আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আমি জেনারেল লাইনে পড়ুয়া ছাত্র।আমার দীনের ফরজ জ্ঞান সম্পর্কে তেমন কিছু জানিনা । আমি নিজের জীবনে কিভাবে  উন্নতি করতে পারি ( bishesh kore  )কর্মে+ দীনের জ্ঞান বিশুদ্ধভাবে শিখতে পারি এবং জীবনটাকে সুন্নাহ ভিত্তিক সাজাতে পারিer সম্পর্কে হুজুর আমাকে নসিহা করলে ভালো হয়? + হুজুর আমার নিয়ত কি হওয়া চাই?

1 Answer

0 votes
by (676,560 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে…

 طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ

ইলম অর্জনের চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ।… (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২২৪)

অপর এক হাদীস শরীফে এসেছে,

مَنْ جَاءَهُ الْمَوْتُ وَهُوَ يَطْلُبُ الْعِلْمَ لِيُحْيِيَ بِهِ الْإِسْلَامَ فَبَيْنَهُ وَبَيْنَ الْأَنْبِيَاءِ فِي الْجَنَّةِ دَرَجَةٌ وَاحِدَةٌ..

যে ব্যক্তি দ্বীন যিন্দা করার নিয়তে (অর্থাৎ অন্যের মাঝে দ্বীন ছড়ানো এবং অন্যকে আমল করানোর উদ্দেশ্যে) ইলম শিখবে, আর এ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে, জান্নাতে সে নবীগণের এত নিকটে থাকবে যে, তার ও নবীগণের মাঝে একটি মাত্র স্তরের পার্থক্য থাকবে।… (জামিউ বায়ানিল ইলম, ১/২০৭) 

https://www.ifatwa.info/3782 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ইবনে আবেদীন শামী রাহ,জ্ঞান শিক্ষা ফরয সম্পর্কিত একটি মূলনীতি তুলে ধরেন।যাকে আমাদের সামনে আসলে,ভবিষ্যৎ অনেক অস্পষ্টতা দূরিভূত হয়ে যাবে ইনশা'আল্লাহ।
তিনি বলেনঃ
وَكُلُّ مَنْ اشْتَغَلَ بِشَيْءٍ يُفْرَضُ عَلَيْهِ عِلْمُهُ وَحُكْمُهُ لِيَمْتَنِعَ عَنْ الْحَرَامِ فِيهِ اهـ
যে বক্তি কোনো জিনিষ বা কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করজে, তার উপর উক্ত বিষয় সম্পর্কে ইলম অর্জন করা ফরয।যাতে করে উক্ত বিষয় ও বিষয় সংশ্লিষ্ট সমস্ত হারাম থেকে সে অনায়াসে বেছে থাকতে পারে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪২)..................বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1893

কতোটুকু জ্ঞান অর্জন করাটা ফরয?কী কী জিনিষ এই ফরজ ইলমের অন্তর্ভুক্ত? এবং কোন কোন বিষয়?

এর উত্তর হচ্ছে,আল্লাহর ফরয হুকুমকে ঠিক ঠিক ভাবে অনুসরণ করতে এবং নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বাঁচতে যত বিষয় সম্পর্কে যতটুকু ইলমের প্রয়োজন ততটুকু ইলম শিক্ষা ফরয।যেমন,নামায আল্লাহর ফরয বিধান,নামায পড়ার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত।তাই পবিত্রতার ইলম অর্জন ফরয।ঠিকতেমনি কেরাত ফরয, তাই কেরাত শিক্ষা ফরয।ঈমান আনয়নের জন্য শিরক মুক্ত হয়ে মনেপ্রাণেএকমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করা ও তার বিধি-বিধান কে মান্য ফরয।তাই এ সম্পর্কীয় ইলম অর্জন ফরয।এবং রোযা আল্লাহর ফরয বিধান।রোযা রাখতে হলে তার করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।অর্থাৎ যতটুকু ইলম হলে রোযাকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়,ততটুকু পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।ইত্যাদি ইত্যাদি। 

