আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (97 points)
১।একজন সুস্থ মানুষের পায়খানা হয় ১ দিনে ৩ বার তিন দিনে একবার আর আমার দিনে ৪ থেকে ৭ বার বেশির ভাগ সময় পেট খারাপ থাকে। পায়খানা করার পর মাঝে মধ্যে চাপ দেয়,আবার হালকা চাপ প্রায়ই অনুভব হয় আবার বায়ুর চাপ আশে মাঝে মধ্যে। মাঝে মধ্যে এরকম হয় যে প্রসাব পায়খানা সেরে নামাজে দাড়াইছি নামাজের মধ্যে চাপ আশে । আমার আবার প্রসাবের সমস্যা আছে করার পরে কোনো কোনো সময় ১ - ঘন্টার মধ্যে আবার ধরে  পরিস্কার হওয়ার পরেও ফোটা ফোটা বের হয় প্রসাব পায়খানা সারতে ১০ থেকে ২০ মিনিট লাগে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে অন্যজনের চাকরি করতে গেলে এত সুযোগ না ও  দিতে পারে আমি অসুস্থ  অনেক চিকিৎসা করাইছি কাজ হয়নি এই কারনে   যদি প্রসাব পায়খানার চাপ নিয়ে  নামাজ পড়ি তাহলে মাকরুহে তাহরিমি হবে কি?

২।হালকা চাপ নিয়ে নামাজ পড়াও কি মাকরুহে তাহরিমি
৩।সগিরা গোনাহের জন্য কি আখিরাতে শাস্তি হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (660,450 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/30506/ ফতোয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ  
প্রস্রাব পায়খানা চেপে রেখে নামাজ পড়া মাকরুহ।

এতে নামাজের খুশু-খুজু (একাগ্রতা) বিঘ্নিত হয় এবং হৃদয় মন নিবিষ্ট করে পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। তাই এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি ও স্থিরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা উচিত। 

হাদিস শরিফে  প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَرْقَمِ، قَالَ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأَخَذَ بِيَدِ رَجُلٍ فَقَدَّمَهُ وَكَانَ إِمَامَ قَوْمِهِ وَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَوَجَدَ أَحَدُكُمُ الْخَلاَءَ فَلْيَبْدَأْ بِالْخَلاَءِ "

وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَالاَ لاَ يَقُومُ إِلَى الصَّلاَةِ وَهُوَ يَجِدُ شَيْئًا مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ . وَقَالاَ إِنْ دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ فَوَجَدَ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَلاَ يَنْصَرِفْ مَا لَمْ يَشْغَلْهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ بَأْسَ أَنْ يُصَلِّيَ وَبِهِ غَائِطٌ أَوْ بَوْلٌ مَا لَمْ يَشْغَلْهُ ذَلِكَ عَنِ الصَّلاَةِ .

হান্নাদ ইাবনুস সারী (রহঃ) ..... উরওয়া থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবনুল আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন তাঁর কওমের ইমাম। একদিন ইকামত হওয়ার পর তিনি জনৈক মুসুল্লিকে হাত ধরে সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং বললেন রাসূলল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ইকামত হয়ে যাওয়ার পর যদি তোমাদের কেউ শৌচাগার গমনের তাকিদ অনুভব করে তবে তা আগে সেরে নিবে। - ইবনু মাজাহ ৬১৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪২ [আল মাদানী প্রকাশনী]

★ইমাম আহমদ ও ইসহাক ও এই ধরনের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেন সালাত শুরু করে দেওয়ার পর যদি কেউ পেশাব পায়খানার প্রয়োজন অনুভব করে তবে সালাত আদায়ে অমনোযোগীতা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সে সালাত ত্যাগ করবে না। কোন কোন আলিম বলেন সালাত আদায়ে অমনোযোগিতা সৃষ্টির আশংকা না হওয়া পর্যন্ত পেশাব পায়খানার তাকিদ সত্ত্বেও সালত আদায়ে কোন অসুবিধা নেই।

★প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ শুরু করা মাকরূহে তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের মাঝে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে প্রয়োজন শেষ করে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা উচিত। অবশ্য নামাজের ওয়াক্ত যদি এতটাই কম থাকে, যাতে প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যেতে পারে; সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে। তবে পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকী নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয় তবে এমনটি করা মাকরূহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। পুনরায় পড়া জরুরি নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে এরূপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। (রদ্দুল মুহতার/১; ৩৪১ ও ৬৪৪) 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার নামাজ মাকরুহ হবেনা।

তবে চেষ্টা করবেন,নামাজের আগে ইস্তেঞ্জা করে নেয়ার। এরপর নামাজের মধ্যে চাপ আসলেও সমস্যা হবেনা।

(০২)
না,কেননা এটি নামাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি করবেনা। 

(০৩)
কুরআন ও হাদীসে এসেছে যে আল্লাহ তাআলা সগিরা গুনাহ মাফ করে দেন যদি বান্দা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।

সুতরাং যে ব্যক্তির কবিরা গুনাহ মাফ হবে, তার তো সগিরা গুনাহও থাকবেনা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

﴿ إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ ﴾
(সূরা নিসা: ৩১)
অর্থ: “তোমরা যদি বড় বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো, আমি তোমাদের ছোটখাটো গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেব।”

এছাড়া, নামাজ, রোজা, হজ, জুমার নামাজ, রমজান—এগুলো সগিরা গুনাহ মুছে দেয় (সাহিহ মুসলিম, হাদিস ২৩৩)।

★আখিরাতে সগিরা গুনাহের শাস্তি হবে কি না?

যদি আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেন (তাওবা বা নেক আমলের মাধ্যমে), তবে কোনো শাস্তি হবে না।

যদি সগিরা গুনাহগুলো অনেক বেশি হয় এবং ক্ষমা না হয়, তবে সেগুলোর জন্য শাস্তি হতে পারে, তবে তা জাহান্নামে চিরস্থায়ী নয়।

হাদিসে এসেছে: সগিরা গুনাহ অবহেলা করলে তা বড় গুনাহে রূপ নেয়। (মুসনাদ আহমদ)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 124 views
...