মাসগুলো হচ্ছে- রজব, যুলক্বদ, যুলহজ্জ, মুহাররম। এটি চারটি মাসের ব্যাপারেই এসেছে। বিশেষভাবে রজব মাসের ব্যাপারে নয়। সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:
“রজব মাসে রোজা রাখা ও নফল নামায পড়ার ব্যাপারে যে কয়টি হাদিস বর্ণিত হয়েছে সব ক’টি মিথ্যা”[আল মানার আল-মুনিফ, পৃষ্ঠা- ৯৬]
ইবনে হাজার (রহঃ) ‘তাবয়িনুল আজাব’ (পৃষ্ঠা- ১১) বলেন:
রজব মাসের ফজিলত, এ মাসে রোজা রাখা বা এ মাসের বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা রাখার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন কিছু বর্ণিত হয়নি। অথবা এ মাসের বিশেষ কোন রাত্রিতে নামায পড়ার ব্যাপারে সহিহ কোন হাদিস নেই। সমাপ্ত
শাইখ সাইয়্যেদ সাবেক (রহঃ) “ফিকহুস সুন্নাহ’ গ্রন্থে (১/৩৮৩) বলেন:
অন্য মাসগুলোর উপর রজব মাসের বিশেষ কোন ফজিলত নেই। তবে এটি হারাম মাসসমূহের একটি। এ মাসে রোজা রাখার বিশেষ কোন ফজিলত কোন সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়নি। এ বিশেষ যে ক’টি বর্ণনা রয়েছে এর কোনটি দলিল হিসেবে গ্রহণ করার উপযুক্ত নয়। সমাপ্ত
শাইখ উছাইমীনকে ২৭ শে রজব সিয়াম ও কিয়াম পালনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন: “সবিশেষ মর্যাদা দিয়ে ২৭ শে রজব সিয়াম ও কিয়াম পালন- বিদআত। আর প্রত্যেকটি বিদআতই ভ্রান্তি।” সমাপ্ত [মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ উছাইমীন, (২০/৪৪০)]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসুল (সা.)-এর জন্য সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত্রি ছিল এই শবে মেরাজ। কিন্তু এ রাতে উম্মতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো আমল সাব্যস্ত হয়নি। যদি সুনির্দিষ্ট কোনো আমল সাব্যস্ত হতো, তাহলে অবশ্যই রাসুল (সা.)-এর সহিহ হাদিসের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হতো। কিন্তু আল্লাহর বান্দারা মনে করে থাকেন যে, রজব মাসের ২৭ তারিখ রাত্রিতে তারা ব্যক্তিগত ইবাদত করবেন, তাহলে এতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। যেহেতু আমরা ভালো কাজগুলো যেকোনো সময় করতে পারি।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি এভাবে বলতে পারবেন যে, "এটা উত্তত অনুত্তম বিষয়, যে পালন করতে চায় সে পালন করুক। যে না চায়, তার করার দরকার নেই। তবে এটা নিয়ে দ্বন্ধ না করাই উত্তম।" এই কথার মাধ্যেমে বিদায়াতকে সমর্থন হবে না। বরং মূলত এ কথার দ্বারা পালন না করার প্রতিই উৎসাহিতে করা হচ্ছে…...