ইলম অর্জনের সঠিক পদ্ধতি

দ্বীনী ইলম অর্জনের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে, আলিমগণের নিকট থেকে ইলম অর্জন করা।
হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন-
خُذُوا الْعِلْمَ قَبْلَ أَنْ يَذْهَبَ
‘ইলম অর্জন কর তা বিদায় নেওয়ার আগে’। সাহাবীগণ আরয করলেন-
وَكَيْفَ يَذْهَبُ الْعِلْمُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، وَفِينَا كِتَابُ اللَّهِ؟
আল্লাহর নবী! ইলম কীভাবে বিদায় নেবে, আমাদের মাঝে তো রয়েছে আল্লাহর কিতাব?
বর্ণনাকারী বলেন, এ কথায় তিনি রুষ্ট হলেন। এরপর বললেন-
ثَكِلَتْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ أَوَلَمْ تَكُنِ التَّوْرَاةُ وَالْإِنْجِيلُ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمْ شَيْئًا؟ إِنَّ ذَهَابَ الْعِلْمِ أَنْ يَذْهَبَ حَمَلَتُهُ، إِنَّ ذَهَابَ الْعِلْمِ أَنْ يَذْهَبَ حَمَلَتُهُ
তোমাদের  মরণ হোক! বনী ইসরাইলের মাঝে কি তাওরাত ও ইঞ্জীল ছিল না, কিন্তু এতে তো তাদের কোনোই উপকার হল না! ইলমের প্রস্থানের অর্থ তার বাহকগণের প্রস্থান। -মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৬; আদদারেমী ১/৮৬, হাদীস ২৪৫
হাদীসের শুরুতে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন ‘ইলম গ্রহণ কর তা বিদায় নেওয়ার আগে’। এরপর ‘ইলম বিদায় নেওয়ার’ অর্থ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ইলম বিদায় নেওয়ার অর্থ আলিমগণের বিদায় নেওয়া। তাহলে এ হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইলমের বাহক তথা আলিমগণের নিকট থেকে ইলম গ্রহণ করতে বলেছেন।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ শিক্ষার প্রতিধ্বনি আমরা শুনতে পাই তাঁর সাহাবীগণের কণ্ঠে।
হযরত আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
مَا لِي أَرَى عُلَمَاءَكُمْ يَذْهَبُونَ وَجُهَّالَكُمْ لَا يَتَعَلَّمُونَ؟ تعلَّموا قَبْلَ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ، فَإِنَّ رَفْعَ الْعِلْمِ ذَهَابُ الْعُلَمَاءِ
হায়! তোমাদের আলিমগণ বিদায় নিচ্ছেন কিন্তু তোমাদের বে-ইলম শ্রেণি ইলম অর্জন করছে না। ইলম উঠিয়ে নেওয়ার আগেই ইলম হাসিল কর। ইলম উঠিয়ে নেওয়ার অর্থ আলিমদের প্রস্থান। -আদ দারেমী ২৫১

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে আপনি আপনার এলাকার কোন মাদ্রাসায় গিয়ে প্রত্যহ দিনের কিছু অংশ সময় ব্যয় করে ইলম অর্জন করবেন।

অথবা আপনি আমাদের আইওএম এর ফরজে আইন কোর্সে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাস করবেন।

এগুলোর কোনোটিই করার মতো সময় সুযোগ যদি আপনার না থাকে,এক্ষেত্রে নিজে নিজে শিখতে চাইলে কিছু কিতাব পড়তে হবে। 

তবে নামাজে যেহেতু কুরআন  শরিফ শুদ্ধ পড়া ফরজ,তাই তা অবশ্যই কোনো শুদ্ধ পড়নে ওয়ালার কাছে গিয়ে পড়তে হবে।   

নিম্নে বাংলা কিছু কিতাবের নাম উল্লেখ করছিঃ 
★আহকামে জিন্দেগী
লেখকঃ মাওলানা  হেমায়েত  উদ্দিন  সাহেব  দাঃবাঃ । 

ঈমান-আকীদা থেকে শুরু করে ইবাদাত, মুআমালাত, মুআশারাত ও আখলাক-চরিত্র তথা ব্যক্তিগত , পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের যাবতীয় অত্যাবশ্যকীয় বিধি-বিধান, মাসলা-মাসায়েল ও দুআ দুরূদ সম্বলিত এক অনবদ্য গ্রন্থ। একজন মুসলমানের ইসলামী যিন্দেগী পরিচালনার জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন, সংক্ষিপ্তভাবে সে সবকিছু একটি গ্রন্থে সন্নিবেশীত করার প্রয়াস নেয়া হয়েছে আহকামে যিন্দেগীতে।
,
★আহকামুন নিসা
লেখক মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন সাহেব দাঃবাঃ 

★বেহেশতী যেওর
(লেখক হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহঃ)
,
★ইসলামী যিন্দেগী
(মুফতী মাওলানা মানসুরুল হক সাহেব দাঃবাঃ)

★ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ 
(লেখক মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন সাহেব দাঃবাঃ) 

★কিতাবুল ঈমান
(মুফতী মাওলানা মানসুরুল হক সাহেব দাঃবাঃ) 

শরয়ী সীমারেখার আওতায় থেকে যে কাহারো থেকে ইলম শিক্ষা অর্জন করা যাবে।
এক্ষেত্রে নামাজ পড়ার জন্য কমপক্ষে ফাতেহা সুরা 
সহ ৫ টি সুরা ছহীহ ভাবে  মুখস্থ করতে হবে।
এটা মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন বা যেকোনো শুদ্ধ ভাবে কুরআন পড়নে ওয়ালার কাছ থেকে শেখা যাবে।
নামাজের যাবতীয় মাসয়ালা মাদ্রাসায় গিয়েও শিখা যাবে।
মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছ থেকেও শেখা যাবে।
উলামায়ে কেরামদের কিতাবাদী পড়েও দ্বীনের ফরজ জ্ঞান অর্জন করা যাবে।
তবে কোনো একজন শিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করাই উচিত। 
এতে দিকভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা।
,
তাই কোনো একটি মাদ্রাসায় গিয়ে জ্ঞান অর্জন করাই উচিত।          


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...