আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
316 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১/ মাহরাম ছাড়া দূরে কোথাও যাওয়া যাবে কি?
খুবই অপারগ অবস্থায় যে, কোনভাবেই মাহরাম মেইনটেইন করা যাচ্ছে না,এমতাবস্থায় মাহরাম ছাড়া একাকী সফরের হুকুম কী?

২/ পরিবারের কেউ যদি কারো নামে অপর মানুষদের কাছে এমন কোন মানহানিকর বাজে কথা বলে যা পরিবারেরই অপর কেউ শুনেছে, এমতাবস্থায় শ্রোতা ব্যক্তি যদি এই কথা যার সম্পর্কে বলা হয়েছে তাকে বলে দেয় আর তাদের সাথে নিজের কথা শেয়ার করতে নিষেধ করে দেয় এবং দূরত্ব বজায় রাখতে বলে, এটা কি চোগলখুরি হবে?

৩/ নিজের নামে যদি কেউ মন্দ কথা বলে বা অন্যের নামে,  সে পরিবারের লোক হোক বা পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ হোক বা বাবা মা হোক, এটার প্রতিবাদ করে হক্ব কথা বলা কি জায়েজ আছে?

৪/ একজন শিশু প্রশ্ন করছে আল্লাহ্কে কেউ না বানালে আল্লাহ্ কি নিজে নিজে সৃষ্টি হয়েছেন? - এ প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দিয়ে বুঝানো যায় তাকে?

1 Answer

0 votes
by (709,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : " لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ ، وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ، فَقَامَ : رَجُلٌ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا ، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً ، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ " .الكتب » صحيح البخاري » كِتَاب الْجِهَادِ وَالسِّيَرِ » بَاب مَنِ اكْتُتِبَ فِي جَيْشٍ فَخَرَجَتِ امْرَأَتُهُ
তরজমাঃ-আজনবী পুরুষ-মহিলার মাহরাম ব্যতীত পরস্পর  খালওয়াত তথা নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না।এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলল।অমুক জিহাদে আমার আমার নাম লিখা হয়েছে,অন্যদিকে আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও।(বুখারী-২৮০০)

খালওয়াহ শব্দের ব্যখ্যা
 الْخَلْوَةُ فِي اللُّغَةِ: مِنْ خَلاَ الْمَكَانُ وَالشَّيْءُ يَخْلُو خُلُوًّا وَخَلاَءً، وَأَخْلَى الْمَكَانُ: إِذَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ أَحَدٌ وَلاَ شَيْءَ فِيهِ، وَخَلاَ الرَّجُل وَأَخْلَى وَقَعَ فِي مَكَان خَالٍ لاَ يُزَاحَمُ فِيهِ
ভাবার্থ-যখন কোনো স্থানে উক্ত আজনবী পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত অন্য কেউ থাকবে না বা অন্য কোনো এমন জিনিষ থাকবে না যা সহবাসকে বাধা দিতে পারে।তথা এমন খালি স্থান যেখানে লোকসমাগম বলতে নেই।(আল মাওসুআতুল ফেকহীয়্যায়;১৯/২৬৫)

ফিৎনার আশংকা না থাকলে সফরের দূরত্বের চেয়ে কম (অর্থাৎ তিনদিন তিনরাত দূরত্বের জায়গা অথবা ৭৭(এক বর্ণনায় ৮২.৫) কিলোমিটারের চেয়ে কম) দূরত্ব মহিলার জন্য মাহরাম ব্যতীত সফর করা বৈধ রয়েছে।শায়খাইন রাহ তথা ইমাম আবু হানিফা রাহ ও ইমাম আবু ইউসুফ রাহ থেকে বর্ণিত রয়েছে,একদিন একরাত দূরত্বের জায়গা থেকে কম হলে তথা (৭৭÷৩=২৫.৬)২৫.৬ কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম পরিমাণ জায়গা হলে মহিলা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে।অন্যথায় পারবে না। বর্তমান এই ফিতনার যুগে  নিম্নোক্ত মতামত-ই ফাতাওয়া তথা শরয়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্য।তবে এখানেও ফিতনার আশঙ্কা না থাকা চাই।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।(কিতাবুন-নাওয়াযিল;১৫/৪১৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক দিনের কম দূরত্ব  তথা ২৫.৬ কিলোমিটারের ভিতর মহিলা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে।তবে ফিতনার আশংকা থাকলে,এখানেও মহিলার জন্য অনুমোদন থাকবে না।

এমন সমস্যা বা অসুবিধে যখন মহিলার একাকি সফর ব্যতীত কোনো রাস্তাই নেই।তাহলে এমতাবস্থায় মহিলার জন্য একাকি সফর বৈধ হবে। যেমন কেউ কেউ অনুমতি দিয়ে থাকেন।
وَقَالَ حَمَّادٌ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - لَا بَأْسَ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تُسَافِرَ بِغَيْرِ مَحْرَمٍ مَعَ الصَّالِحِينَ،
মাহরাম ব্যতীত অন্যান্য নেককার লোকদের সাথে মহিলাদের সফর জায়েয হতে পারে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৬৬)

(২)জ্বী, এটাও চোগলখোরি হবে।

(৩)জ্বী,প্রতিবাদ করা যাবে, জায়েয হবে।

(৪)আল্লাহে কেউ-ই বানায়নি। আল্লাহ পূর্ব থেকেই আছেন এবং থাকবেন। দুনিয়ার নিয়ম হিসেবে আমরা বুযি যে, প্রত্যেক জিনিষের একজন নির্মাতা থাকা জরুরী।তবে আল্লাহ দুনিয়ার নিয়মের অনেক উর্ধে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...